এ মহিমান্বিত ফুলের নাম ‘উদাল’। পত্রঝরা উদাম গাছের ডালে ডালে এখন ঝুলছে থোকায় থোকায় স্বর্ণময় উদাল।
২০১২ সালের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের তফসিল ৪ অনুযায়ী এ উদালকে বাংলাদেশের ‘মহাবিপন্ন’ প্রজাতির তালিকাভুক্ত উদ্ভিদ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের পরিচালক মোল্লা রেজাউল করিম বাংলানিউজকে বলেন, মুগ্ধ হতে হয় উদাল ফুলের গভীর সৌন্দর্যে। এ যেন স্বর্গ থেকে থোকা থোকা স্বর্ণ ঝরে পড়া। এ ছবি আমি আমাদের বোটানিক্যাল গার্ডেন থেকে তুলেছি। এর ইংরেজি নাম Hairy sterculia, Elephant rope tree এবং বৈজ্ঞানিক নাম Sterculia villosa। পরিবার-Malvaceae। উদাল বাংলাদেশসহ ক্রান্তীয় এশিয়ার একটি প্রজাতি। বাংলাদেশ ছাড়াও চীন, নেপাল, ভুটান, ভারত, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়াসহ পৃথিবীর অনেক দেশেই উদাল গাছ দেখা যায়।
শারীরিক গঠন সম্পর্কে তিনি বলেন, উদাল গাছ ২০ মিটার বা ততোধিক উঁচু হয়ে থাকে। পত্রমোচী, মাথা ছড়ানো এবং ধূসর সাদা বাকলওয়ালা গাছ। শীতকালে এ গাছের পাতা ঝরতে শুরু হয়। ফুল বা ফলের মৌসুমে (জানুয়ারি থেকে এপ্রিল) এ গাছে পাতা দেখা যায় না বললেই হয়। শীতের তীব্রতা কমার পরই উদাল গাছে ফুল ফোটা শুরু হয়। পত্রহীন শাখার লম্বা ও ঝুলন্ত ডাটায় অসংখ্য থোকা থোকা সুগন্ধি ফুল ফোটে।
ফুলগুলো পুংলিঙ্গ ও উভয় লিঙ্গ হয়ে থাকে। ফুলের সামনের রং স্বর্ণাভ হলুদ এবং ভেতরের রং কমলা। সূর্যের আলোয় রোমশ ফুলগুলো চকচক করে। সুগন্ধি উদাল ফুল খুব সহজেই সবার নজর কাড়ে। ফুলগুলো দেড় সেন্টিমিটার চওড়া হয়ে থাকে বলেও জানান রেজাউল করিম।
কাঠ সম্পর্কে তিনি বলেন, উদাল গাছের কাঠের রং বাদামি। কাঠ নরম ও হালকা হওয়াতে চা বাক্স বা অনুরূপ কাজে ব্যবহার করা যায়। গাছের বাকল থেকে এক ধরনের আঁশ পাওয়া যায়। যা দিয়ে মোটা রশি তৈরি করা হয়ে থাকে। এছাড়াও উদাল গাছ থেকে স্বচ্ছ আঠাও পাওয়া যায়। যা দিয়ে কনফেকশনারিসহ নানাবিধ কাজে ব্যবহার করা হয়।
এ গাছেরও রয়েছে ভেষজ উপকারিতা। শারীরিক ক্ষমতা বা যৌনক্ষমতা বৃদ্ধিতে উদাল গাছের ফুল ও ছাল উপকারী বলে জানান জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের পরিচালক মোল্লা রেজাউল করিম।
বাংলাদেশ সময়: ১১১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০১৯
বিবিবি/আরবি/