ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

হারিয়ে যাচ্ছে ‘হলদে-পা হরিয়াল’

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৩৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৮
হারিয়ে যাচ্ছে ‘হলদে-পা হরিয়াল’ মায়াময় হলদে-পা হরিয়াল, ছবি: সংগৃহীত

মৌলভীবাজার:  ক্লান্ত দুপুর ঘনিয়ে এলেই একটা ডাক ক্রমশ শোনা যেতো। দূর থেকে সে ডাকের ধ্বনিগুঞ্জন হৃদকোণে ভালো লাগা ছড়াতো। হঠাৎ নির্জনতা ভেঙে এ ডাকটি তখন দারুণ অনুভূতি বয়ে নিয়ে আসতো প্রাণে।
 

সালটা ১৯৮৬। ন্যাশনাল টি কোম্পানির (এনটিসি) চাম্পারায় চা বাগান।

সেই চা বাগানের বিশাল বাংলোর পাখিডাকা সৌন্দর্য তখন শৈশবের দিনগুলোকে মুখর করে রেখেছিল ‘হলদে-পা হরিয়াল’রা। ওদের আরো একটি নাম ‘বটকল’। এখন আর হরিয়ালদের ডাক শোনা যায়না।
 
চাম্পারায় বাংলোর পাশে ছিল একটা বটগাছ। সেখানে বিশেষত ফল পাকলে দেখা যেতো দলে দলে ওরা আসছে। কখনো ৫/৬টি। আবার কখনো ১০/১২টি বা তারও বেশি। ওরা ফলগাছের পাতার সঙ্গে মিশে যাওয়া পাখি। স্থানীয় ভাষায় এই পাখিটিকে ‘হরিকল’ বলা হয়।
 
বাংলাদেশ বার্ডক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রখ্যাত পাখি গবেষক ইনাম আল হক বলেন, ‘হলদে-পা হরিয়াল’ বাংলাদেশের সুলভ আবাসিক পাখি। এদের দেহ কোমল কলাপাতা-সবুজ রঙের। তবে প্রাকৃতিক ফলদ বৃক্ষ ধ্বংস হওয়ার কারণে এরা সংকটের মধ্যে রয়েছে। কারণ এরা বৃক্ষচারী পাখি। অধিক মাত্রায় এরা গাছপালার উপর নির্ভরশীল।
 
শারীরিক বর্ণনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এদের দৈর্ঘ্য ৩৩ সেন্টিমিটার, হলদে সবুজ দেহ। মাথায় রয়েছে ছাই রঙ। কালো দাগ রয়েছে লেজ ও ডানার প্রান্তে। হলুদ রঙে রয়েছে গলা, বুক ও চঞ্চুতে। লেজতলে রয়েছে কালো আঁইশের দাগ। মেয়ে পাখি ছেলের চেয়ে অনুজ্জ্বল। পা হলুদ বলেই এর ইংরেজি নামকরণ হয়েছে Yellow Footed Green Pigeen
 
পাখির খাবার ও ডাক সম্পর্কে ইনাম আল হক বলেন, এরা ফলের গাছের কাঁদিতে ঝুলে ঝুলে খাবার খায়। বট, খেজুর, ডুমুর প্রভৃতি ওর প্রিয় খাবার। ভোরে এবং গোধূলিতে এরা বেশি চঞ্চল থাকে। মার্চ থেকে জুন, এ সময়টা ওদের প্রজননকাল। তখন মধুরস্বরে ডাকতে শোনা যায়।
 
এরা বনের পাখি। বাংলাদেশের সব বনেই এদের দেখা যায়। ভারত, নেপাল, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনামসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় পাখিটির বৈশ্বিক বিস্তৃতি রয়েছে বলে জানান ইনাম আল হক।  
 
বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৮
বিবিবি/ জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।