ভালোমানের পাখির একটি ছবিধারণ করতে না পারার যন্ত্রণা দখল করেছে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের অপরাহ্ন বেলাতে। পাখি এক প্রকারের চটপটে বস্তু! গাছে স্থিরভাবে সে কখনোই বসে থাকে না।
এমন আত্মবিশ্লেষণের মধ্যে এক পাখির অচেনা মিষ্টি ডাক! তাতে নেড়ে ওঠে নিকটতম গাছের ডাল। ভরে ওঠে মন। গলায় কালো দাগের এ গায়ক পাখিটার সঙ্গে পরিচিত হয়ে ওঠার সুযোগ হয় সেই আক্ষেপ ঘিরেই। নাম তার ‘বড় মালাপেঙ্গা’। এর ইংরেজি নাম Greater Necklaced Laughingthrush এবং বৈজ্ঞানিক নাম Garrulax pectoralis।
বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রখ্যাত পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক বাংলানিউজকে বলেন, এ পাখিটির পীতবর্ণের গলায় রয়েছে কালো প্রশস্ত মালা। এ মালার নামানুসারেই তার নামকরণ। ‘বড় মালাপেঙ্গা’ আমাদের দেশের সুলভ আবাসিক পাখি। এদের দৈর্ঘ্য প্রায় ২৯ সেন্টিমিটার এবং ওজন প্রায় ১৫৬ গ্রাম। আকারে এরা আমাদের শালিক পাখির চেয়ে বড়।
বিশ্লেষণ করে এ পাখি গবেষক বলেন, এ পাখিটি Garrulax ‘গণ’ এর পাখি। পৃথিবীতে এ গণের ৫৩ প্রজাতির পাখি রয়েছে। তার মধ্যে বাংলাদেশে পাঁচ প্রজাতি পাওয়া যায়। এ গণের পাখিদের ঠোঁট বলিষ্ঠ ও সোজা। ডানা খাটো ও গোলাকার। প্রায়ই এর প্রান্তদেশ অপেক্ষাকৃত বাদামি। প্রজনন মৌসুমে অধিকাংশ প্রজাতি কোলাহলমুখর ও দলবদ্ধভাবে বাস করে।
পাখিটির স্বভাব উল্লেখ করে তিনি বলেন, এরা ১০-২০টি পাখির দলে বিচরণ করে বেড়ায় এবং এরা দলবদ্ধ বাচাল গায়কপাখি। পত্রবহুল ঘন সবুজ বন, বাঁশঝাড় ও বৃক্ষতলের মাঝারি গুল্মলতায় ঘুরে বেড়ায়। পোকা, শামুক, ছোট অমেরুদণ্ডী প্রাণী, রসালো ফল, বীজ, ফুলের রস প্রভৃতি তার খাদ্যতালিকায় রয়েছে।
বাংলাদেশের চির সবুজ বন ছাড়াও এ পাখিটির ভারত, নেপাল, ভুটান, চীন, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনামসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় এর বৈশ্বিক বিস্তৃতি রয়েছে বলে জানান প্রখ্যাত পাখি গবেষক ইনাম আল হক।
বাংলাদেশ সময়: ১০০৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৯
বিবিবি/আরবি/