ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

চিকিৎসা শেষে মুক্ত আকাশে ডানা মেললো ১৯ শকুন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২, ২০২২
চিকিৎসা শেষে মুক্ত আকাশে ডানা মেললো ১৯ শকুন

দিনাজপুর: ভারত থেকে বাংলাদেশে আসা অসুস্থ ১৯টি শকুন চিকিৎসা শেষে অবমুক্ত করা হয়েছে।

শনিবার (০২ এপ্রিল) দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার সিংড়া জাতীয় উদ্যানে শকুনগুলো অবমুক্ত করা হয়।

বনবিভাগ ও শকুন পরিচর্যা কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, শীত থেকে রক্ষা পেতে ও খাবারের খোঁজে এসব শকুন হিমালয়ের পাদদেশে চলে আসে। সেখানেও খাবারের ঘাটতি হলে তারা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের লোকালয়ে আসে। দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে আসায় এই শকুন অসুস্থ হয়ে পড়ে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা অসুস্থ এসব শকুনের চিকিৎসার জন্য দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার সিংড়া জাতীয় উদ্যানে পরিচর্যা কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। এক বছরে বিভিন্ন স্থান থেকে আনা ১৯টি শকুনকে চিকিৎসা শেষে আকাশে অবমুক্ত হলো।
  
শকুন অবমুক্তকরণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ইকবাল আব্দুল্লা হারুন প্রধান অতিথি ছিলেন।  

এছাড়াও অনুষ্ঠানে বন সংরক্ষণ ও প্রকল্প পরিচালন উপ-প্রধান গোবিন্দ রায়, আইইউসিএন কান্ট্রি রিপ্রেজেনটিভ রাকিবুল আমিন, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু, বন সংরক্ষণ, বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক ড. মো. মোল্লা রেজাউল করিম, বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক এএসএম জহির উদ্দিন আকন্দ, বন সংরক্ষক মো. আমিনুল ইসলাম, দিনাজপুরের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বসির-আল মামুন, রাজশাহীর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আহমদ নাইমুর রহমান, রংপুরের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মাতলুবুর রহমান বক্তব্য দেন।  

এর আগে উপস্থিত অতিথিরা দুইটি শকুন মুক্ত আকাশে আড়ানোর মাধ্যমে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। বাকিগুলোকেও পর্যায়ক্রমে মুক্ত আকাশে আড়ানো হবে।  

শকুনদের চিকিৎসার জন্য দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) ভেটেরিনারি বিভাগের চিকিৎসক খাদিজা বেগম জানায়, শকুনই একমাত্র প্রাণী যা রোগাক্রান্ত মৃত প্রাণী খেয়ে হজম করতে পারে এবং অ্যানথ্রাক্স, খুরারোগের সংক্রমণ থেকে অবশিষ্ট জীবকুলকে রক্ষা করে। তারা প্রকৃতির ঝাড়ুদার হিসেবে পরিচিত। কিন্তু বড় বড় গাছ, খাদ্যের অভাব ছাড়াও বাংলাদেশে ডাইক্লোফেনাকের বেশি ব্যবহারের কারণে শকুন আজ বিলুপ্তির মুখে।

শকুন উদ্ধার ও পরিচর্যা কেন্দ্রের মুখ্য গবেষক সারওয়ার আলম দিপু জানান, ২০১৪ সালে বাংলাদেশ বন বিভাগ ও আইইউসিএন বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে সিংড়া জাতীয় উদ্যানে কেন্দ্রটি চালু করা হয়। এরপর থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ১৪৯টি শকুনকে সুস্থ করে মুক্ত আকাশে উড়িয়ে দেয়া হয়। সিংড়া ফরেস্ট থেকে প্রতি বছর উদ্ধারকৃত ২০-২৫টি শকুন সুস্থ করার পর অবমুক্ত করা হয়। শুধুমাত্র ২০২১ সালে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মোট ৩২টি শকুন এখানে আনা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০২২
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।