ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

মা হারাদের কষ্ট... (অডিও)

সৈয়দ ইফতেখার আলম, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪২১ ঘণ্টা, মে ১০, ২০১৫
মা হারাদের কষ্ট... (অডিও)

ঢাকা: মানুষের সর্ব প্রথম সম্পর্কের নাম ‘মা’। পৃথিবীর সবচেয়ে দৃঢ় সম্পর্কের নাম ‘মা’।

সবচেয়ে পবিত্র-মধুর সম্পর্ক ও শব্দের নামও আবার ‘মা’। সবচেয়ে আপনজনও সেই ‘মা’। সবচেয়ে কাছের মানুষও ‘মা’। সবচেয়ে বড় শুভাকাঙ্ক্ষিও ‘মা’। তবে, এ ‍ভুবনে মা নেই যাদের এর চেয়ে বড় দুর্ভাগা আর কেউ নন!

পৃথিবী ছেড়ে যাওয়া সেই মায়ের জন্য সন্তানের চোখের নোনা জল যতই ভাসুক, ততই কম! মা দিবসে সেই মাকে বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ।

এতোটা আপনজন আজ পৃথিবীছাড়া; যার জন্য এ পৃথিবীর আলো দেখেছে সন্তান। সেই মাকে হারিয়ে সন্তানের আকুতি, সে হাহাকার তাদেরই বুকে ক্ষণে-ক্ষণে জেগে ওঠে।

রোববার (১০ মে) বিশ্ব ‘মা’ দিবস। এদিনটি ছাড়াও ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় রোববার নরওয়েতে, মার্চের চতুর্থ রোববার আয়ারল্যান্ডে, নাইজেরিয়ায় ও যুক্তরাজ্যে মা দিবস পালিত হয়। তবে মে মাসের দ্বিতীয় রোববারই অধিকাংশ দেশ মা দিবস পালন করে। মাকে স্মরণের কোনো নির্দিষ্ট দিন নেই, সময় নেই। এ দিবসটি শুধুই একটি উপলক্ষ হলেও সারা বিশ্বের মায়েদের শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতাভরে স্মরণের এ দিন তো আজই। মাকে গভীর মমতায় অনুভবের দিনও আজ।

যাদের মা আছেন, তারা সৌভাগ্যের অংশীদার। কিন্তু যাদের মা নেই তারা? যারা অনাথ তারা! কতটা হাহাকার তাদের মনে আজকের এই দিনে! কতটা আকুতি তাদের! তারা যে এ নিষ্ঠুর পৃথিবীতে সবচেয়ে আপনজনকে হারিয়েছেন! এ কষ্ট শুধু তারাই বোঝেন।

আমেরিকার ১৬তম প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন মাকে স্মরণে এনে বলেছিলেন, ‘আমি যা কিছু পেয়েছি, যা কিছু হয়েছি, অথবা যা হতে আশা করি তার জন্য আমি আমার মার কাছে ঋণী। তিনি ছিলেন বলে জীবনের পথ পেয়েছিলাম আমি’।

খ্যাতিমান ইংরেজ কবি, নাট্যকার রবার্ট ব্রাউনিং বলেছেন, ‘মাতৃত্বেই সব মায়া-মমতা ও ভালোবাসার শুরু এবং শেষ’।

জীবনের চরম সংকটকালে পরম সান্ত্বনার স্থল হিসেবে যার কথা প্রথম মনে পড়ে তিনি মমতাময়ী মা। এই মা-ই প্রথম পৃথিবীর রং-রূপ-শব্দ-গন্ধ-চেনান-দেখান-শেখান। ধর্মেও রয়েছেন মা, অত্যন্ত গুরুত্বভরে। ইসলাম ধর্মে বলা হয়েছে ‘মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেস্ত’।

শুধু তাই নয়- যুগে যুগে কবি-সাহিত্যিকগণ মা বন্দনা করে কত ভালোবাসাই না প্রকাশ করেছেন। সংগীতের সুরেও মায়ের প্রতি ভালোবাসা ও মা হারার বেদনা বোঝানো হয়েছে।

মাকে বন্দনা করে কবি কামিনী রায় তার ‘কত ভালবাসি মা’ কবিতায় লিখেছেন— জড়ায়ে মায়ের গলা শিশু কহে আসি,-/মা, তোমারে কত ভালোবাসি!/"কত ভালোবাস ধন?" জননী শুধায়। /"এ-তো বলি দুই হাত প্রসারি দেখায়। / তুমি মা আমারে ভালোবাস কতখানি?/মা বলেন "মাপ তার আমি নাহি জানি। "/"তবু কতখানি, বলো। "/"যতখানি ধরে/তোমার মায়ের বুকে। "

মা দিবসের ইতিহাসের সঙ্গে প্রাচীন গ্রিস ও রোমের ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে। প্রাচীন গ্রিসে দেব-জননী রিয়ার উদ্দেশে বসন্ত উৎসব উৎসর্গ করা হতো। রোমে দেবী মা সিবিলির জন্য ছিল বিশেষ উৎসব। ভেনাসকে রোমানরা তাদের জাতির মা বলে মনে করতো। রোমান পুরাণে সিরিস, সিবিলি ও ভেনাস এই তিন দেবীকে এক নামে ‘আলমা মেটার’ বলে অভিহিত করা হতো। আলমা মেটারের অর্থ হলো জীবনদায়িনী, খাদ্যদায়িনী এবং আশীর্বাদিকা মা। রোমানদের মা উৎসব পরবর্তীকালে খ্রিস্টধর্মের সঙ্গে সংগতি রেখে মা মেরির সম্মানে লেন্ট পরবে রূপান্তরিত হয়। সেই শুরু। তারও অনেক পরে আনুষ্ঠানিকভাবে মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর স্বীকৃতি ও প্রসার ঘটে ১৯১৪ সাল থেকে। যুক্তরাষ্ট্রে। এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশে গত প্রায় দেড় যুগ ধরে দিনটি পালন হয়ে আসছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৪২১ ঘণ্টা, মে ১০, ২০১৫
আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।