ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

অবশেষে সঙ্গী পেলো নারী ঘড়িয়াল

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৭
অবশেষে সঙ্গী পেলো নারী ঘড়িয়াল রাজশাহী চিড়িয়াখানায় অবমুক্ত করা হচ্ছে পুরুষ ঘড়িয়াল। ছবি: শরীফ সুমন

রাজশাহী: অবশেষে সঙ্গী পেয়েছে রাজশাহী কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানার নারী ঘড়িয়াল। এর ফলে অনেক দিন পর তার একাকিত্ব কাটলো।

বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী ঘড়িয়ালের জোড়া তৈরি করে বংশবৃদ্ধির উদ্যোগের অংশ হিসেবে রোববার (১৩ আগস্ট) দুপুরে রাজশাহী চিড়িয়াখানায় একটি পুরুষ ঘড়িয়াল অবমুক্ত করা হয়।

শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানায় আগে থেকেই ছিল একটি নারী ঘড়িয়াল।

এর সঙ্গী হিসেবে পুরুষটিকে ছাড়া হলো।

ফলে আগামী বছর নাগাদ বিপন্ন এই প্রাণীটি বংশ বিস্তার করতে পারবে বলে আশাবাদী চিড়িয়াখানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. ফরহাদ উদ্দিন।

এছাড়াও রোববার চিড়িয়াখানায় আনা হয়েছে চারটি রঙিন ময়ূর। সেগুলো নির্ধারিত খাঁচায় দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।

ডা. ফরহাদ উদ্দিন জানান, শনিবার ঢাকা চিড়িয়াখানা থেকে একটি পুরুষ ঘড়িয়াল রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ট্রাকে করে বিশেষ ব্যবস্থায় রাজশাহী চিড়িয়াখানায় আনা হয়। এরপর রোববার দুপুরে নারী ঘড়িয়ালটির কাছে তাকে অবমুক্ত করা হয়।

তিনি জানান, ঘড়িয়াল বাংলাদেশে একটি বিপন্ন প্রাণী। দিনে দিনে এদের সংখ্যা মারাত্মকভাবে কমে গেছে। বর্তমানে দেশের জলাশয়ে ঘড়িয়ালের দেখা মেলা ভার।

রাজশাহী চিড়িয়াখানায় অবমুক্ত করা হচ্ছে পুরুষ ঘড়িয়াল।  ছবি: শরীফ সুমন রাজশাহী চিড়িয়াখানায় দুটি স্ত্রী ঘড়িয়াল ছিল। যাদের বয়স ৩০ থেকে ৩৫ বছর হবে। সেই সময় পদ্মা নদীতে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেদের জালে আটকা পড়েছিলো ঘড়িয়ালগুলো। জেলেরা সেগুলো ধরে চিড়িয়াখানায় দিয়েছিলো।

অপরদিকে ঢাকা চিড়িয়াখানায় যে কয়টি ঘড়িয়াল আছে সবগুলোই পুরুষ। সে কারণে প্রজনন করানো সম্ভব হচ্ছিলো না।

তাই দুই চিড়িয়াখানার কর্তৃপক্ষ অতি সম্প্রতি বিপন্ন প্রাণীটির প্রজনন বৃদ্ধি করতে এমন উদ্যোগ নিয়েছে। এতে বংশ বিস্তার করতে পারবে প্রাণীটি। এজন্যই ঢাকা থেকে রাজশাহীতে একটি পুরুষ ও রাজশাহী থেকে ঢাকায় একটি নারি ঘড়িয়াল স্থানান্তর করা হয়েছে। রাজশাহীর নারী ঘড়িয়ালটি ঢাকা চিড়িয়াখানায় দেওয়া হয় ১১ আগস্ট।

ডা. ফারহাদ বলেন, সাধারণত ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত ঘড়িয়ালদের প্রজনন মৌসুম। একবারে প্রজননে ৩৫ থেকে ৪০টি পর্যন্ত ডিম পাড়ে তারা। সাধারণত মার্চ থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে তারা ডিম পাড়ে। ডিম পড়ার পরে তারা গর্ত খুঁড়ে ডিম ঢেকে রাখে।

রাজশাহী চিড়িয়াখানায় অবমুক্ত করা হচ্ছে পুরুষ ঘড়িয়াল।  ছবি: শরীফ সুমন সেই ডিম থেকে বাচ্চা ফুটে বের হতে সময় নেয় ৭০ থেকে ৯০ দিন। রাজশাহী চিড়িয়াখানার যে পুকুরে ঘড়িয়াল থাকে সেখানে ডিম পাড়ার পরে গর্ত করে রাখার মতো তেমন কোন ব্যবস্থা নেই। আপাতত পুকুরে কিছুটা বালি ফেলা হয়েছে। তবে বর্ষা শেষ হয়ে গেলে পদ্মা নদী থেকে মোটা বালি পুকুরটির একাংশে ফেলা হবে। যেখানে ঘড়িয়াল ডিম পাড়তে পারবে।
 
ডা. ফরহাদ আরো জানান, ঘড়িয়াল বিনিময়ের পাশাপাশি ঢাকা চিড়িয়াখানা থেকে ৪টি রঙিন ময়ূরও নিয়ে আসা হয়েছে। এদের দুটি পুরুষ ও দুটি নারী। ময়ূরগুলোরও এখানে প্রজনন করে বংশ বিস্তার ঘটানো হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৭
এসএস/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।