মাগুরা: রাত তখন সাড়ে ন’টা। মাগুরা সদরের ইছাখাদা বাজার থেকে রাঘবদাইড় এর দিকে যেতে এ গ্রামটির নাম বীরপুর।
তবে নিকানো উঠোন বলে দেয় বাড়ির মানুষগুলো বেশ পরিপাটি। পৌষের প্রচণ্ড শীতে বাড়ির বারান্দায় একটি খাটে শুয়ে আছেন বাড়ির কর্তা পৌঢ় আমির হোসেন। বাড়ির গোয়ালের গরুকে পাহারা দিতেই তার এখানে শুয়ে থাকা। ডেকে তুলে তার কোনো শীতের কাপড় প্রয়োজন আছে কিনা জানতে চাইলেন জেলা প্রশাসক। পঞ্চাশোর্ধ আমিরের সাফ উত্তর- না। দরকার নেই।
পৌষের এই প্রচণ্ড শীতের রাতে দরিদ্র কোনো মানুষের বাড়িতে গিয়ে এমন উত্তর আশা করেননি কেউই। সবাই অবাক হয়ে গেলেন। আমির হোসেন জানালেন, তার একটি লেপ আছে-যা দিয়ে তিনি মোটামুটি শীত নিবারণ করতে পারছেন। তবে তার গ্রামে বেশ কিছু পরিবার আছে যাদের শীতের কাপড় খুব দরকার।
এ সময় তাকে প্রস্তাব দেওয়া হলো সঙ্গে গিয়ে ওই পরিবারগুলোকে দেখিয়ে দিতে। তিনি সানন্দে রাজি হলেন। আশপাশের বিভিন্ন বাড়িতে নিয়ে গিয়ে হতদরিদ্র মানুষদের ঘুম থেকে ডেকে তাদের হাতে তুলে দিতে সাহায্য করলেন প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে আসা শীতের কম্বল।
সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) দিনগত রাতে মাগুরা জেলা প্রশাসক মাহবুবর রহমানের নেতৃত্বে গ্রামে গ্রামে ঘুরে শীতবস্ত্র বিতরণের এ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন মাগুরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) খোন্দকার আজিম আহমেদ, সদরের উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইয়ারুল ইসলাম, এনডিসি রবিউল হাসান, এলজিএসপির সমন্বয়ক মো. শামসুজ্জোহা, সদর উপজেলা পিআইও মোহাম্মদ নুরুজ্জামান প্রমুখ।
পরে রাঘবদাইড় ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর, পাকাসহ কয়েকটি গ্রামে ঘুরে দরিদ্র মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কম্বল বিতরণ করা হয়।
গভীর রাতে বাড়ির উঠানে জেলা প্রশাসক ও তার সঙ্গীদের দেখে অনেকেই অবাক হন। অনেকই বলেন, ‘যারা এই কম্বলগুলো আমাদের কাছে পাঠাইছেন, আল্লাহ যেন তাদের ভালো করেন’।
বাংলাদেশ সময়: ০৬৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৫
এটি