শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) : চার পায়ের হরিণের কথা আমরা শুনেছি। কিন্তু তিন পায়ের হরিণের কথা! এ বিষয়টি একেবারেই অজানা।
তিন পা নিয়ে সে দিব্বি বেঁচে রয়েছে। খাচ্ছে-দাচ্ছে। কষ্ট করে হাঁটার চেষ্টাটিও অব্যাহত রয়েছে। তবে জন্মগতভাবে সে কিন্তু তিন পা নিয়ে জন্মায়নি। চার পা’ই ছিল। মারাত্মক এক দুর্ঘটনায় প্রাণে বাঁচতে তার একটি পা-কে জলাঞ্জলি দিতেই হলো।
পাহাড়ের কতিপয় দুস্কৃতিকারীরা হরিণটিকে হত্যা করার জন্য হামলা চালায় তার ওপর। তাতে করে হরিণটির শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত লাগে। সে আঘাত গভীর ক্ষততে পরিণত হলে চিকিৎসকের সিদ্ধান্ত অনুসারের পেছনের ডান পা কেটে ফেলা হয়।
সেই তিন পায়ের হরিণটিকে নিজের সন্তানের মতোই অতি যত্নে লালন-পালন করে চলেছেন শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক সজল দেব। খাঁচা খুলে ভেতরে প্রবেশ করে তিনি আহত হরিণের গায়ে আলতো পরশ বুলাতেই হরিণটি ঠাঁয় দাঁড়িয়ে রইল। যেন মমতারই এক নিবিড় ছোঁয়া।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, চলতি বছরের ২০ সেপ্টেম্বর কমলগঞ্জ উপজেলার কুরমা বিট থেকে আহত এ হরিণটিকে উদ্ধার করে বন কর্মকর্তা শেখর রায় আমাদের কাছে চিকিৎসার জন্য দেন। হরিণটি এতোই আহত ছিল যে আমরা ভেবেছিলাম হয়তো আর বাঁচবে না।
তিনি আরো বলেন, হরিণটির পেছনের ডানপা’টি মারাত্মক ক্ষত হয়ে পড়ায় উপজেলার ভেটেরিনারি সার্জেটের পরামর্শক্রমে সেটি কেটে ফেলা হয়েছে। ইতোমধ্যে ষোলটি এন্টিবায়োটিক ধরণের ইঞ্জেকশন পুশ করা হয়েছে। একেকটির দাম চারশত আট টাকা করে। এখন সে প্রায় সত্তর ভাগ সুস্থ। আরো চার/পাঁচ দিনে পুরোপুরি সেরে উঠতে।
হরিণটির খাদ্য প্রসঙ্গে সজল বলেন, সে এখন ডুমুর, আমলকি, হরিতকি ইত্যাদি বুনো ফল খাচ্ছে।
শ্রীমঙ্গল প্রাণিসম্পদ দপ্তরের ভেটেরিনারি সার্জেন ডা. মো. আরিফুল ইসলাম বাংলানিউজে বলেন, ধীরে ধীরে হরিণটি সেরে উঠছে। যেহেতু একটি পা ওর কাটা গেছে তাই পুরোপুরি সুস্থ হয়ে সে স্বাভাবিক জীবনে হয়তো সেরকমভাবে আর ফিরতে পারবে না। তারপরও আমরা ওকে বাঁচিয়ে রাখার নিরন্তর চেষ্টা করে চলেছি।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৬
বিবিবি/বিএস