ঢাকা, রবিবার, ১৪ পৌষ ১৪৩১, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

‘আমার মনোনয়ন বৈধ ছিল’ দাবি মুহিবুর রহমানের 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৩
‘আমার মনোনয়ন বৈধ ছিল’ দাবি মুহিবুর রহমানের  সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন মুহিবুর রহমান।

সিলেট: সিলেটের বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা মুহিবুর রহমান। স্বীয় পদ থেকে পদত্যাগ না করে সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দেন সিলেট-২ আসনে।

এ কারণে ৩ ডিসেম্বর বাছাইয়ে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান।

পরবর্তীতে প্রার্থিতা ফিরে পেতে নির্বাচন কমিশনে আপিল করলেও একই কারণে প্রার্থিতা ফিরে পাননি। ফলে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন মুহিবুর রহমান। প্রার্থিতা ফিরে পেতে  ১৭ ডিসেম্বর হাইকোর্টে আপিল করেন। আগামী ২৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট আপিলের শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।  

এ অবস্থায় শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে নগরের একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে মুহিবুর রহমান বলেন, আমার মনোনয়ন বৈধ ছিল। কিন্তু রিটানিং কর্মকর্তা বাছাইকালে মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করেছেন। দেশের প্রচলিত আইন আনুযায়ী আমার মনোনয়ন বৈধ্য হওয়ার কথা থাকলেও নির্বাচন কমিশন এক সপ্তাহ ঝুলিয়ে রাখে এরপর বাতিল করে। এটা একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর সঙ্গে ইসির অন্যায়মূলক আচরণ। ’ 

লিখিত বক্তব্যে মুহিবুর রহমান বলেন, ‘মহামান্য হাইকোর্ট আগামী ২৭ ডিসেম্বর রায় ঘোষণা দেবেন। আমি আশাবাদী হাইকোর্টে ন্যায়বিচার পাবো এবং আমার প্রার্থিতা ফিরিয়ে দেবেন। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপও কামনা করেন। ’ 

১৯৮৫ সাল থেকে সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আসছেন মুহিবুর রহমান। কিন্তু একবারও সংসদে যেতে পারেননি। তার দাবি প্রার্থিতা ফিরে পেলে এবার ৭৫ ভাগ ভোট পেয়ে বিজয়ী হবেন। বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর আসনের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন। যদি ভোটে কোনো ষড়যন্ত্র করা হয়, তাহলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবেন।  

আসন্ন ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রাণবন্ত, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং অবাদ, সুষ্ঠু করতে সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের আশ্বাসে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সিলেট-২ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তিনি।  

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মনোনয়ন অবৈধ ঘোষণা করেন। এখানেও ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন তিনি। পরে প্রধান নির্বাচন কমিশনে আপিল করলে ইসি বিলম্বে রায় দিয়ে নামঞ্জুর করেন। যে কারণ ১৭ ডিসেম্বর তিনি হাইকোর্টে রিট দায়ের করেছেন।  

১৮ ডিসেম্বর রিটের আংশিক শুনানি করে ২ দিন পর পরবর্তী শুনানির জন্য ২০ ডিসেম্বর তারিখ ধার্য করা হয়। দীর্ঘ শুনানির পর আবারও হাইকোর্ট আগামী ২৭ ডিসেম্বর রায় ঘোষণা করবেন বলে সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। ফলে তার অবস্থান এখন ঝুলন্ত রলে জানান।
 
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বীরা সবাই যখন মাঠে ভোটের প্রচার অভিযান চালাচ্ছেন, তখন তিনি প্রার্থিতা ফিরে পেতে আইনি লড়াইয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। এখন প্রতীক ছাড়াই নির্বাচনী প্রচার অব্যাহত রেখেছেন বলে জানান।  

হাইকোর্ট আমার মনোনয়ন বৈধ ঘোষিত করবেন আশাবাদ ব্যক্ত করে পৌর মেয়র মুহিবুর রহমান বলেন, ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে বেশ কয়েকজন পৌর মেয়র পদে থেকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। একইভাবে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনেও চারজন পৌর মেয়র পদে থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯ এর ৩৩ (১) ধারায় স্পষ্ট বলা আছে, পৌরসভার মেয়র পদে থেকে সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করতে পারবেন এবং নির্বাচিত হলে তার পদ শূন্য হবে।

হাইকোর্ট ২৭ ডিসেম্বর তার পক্ষে রায় দেবেন দৃঢ় বিশ্বাস মুহিবুর রহমানের। তাই বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগরের কর্মী সমর্থক এবং সাধারণ মানুষকে প্রচার অভিযান চালিয়ে যাওয়া ছাড়াও কেন্দ্র ভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করার আহবান জানান তিনি।  

তার বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র হচ্ছে দাবি করে মুহিবুর রহমান বলেন, আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বিরা ভালোভাবে জানেন, নির্বাচনে তার সাথে জয়ী হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাই তারা এমনটি করেছেন।  

তিনি প্রার্থী হলে, সব বাধা অতিক্রম করে নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়যুক্ত হবেন দাবি করে বলেন, নির্বাচনী এলাকার মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে সুযোগ পাবেন।

এসময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন, প্রবাসী কমিউনিটি নেতা খলিলুর রহমান, ওসমানীনগর আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট জাহেদ সুমন, বিশ্বনাথ উপজেলা যুবলীগ নেতা কাউন্সিলর জহুর আলী, যুবলীগ নেতা আক্তার হোসেন, সমাজসেবক সেলিম মিয়া, মেয়র মুহিবের ছেলে প্রবাসী আদনান মুহিব প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৩
এনইউ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।