ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

দেয়ার ইজ নো ফাইনাল ভিক্টরি ইন কনজারভেশন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১৬
দেয়ার ইজ নো ফাইনাল ভিক্টরি ইন কনজারভেশন ছবি: বাংলানিউজ

সাক্ষাৎকারের প্রথম অংশ পড়ুন-
* মানুষ বাঁচাতে হলে বন-নদী বাঁচাতেই হবে

বাংলানিউজ: বর্তমানে কোন কোন প্রজেক্ট নিয়ে সিসিএ কাজ করছে?
শাহরিয়ার সিজার রহমান:
এখন পার্বত্য চট্টগ্রাম ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বিশেষ করে লাউয়াছড়াতেই কাজ চলছে। এছাড়া পাহাড়ি জনগোষ্ঠীদের বনের উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে অন্য পেশায় নিয়ে আসতে কাজ করছি।

এক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতা করছে বি ক্র্যাফট। বন সংরক্ষণে স্থানীয়দের যেমন অংশ নেওয়া দরকার, সেইসঙ্গে রাজনৈতিক অঙ্গীকারও জরুরি। সরকারের উচ্চ পর্যায়েও আমরা আমাদের বক্তব্য ও কাজ নিয়ে যাচ্ছি। দু’টোরই সমানভাবে সমন্বয় প্রয়োজন।
 
বাংলানিউজ: এই রাজনৈতিক অঙ্গীকার ও স্থানীয়দের অংশ নেওয়া- দু’টোর সমন্বয়ের ক্ষেত্রে সিসিএ কতোটুকু এগিয়েছে?
শাহরিয়ার সিজার রহমান:
জর্জ শ্যালার নামে একজন প্রাণিবিজ্ঞানী আছেন। তিনি একটি কথা বলেন, দেয়ার ইজ নো ফাইনাল ভিক্টরি ইন কনজারভেশন। আমরা এটা মাথায় রেখে চলি। আর সিসিএ এখনও শিশু। আমরা আমাদের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। গত জুন মাসে বান্দরবানে আমরা স্টেক হোল্ডারদের নিয়ে একটি সম্মেলন করেছি, সাঙ্গু ও মাতামুহুরি নদী সংরক্ষণে। সেখানে সব শ্রেণী-পেশার মানুষ অংশ নেয়।  
 
বাংলানিউজ: কী অবস্থা এখন সাঙ্গু ও মাতামুহুরীর?
শাহরিয়ার সিজার রহমান:
আমাদের দেশের অধিকাংশ নদী হিমালয় বা বিভিন্ন পর্বতের বরফগলা পানি থেকে উৎপন্ন। সেখানে সাঙ্গু ও মাতামুহুরী বনের ছোট ছোট ছড়ার সংমিশ্রণে সৃষ্টি। আর ওই পানিটা ধরে রাখে বনের বড় গাছ। গাছ কাটার ফলে পানির প্রচণ্ড সঙ্কট দেখা দিচ্ছে। অনেকে বলেন, বন ও বন্যপ্রাণি বাঁচিয়ে আমাদের কী লাভ, মানুষই তো খেতে পায় না! কিন্তু বিষয়টি এরকম নয়। বন, নদী ধ্বংস হলে তার ক্ষতিকর প্রভাব মানুষের উপর এসে পড়বেই। কারণ, সব মিলেই ইকোসিস্টেম। মানুষ বাঁচাতে হলে বন-নদী বাঁচাতেই হবে! আর আপনি যতোই লাগান, প্রাকৃতিক বন একবার শেষ হয়ে গেলে আর ফিরে পাবেন না। এটা সরকারেরও ভাবা দরকার। আমাদের উন্নয়নের দরকার আছে কিন্তু প্রকৃতিকে ধ্বংস করে উন্নয়ন করে আমরা উল্টো নানাভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হবো।
 
বাংলানিউজ: সিসিএ প্রতিষ্ঠার আগেও আপনি ব্যক্তিগতভাবে গবেষণার কাজে যুক্ত ছিলেন। এখন সিইও হিসেবে একই সঙ্গে আপনাকে সাংগঠনিক নানা দিক সামলাতে হয়। এগুলো কী আপনার নিবিড় গবেষণার জায়গাটা ক্ষতিগ্রস্ত করছে?
শাহরিয়ার সিজার রহমান:
সিসিএ’র কাজও গবেষণা করাই। এখন হয়তো ব্যবস্থাপনার কাজ বেশি করতে হচ্ছে। কিন্তু আমি যদি অনেক দূরে যেতে চাই তাহলে আমাকে একা গেলে হবে না- আমার পাশে লোকজন লাগবে, দলবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এখানে সিনিয়র-জুনিয়রসহ স্বেচ্ছাসেবী অনেকে কাজ করছেন। এগুলোরও অনেক ইতিবাচক দিক রয়েছে। হ্যাঁ, পাঁচ বছর আগে আমি একা গবেষণা করতাম। হয়তো কোনো বিরল প্রজাতির প্রাণী আবিষ্কার করলাম। পেপারে আমার নাম-ছবি এলো বা কোনো বিদেশি জার্নালে লেখা ছাপা হলো। কিন্তু তাতে কী হবে যদি ওই বিলুপ্তপ্রায় বিরল প্রাণীকে সংরক্ষণই করতে না পারি, এর কোনো মূল্যই থাকলো না! এজন্য দলগত কাজের প্রয়োজন রয়েছে।
 
বাংলানিউজ: বন ও বন্যপ্রাণি বাঁচাতে সচেতনতা সৃষ্টিতে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে? আপনার পরামর্শ কী?
শাহরিয়ার সিজার রহমান:
এক্ষেত্রে আমার একটি বক্তব্য রয়েছে, অ্যাওয়ারনেস উইদাউট অ্যাকশন- আসলে কোনো কাজে আসে না। যেমন আমরা স্কুলে স্কুলে গিয়ে বলেছি, সাপ মারবেন না। তারপরও দেখা যাচ্ছে, ঠিকই সাপ মারা হচ্ছে। আমরা যদি সচেতনতা সৃষ্টিতে বলি, গাছ কাটা খারাপ। গাছ কাটা যে খারাপ এতে দেশের একজনও দ্বিমত করবে না, কিন্তু কাটার সময় গাছ ঠিকই কাটবে। সেক্ষেত্রে মানুষের যে চাহিদাগুলো রয়েছে সেটা টার্গেট করতে হবে। আবার সবার সব চাহিদাও আপনি মেটাতে পারবেন না। কারও খাবার দরকার, সেটা আপনি মেটাতে পারবেন কিন্তু মানুষের লোভ নয়। সেক্ষেত্রে সরকারের যে ক্ষমতা সেটি প্রয়োগ করা ছাড়া উপায় নেই। ব্যাপারগুলো খুব সোজা নয় আবার সমাধানও যে নেই তা নয়।

ইন্টারভিউয়ের শেষপর্ব পড়তে ক্লিক করুন-
 * প্রত্যেকে বন ও বন্যপ্রাণি সংরক্ষণে এগিয়ে আসতে পারেন


বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১৬
এসএনএস/আরআই

** সবে শুরু, লক্ষ্য বহুদূর​
** হস্তশিল্পে ভবিষ্যৎ দেখছে ম্রো জনগোষ্ঠী
** প্রজন্মের মধ্যে হস্তশিল্পকে টিকিয়ে রাখা জরুরি
** ঐতিহ্য ও আধুনিকতা বিনিময়ের কর্মশালা

** কক্সবাজারে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীদের নিয়ে কর্মশালা 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।