কিন্তু কিভাবে মৌমাছি দূর থেকে বুঝতে পারে যে, দূর বনে ফুল ফুটেছে আর তাকে আহ্বান জানাচ্ছে, ছুটে যাবার জন্য? কিভাবেই বা মধুপ্রেমী এ কীট বুঝে উঠতে পারে ফুলের পাশে তার এখনি ছুটে যাবার উপযুক্ত সময়!
জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এবং গবেষক ড. মনোয়ার হোসেন তুহিন এ বিষয়ে বাংলানিউজকে বলেন, মৌমাছিরা রঙের বৈচিত্র্যগুলো সহজে দেখতে পারে। ফুলের মধ্যে যে রং দেখা যায় সেটা যদি এক কিলোমিটার দূরত্বেও হয় তাতে মৌমাছি ঠিকই তা দেখতে পারে এবং সেই ফুলটিকে লক্ষ্য করে সেদিকেই ছুটে আসে।
মৌমাছি এবং প্রজাপতিরা এই ‘নেকটার গাইড’ ব্যবহার করে তারা অনেক দূরে থেকে শনাক্ত করতে পারে যে ওখানে-ওদিকে ফুল আছে। তখনই তারা ওই সুনির্দিষ্ট ফুলগুলোর দিকে ধেয়ে আসে এবং এক এক করে অনেকগুলো ফুলের মধু সংগ্রহ করতে তাদের দেখা যায় বলে জানান ড. মনোয়ার হোসেন তুহিন।
মৌমাছির বিষয়ে তিনি বলেন, “মৌমাছির ক্ষেত্রে যেটা হয়—ফুলের ওই এলাকাটি চেনার জন্য মৌমাছিরা বিভিন্ন ধরনের শনাক্তকারী ‘কিউ’ ব্যবহার করে। যেমন- ওদের মধ্যে যে মৌমাছি আগে নতুন কোনো জায়গায় যায়, সে এই তথ্যটা অন্য একটা মৌমাছিকে পাস করে দেয়। সেক্ষেত্রে একজন আরেকজনকে ফলো করার মাধ্যমে সামনে-পিছনে করে তারা অগ্রসর হয়।
আরেকটি বিষয় হলো, মৌমাছিরা যখন যায় তখন ‘ফেরোমেন’ ব্যবহার করে। যাত্রা পথে ফেরোমেনের মাধ্যমে অপর মৌমাছিগুলো প্রথম মৌমাছিটিকে অনুসরণ করে এগিয়ে যায়। তারা কোন দিকে যাবে উত্তর নাকি দক্ষিণে, পূর্ব নাকি পশ্চিমে সেটা তারা সূর্যর অবস্থান দেখে তারা বুঝতে পারে এবং দিক নির্ণয় করে সে লক্ষ্যেই ধাবিত হয়। রাতের বেলায়ও এরা আকাশের তারাদের উপর নির্ভর করে অন্যত্র ছুটে যায়। ”
মৌমাছিদের স্মৃতিশক্তি খুব ভালো। তারা একটা নতুন জায়গায় গেলে সহজেই সেই জায়গাটি চিনে ফিরে আসতে পারে। কোন ঝোপঝাড়, কোন বন-জঙ্গল এবং কোন পাহাড়-বনভূমি তারা অতিক্রম করেছে সেগুলো তারা বেশ মনে রাখতে পারে। ফলে নতুন মৌমাছিকে পথ দেখানোর জন্য তারা এ পদ্ধতিতেই ‘ট্রেইল’ করে থাকে বলে জানান জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এবং গবেষক ড. মনোয়ার হোসেন তুহিন।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৯
বিবিবি/এমজেএফ