ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

নাজিরপুরে আঙুর চাষ, বাণিজ্যিক আবাদের সম্ভাবনা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৪৭ ঘণ্টা, জুন ৮, ২০১৫
নাজিরপুরে আঙুর চাষ, বাণিজ্যিক আবাদের সম্ভাবনা ছবি : সংগৃহীত

পিরোজপুর: ভিনদেশি ফল হিসেবে পরিচিত হলেও এখন দেশের মাটিতেই চাষ হচ্ছে রসালো ফল আঙুরের। ‍

সম্প্রতি ব্যক্তি উদ্যোগে সৌখিনভাবে এর চাষ শুরু হয়েছে পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলায়।

এরইমধ্যে আঙুরের বাণিজ্যিক চাষের সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে ওই উপজেলার কয়েক গ্রামে।

নাজিপুর উপজেলার বরইবুনিয়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত কৃষি কর্মী নূর মোহাম্মদ মিয়া ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা মুন্সি হুমায়ন কবির। শখের বশে নিজস্ব উদ্যোগে তাদের হাতেই এ অঞ্চলে শুরু হয় আঙুরের চাষ। তাদের দেখাদেখি এটা ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের কয়েকটি গ্রামে।

সরেজমিনে সৌখিন আঙুর চাষি মুন্সি হুমায়ন কবিরের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, উঠানজুড়ে লাউয়ের মাচার মতো মাচা। মাচাজুড়ে সর্পিল অসংখ্য আঙুর লতা আর পাতার প্রাচ্যুর্য। মাচার এখানে-সেখানে থোকায় থোকায় ঝুলছে আঙুর।

জানা গেলো, মুন্সি হুমায়ন কবিরের আঙুর চাষে উদ্বুদ্ধ হয়ে এই মাটিভাঙ্গা ইউনিয়নেরই কয়েকটি গ্রামে শতাধিক বাসিন্দা নিজ বাড়ির উঠানে ও পাশের পতিত জমিতে শুরু করেছেন আঙুর চাষ। গ্রামগুলো হলো বরইবুনিয়া, মাহামুদকান্দা, চর-মাটিভাঙ্গা, মাটিভাঙ্গা ও বরইতলা।

কয়েকজন আঙুর চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেলো, পর্যাপ্ত পরিচর্যার মাধ্যমে বাংলাদেশের আবহাওয়াতেও অনাবাদী ও পতিত জমিতে আঙুর চাষ করা সম্ভব। এর রয়েছে ব্যাপক বাণিজ্যিক চাষাবাদের সম্ভাবনা।

কথা হয় আঙুর চাষি মুন্সি হুমায়ন কবিরের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে জানান, সুযোগ পেলে আঙুর চাষ এ এলাকায় বাণিজ্যিক কৃষিতে পরিণত হতে পারে। এর থেকে লাভবান হওয়া সম্ভব।

কবির শোনান আঙুর চাষের শুরুর কথা।   জানান, প্রায় তিন বছর আগে স্থানীয় সুনীল নামে এক ফলগাছ বিক্রেতা তার বাড়ির উঠানে আঙুর গাছ লাগিয়ে দেন। বিক্রেতার পরামর্শ গাছের ব্যাপ্তি বাড়তে শুরু করলে তৈরি করেন মাচা। প্রথম বছরই গাছে ১৪/১৫ থোকা আঙুর ধরলেও তা ছিল টক স্বাদের। পরের বছরেই ধরে ৪০ থোকা আঙুর। এ বছর অন্তত ২৫০ থোকা আঙুর ধরেছে। এগুলো আগের তুলনায় যেমন বড়, তেমনি মিষ্টি স্বাদের।

তিনি জানান, প্রয়োজনীয় সেবা ও পর্যাপ্ত সহায়তা পেলে এ চাষ বাণিজ্যিক ভিত্তিতে করা সম্ভব।

স্থানীয় ফল গাছ বিক্রেতা সুনীল মন্ডল বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে ভাল জাতের আঙুর গাছ সংগ্রহ এবং কলম তৈরি করে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে রোপণ করে আসেন। এজন্য নেন চারাপ্রতি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা নেন।

দূর্গাপুর গ্রামের অপর আঙুর চাষি অমলেশ রায় জানান, আঙুর চাষে সফলতার জন্য জাত নির্বাচন মূল বিষয়। হাড়ের গুড়া, পশুর তাজা রক্ত ইত্যাদি মাটিতে প্রয়োগ করে মিষ্টি আঙুর ফলানো যায়।

এ বিষয়ে মাটিভাঙ্গা ইউনিয়নের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ননী গোপাল মজুমদার জানান, বর্তমানে  এলাকার অন্তত ১২০টি বাড়িতে সৌখিনভাবে আঙুরের চাষ হচ্ছে। সঠিক কৃষি পরামর্শ অনুসরণ করে তারা এর চাষ করছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৪৪৫ ঘণ্টা, জুন ০৭, ২০১৫
এসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।