ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

সিলেটে পাঁচটিতে নৌকা, একটিতে স্বতন্ত্রের জয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০২৪
সিলেটে পাঁচটিতে নৌকা, একটিতে স্বতন্ত্রের জয়

সিলেট: সিলেটে ৬টি আসনে শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ সম্পন্নের পর গণনা শেষে ফলাফলে পাঁচটিতে নৌকা ও একটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন।

আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের বিজয়ী প্রার্থীরা হলেন- সিলেট-১ আসনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, সিলেট-২ আসনে শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেট-৩ আসনে হাবিবুর রহমান হাবিব, সিলেট-৪ আসনে ইমরান আহমদ, সিলেট-৬ আসনে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ও সিলেট-৫ আসনে নৌকার প্রার্থী মাসুক উদ্দিনকে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আঞ্জুমানে আল ইসলাহ’র সভাপতি মাওলানা হুছাম উদ্দিন চৌধুরী।

রোববার (৭ জানুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর গণনা শেষে রাতে সিলেট জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বেসরকারি ফলাফলে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেন।

ভোটের চূড়ান্ত ফলাফলে সিলেট-১ আসনে ২১৫টি ভোটকেন্দ্রে ৬ লাখ ৩৪ হাজার ২১ ভোটের মধ্যে ড. এ কে আব্দুল মোমেন ১ লাখ ১৫ হাজার ৫৪৬ ভোট পেয়েছেন। তার সঙ্গে ভোটের লড়াইয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীরা নাম সর্বস্ব ভোট পেয়েছেন।

ইসলামী ঐক্যজোট (আইওজে) মনোনীত মিনার প্রতীকে মাওলানা ফয়জুল হক ২ হাজার ১৯৩ ভোট, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) প্রার্থী ইউসুফ আহমদ (আম) ৯৬৩ ভোট, বাংলাদেশ কংগ্রেস’র প্রার্থী মোহাম্মদ সোহেল আহমদ চৌধুরী (ডাব) ৪৫০ ভোট, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের প্রার্থী আব্দুল বাছিত (ছড়ি) ৯০৭ ভোট পেয়েছেন। এ আসনে কাস্টিং ভোট এক লাখ ২২ হাজার ৩৬৩। এর মধ্যে বাতিল ভোট ২ হাজার ৩০৪। বৈধ ভোট ১ লাখ ২০ হাজার ৫৯। আসনটিতে শতকরা ভোটের হার ১৯ দশমিক ৩০ শতাংশ।

সিলেট-২ আসনে ১০ বছর পর আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নৌকা প্রতীকে আবারও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন দলটির জেলা সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী। তিনি নৌকা প্রতীকে ৭৮ হাজার ৩৮৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিন্দ্বন্দ্বী ট্রাক প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিশ্বনাথ পৌর মেয়র মুহিবুর রহমান মুহিব পেয়েছেন ১৬ হাজার ৬৬১ ভোট।

এ ছাড়া অন্য প্রার্থীদের মধ্যে গণফোরামের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান (উদীয়মান সূর্য) পেয়েছেন ১ হাজার ৯২২ ভোট, জাতীয় পার্টির মো. ইয়াহইয়া চৌধুরী (লাঙ্গল) ৬ হাজার ৮৭৪ ভোট, তৃণমূল বিএনপির আব্দুর রব মল্লিক (সোনালী আঁশ) ৯৪৪ ভোট, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. জহির ২৫৩ ভোট, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) ডাব প্রতীকে ১৮৫ ভোট পেয়েছেন।  

এ আসনে ১২৮টি কেন্দ্রে ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৭২৯ ভোটের মধ্যে কাস্ট হয়েছে এক লাখ ৬ হাজার ৮৪৭ ভোট। এর মধ্যে বাতিল ১ হাজার ৬২০। বৈধ ভোট ১ লাখ ৫ হাজার ২২৭। ভোটের শতকরা হার ৩০ দশমিক ১৯ শতাংশ।

সিলেট-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব নৌকা প্রতীকে ৭৯ হাজার ৬৭১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাক প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী ৩৫ হাজার ৮৩৬ ভোট পেয়েছেন।

