কক্সবাজার: কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে পেটে ৯০টি ডিম নিয়ে আরও একটি মৃত মা কচ্ছপ ভেসে এসেছে। অলিভ রিডলি বা জলপাই রঙের এই সামুদ্রিক কচ্ছপটি সৈকতের বালিয়াড়িতে ডিম পাড়তে এসে মারা পড়েছে।
শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের হিমছড়ি সৈকতে জোয়ারের পানির সঙ্গে ক্ষতবিক্ষত মা কচ্ছপটি ভেসে আসে।
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বোরি) জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে শুক্রবার বিকেলে পাশের রেজুখাল ও ইনানী সৈকতে আরও তিনটি একই প্রজাতির মৃত মা কচ্ছপ ভেসে এসেছে। এর আগের দিন সোনারপাড়া ও পেঁচারদ্বীপ সৈকতে দুটি মা কচ্ছপ ভেসে আসে। এ দুটির পেটেও ডিম ছিল বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে শনিবার দুপুরে হিমছড়ি সৈকতে ভেসে আসা একটি মা কচ্ছপ উদ্ধার করা হয়েছে। অলিভ রিডলি প্রজাতির এই কচ্ছপটির পেটে ৯০টি ডিম রয়েছে। কয়েকদিন আগে কচ্ছপটি মারা পড়েছে। শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
তিনি বলেন, গতকাল বিকেলে পাশের রেজুখাল ও ইনানী সৈকতে একই প্রজাতির তিনটি কচ্ছপ ভেসে আসে। এদের পেটেও ডিম ছিল। এ নিয়ে সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের কাছাকাছি সৈকতে তিনদিনে ডিম পাড়তে আসা ছয়টি মৃত কচ্ছপ উদ্ধার করা হয়েছে।
তরিকুল ইসলাম বলেন, নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত সামুদ্রিক কচ্ছপের প্রজনন মৌসুম। এ সময়ে সৈকতের বালিয়াড়িতে ডিম পাড়তে এসে জেলেদের জালে আটকা পড়ে বা অন্য কোনোভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মা কচ্ছপ মারা পড়ছে।
কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলের প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করছেন সাংবাদিক আহমদ গিয়াস। তিনি বলেন, হঠাৎ করে সাগর একে একে সামুদ্রিক প্রাণীর মৃতদেহ ভেসে আসার বিষয়টি অস্বাভাবিক। এ বিষয়ে ভেসে আসা প্রাণীর নমুনা সংগ্রহ করে ফরেনসিক টেস্ট করে কারণ অনুসন্ধান জরুরি।
মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে সমুদ্রবিজ্ঞানী ও সংশ্লিষ্টরা কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. তৌহিদা রশীদ। তিনি জানান, সাগরে সামুদ্রিক প্রাণীর আবাসস্থলের কোথাও কোনো সমস্যা তৈরি বা বাধাগ্রস্ত হয়ে প্রাণী মারা পড়ছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিষয়টি খুব গুরুত্ব দিয়ে সংশ্লিষ্টরা দেখছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৪
এসবি/এমজেএফ