ঢাকার এই আকস্মিক বদলে যাওয়ায়, বদলে গেছে এর পরিবেশও। নাগরিক কোলাহল থেমে যাওয়ায় বাড়তে শুরু করেছে পাখিদের কিচিরমিচির।
পৃথিবীতে বায়ু দূষণের দিক দিয়ে ঢাকাকে উপরের দিকেই রাখা হয়। তবে গত এক মাসের নাটকীয়তায় ঢাকার বাতাসে দূষণ কমে এসেছে। বলা যেতে পারে, ১০ বছরের মধ্যে এই মে মাসেই ঢাকার বাতাসের মান সবথেকে ভালো। আর তা এতটাই যে, তাকে নির্মল বলা যায়। কেননা এখন আর ঢাকার বায়ু থেকে মানুষের বায়ু দূষণে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের বায়ুমান মনিটর বাতাসে ভাসমান সূক্ষ্ম বস্তুকণার মাত্রা পরিমাপ করে। একে সাধারণভাবে বলা হয় পিএম ২.৫। আর বর্তমানে ঢাকায় দূতাবাস প্রাঙ্গণের বস্তুকণাগুলোর ব্যাস ২ দশমিক ৫ মাইক্রন বা তার চেয়েও ছোট।
ঢাকায় অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র কনস্যুলেটের তথ্য অনুযায়ী, রোববার (০৩ মে) বিকেল ৩টার পরিমাপ অনুযায়ী ঢাকায় বায়ুর মান ৮০ একিউআই (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স) এবং পিএম ২.৫। এই সময় ঢাকার এই বায়ুমান গ্রহণযোগ্য বা ভালো। বায়ুর এই মান মানুষের ক্ষতি করে না। গত এক দশকে ঢাকায় বায়ুরমান বিকেল ৩টায় ৮৫ একিউআই এবং পিএম ২.৫ বা এত ভালো ছিল কি-না, তা গবেষণার বিষয়।
কনস্যুলেটের তথ্য অনুযায়ী, বাতাসের একিউআই মান ৫১ থেকে ১০০ এর মধ্যে হলে সেই বাতাসের মান গ্রহণযোগ্য। তবে কিছু দূষণকারী পদার্থ থাকার জন্য বায়ুদূষণের প্রতি অস্বাভাবিকভাবে স্পর্শকাতর খুব কম সংখ্যক মানুষের জন্য এটি মাঝারি ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। অর্থাৎ এই পরিসরে বাতাসে দূষণ খুব অল্প, যা একজন ব্যক্তির জন্য স্বাস্থ্য ঝুঁকি একদমই কম। তবে বাতাসের ওজন কণা ও সামান্য দূষণের জন্য কিছু মানুষ, যারা শারীরিকভাবে বেশ সংবেদনশীল, তারা স্বল্প পরিসরে শ্বাসকষ্টের লক্ষণগুলো অনুভব করতে পারেন।
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে ঢাকাসহ সারাদেশে অঘোষিত লকডাউনের কারণে মানুষ অনেকটাই ঘরবন্দি হয়ে গেছে। ২৬ মার্চ সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর বড় একটা অংশ গ্রামে চলে গেছেন। তারপর থেকে ঢাকার বায়ুমান ভালো হতে শুরু করে। ঢাকায় অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র কনস্যুলেটের তথ্য অনুযায়ী ওইদিন (২৬ মার্চ) সকাল ১০টায় ঢাকার বায়ুমান ছিল ১৪৪ আর পিএম ২.৫। আর ৩৮ দিন পর এখন তা কমে ৮০ একিউআই এবং পিএম ২.৫।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৭ ঘণ্টা, মে ০৩, ২০২০
এইচএমএস/এইচএডি