এ ছাড়া জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোহাম্মদ আতিকুর রহমান আতিক (লাঙ্গল) ৪ হাজার ২৬৯ ভোট, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) আনোয়ার হোসেন আফরোজ (আম) ২২০ ভোট, বাংলাদেশ ইসলামি ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী শেখ জাহেদুর রহমান (মাসুম) মোমবাতি প্রতীকে ৫৬০ ভোট, ইসলামি ঐক্যজোট (আইওজে) প্রার্থী মো. মইনুল ইসলাম (মিনার) প্রতীকে ২০৩ ভোট, ঈগল প্রতীকে আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ফখরুল ইসলাম ১৩৩ ভোট পেয়েছেন।

আসনটিতে মোট ১৫১ কেন্দ্রে ৩ লাখ ৮৩ হাজার ৪১২ ভোটের মধ্যে কাস্ট হয়েছে ১ লাখ ২২ হাজার ২৯২ ভোট। এরমধ্যে এক হাজার ৪শ’ ভোট বাতিল এবং বৈধ ভোটের সংখ্যা এক লাখ ২০ হাজার ৮৯২টি।

সিলেট-৪ আসনে সর্বাধিক ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। এ আসনে ১৬৯টি কেন্দ্রে মোট ৪ লাখ ৭৫ হাজার ১২১ ভোটের মধ্যে তিনি একাই ২ লাখ ৭ হাজার ৯৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী মো. আবুল হোসেন পেয়েছেন ৪ হাজার ১১ ভোট এবং ইসলামী ঐক্যজোটের (আইওজে) মো. নাজিম উদ্দিন (কামরান) মিনার প্রতীকে ৩ হাজার ৫২ ভোট পেয়েছেন। এ আসনে ভোট কাস্টের শতকরা হার ৪৫ দশমিক ৭০ শতাংশ।

সিলেট-৫ আসনে নৌকার প্রার্থীকে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছেন কেটলি প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী আঞ্জুমানে আল ইসলাহর সভাপতি মাওলানা হুছাম উদ্দিন চৌধুরী। তার প্রাপ্ত ভোট ৪৭ হাজার ১৫৩টি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাসুক উদ্দিন আহমদ ৩২ হাজার ৯৭৩ ভোট পেয়েছেন।

এ আসনে তৃণমূল বিএনপির কুতুবউদ্দিন আহমদ শিকদার (সোনালী আশ) প্রতীকে ২ হাজার ২০৭ ভোট, (বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল) এর প্রার্থী মো. খায়রুল ইসলাম (হাত-পাঞ্জা) প্রতীকে ২১৪, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. বদরুল আলম (ডাব) ১৫৯ ও লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টি শাব্বীর আহমদ ১২৪ ভোট পেয়েছেন।

এ আসনে ১৫৮টি কেন্দ্রে মোট ৪ লাখ ২ হাজার ২৯৯ ভোটের মধ্যে কাস্ট হয়েছে এক লাখ ৪ হাজার ৪৪১ ভোট। তন্মধ্যে ১ হাজার ৩৮১ ভোট বাতিল ও এক লাখ ৩ হাজার ৬০ ভোট বৈধ হয়। এ আসনে ভোটের শতকরা হার ২৫ দশমিক ৯৬ শতাংশ।

সিলেট-৬ আসনে হেভিওয়েট প্রার্থীদের সঙ্গে লড়ে আবারও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি ৫৭ হাজার ৭৭৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঈগল প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা সরওয়ার হোসেন পেয়েছেন ৩৮ হাজার ৪৮৮ ভোট এবং সোনালী আঁশ প্রতীকে তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপারসন শমসের মুবিন চৌধুরী ১০ হাজার ৯৩৬ ভোট পেয়ে পরাজিত হন।

এ ছাড়া জাতীয় পার্টির প্রার্থী সেলিম উদ্দিন (লাঙ্গল) ৫ হাজার ৫৭৯ ভোট, ইসলামি ঐক্যজোটের আইওজে) সাদিকুর রহমান মিনার প্রতীকে ৬২২ ভোট, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের প্রার্থী আতাউর রহমান (ছড়ি) ১৬৯ ভোট পেয়েছেন। এ আসনে ১৯২টি কেন্দ্রে ৪ লাখ ৭২ হাজার ৭৪৯ ভোটের মধ্যে কাস্ট হয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার ৭০২ ভোট। এর মধ্যে বাতিল হয় ২ হাজার ১৩০ ভোট। বৈধ ভোট ১ লাখ ১৪ হাজার ৫৭২।

ফলাফল ঘোষণাকালে রিটানিং কর্মকর্তা বলেন, সিলেটের ৬টি আসনে শতকরা ভোটের হার ২৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ। সিলেটে শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ০১০১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০২৪
এনইউ/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।