পাখি বিজ্ঞানীরা এসব পাখির নাম দিয়েছেন ‘মাইগ্রেটরি বার্ড’ অর্থাৎ পরিযায়ী পাখি। জেলার প্রসিদ্ধ সংরক্ষিত জলাভূমি বাইক্কা বিল এখন মুখর এমন সব পাখিদের কলকাকলিতে।
সৈকতে বিচরণ করা এই ‘সবুজ বাটান’ একটি পরিযায়ী পাখী। এর ইংরেজি নাম Green Sandpiper এবং বৈজ্ঞানিক নাম Tringa ochropus। জলাভূমিতে যখন এরা ঘুরে ঘুরে খাবার সংগ্রহ করে তখন স্বচ্ছ পানিতে তাদের ছায়াটি অপূর্ব সৌন্দর্য নিয়ে ফুটে ওঠে।
বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রখ্যাত পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক বাংলানিউজকে বলেন, এরা দেশের দুর্লভ পরিযায়ী পাখি। শীত মৌসুমে হঠাৎ হঠাৎ এদের সৈকতে ঘুরে বেড়ানো পাখিদের দলে দেখা যায়। ইউরোপ, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া ও ভারত উপমহাদেশের প্রায় সব দেশসহ এশিয়ার এদের বৈশ্বিক বিস্তৃতি রয়েছে।
পাখিটির শারীরিক বর্ণনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এর দৈর্ঘ্য প্রায় ২৩ সেন্টিমিটার এবং ওজন ৭৫ গ্রাম। প্রজননকাল ছাড়া প্রাপ্তবয়স্ক পাখির কালচে বাদামি দেহতলে খুব ছোট ফিকে তিলা দেখা যায়। তাদের পেট, বগল ও চোখের সামনের ভ্রু-রেখা সাদা। মাথা ও ঘাড় ছাই বাদামি এবং পা ও পায়ের পাতা জলপাই সবুজ। এর রয়েছে সোজা খাটো অনুজ্জ্বল সবুজভ ঠোঁট। যার আগা কালো।
ব্রিডিং পিরিয়ডে (প্রজননকাল) এদের পিঠে বড় সাদা তিলা, ঘাড়ে ও বুকের উপরের অংশে বাদামি ডোরা হয়ে থাকে। ছেলেমেয়ে পাখির চেহারা অভিন্ন বলে জানান তিনি।
সবুজ বাটানের স্বভাব সম্পর্কে ইনাম আল হক বলেন, মজার বিষয় হলো, বিরক্ত হলে এরা মাথা ওঠানাম করে রাগ প্রকাশ করে। ওড়ে যাওয়ার সময় বাঁশির মতো তীক্ষ্মস্বরে ডাকে। সচরাচর একা বা জোড়ায় থাকে। লতাপাতায় ঘেরা অগভীর মিঠাপানির জলাভূমি, নদীর পাড়, বর্জ্য রাখার জায়গা, ছোট পুকুর, ডোবা, সরু খাদ ও পাহাড়ি নদীতে বিচরণ করে। অগভীর পানিতে হেঁটে নরম কাদায় ঠোঁট ঢুকিয়ে এরা খাবার খায়।
শামুক ও চিংড়ি জাতীয় প্রাণী, কেঁচো, পানির অমেরুদণ্ড উদ্ভিজ্জ উপাদান রয়েছে সবুজ বাটানের খাদ্য তালিকায়। এপ্রিল-জুন এদের প্রজনন মৌসুম। তখন এরা সাইবেরিয়াতে অন্য পাখির বাসায় তিন থেকে চারটি ডিম পাড়ে বলে জানান এ পাখি গবেষক।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০২০
বিবিবি/এএটি