ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

পলাশী দিবস

ইতিহাসে পলাশী প্রহসন

ফিচার ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৬ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৬
ইতিহাসে পলাশী প্রহসন

ঢাকা: ২৩ জুন। ঐতিহাসিক পলাশী দিবস।

১৭৫৭ সালের এ দিনে পলাশীর আমবাগানে বাঙ‍ালি ও ইংরেজদের মধ্যে পলাশীর যুদ্ধ সংঘটিত হয়। যুদ্ধে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছে পরাজিত হন। তারপর প্রায় দুইশো বছর ইংরেজরা এদেশ শাসন করে।

গোঁড়ার কথা
১৭৪০-১৭৫৬ সালে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার স্বাধীন নবাব ছিলেন আলীবর্দী খান। ইংরেজরা এদেশে ব্যবসা করতে আসতো ওই সময়। মোঘল শাসকরা তাদের করমুক্ত ব্যবসা করার সুবিধা দেন। ১৭৫৬ সালে আলীবর্দী খান মারা গেলে তার ছেলে সিরাজ-উদ-দৌলা নবাব হন। কিন্তু সিরাজ নবাব হওয়ায় সন্তুষ্ট হননি তার চারপাশের অনেকেই। ঘরের ভেতরে জড়াতে থাকে ষড়যন্ত্রের জাল। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনাপতি রবার্ট ক্লাইভ নবাবের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন।

ইংরেজরা নতুন নবাবের অনুমতি ছাড়াই কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ নির্মাণ করে। সিরাজ-উদ-দৌলা ক্রোধান্বিত হয়ে কলকাতা দখল করেন। ইংরেজরা আবার কলকাতা পুনর্দখলের চেষ্টা করে। নবাবের সঙ্গে লোক দেখানো সমঝোতা করে তারা। পেছনে বাড়তে থাকে ইংরেজদের নৈরাজ্য।

ইংরেজরা মোগল সম্রাটের দেওয়া বাণিজ্যিক সুবিধার অপব্যবহার করলে নবাব এতে বাধা দেন। ফলে সিরাজ-উদ-দৌলার সঙ্গে ইংরেজদের সম্পর্ক দিন দিন খারাপ হতে থাকে। রবার্ট ক্লাইভ ও তার অনুচররা নবাবকে সিংহাসনচ্যুত করার ছক কাটতে শুরু করে। নবাবের অন্দরমহলও নবাবের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার খেলায় মেতে ওঠে। অগোচরে ‍ইংরেজদের সঙ্গে যোগ দেয় মীরজাফর, রায়দুর্লভ, জগৎশেঠ, মাহতাব চাঁদ, উর্মিচাঁদ, মহারাজা স্বরূপচাঁদ, মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র, ঘষেটি বেগম, রাজা রাজবল্লভ ও নন্দকুমার। যার ফলাফল গিয়ে ঠেকে পলাশীর যুদ্ধ পর্যন্ত।

পলাশী দিবস
১৭৫৭ সালের ২৩ জুন। বৃহস্পতিবার সকাল আটটায় মুর্শিদাবাদ থেকে ১৫ ক্রোশ দক্ষিণে ভাগিরথী নদীর তীরে পলাশীর আমবাগানে শুরু হয় যুদ্ধ। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ও নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার এ যুদ্ধে নবাবের পক্ষে ছিলো প্রায় ৬৫ হাজার সেনা। অন্যদিকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির পক্ষে ছিলো মাত্র তিন হাজার সৈন্য। সৈন্যসংখ্যা কয়েকগুণ বেশি থাকলেও মীরজাফর, ইয়ার লতিফ ও রায় দুর্লভের অধীনস্ত প্রায় তিন ভাগের দুই ভাগ সৈন্যই যুদ্ধে অংশ নেয়নি।  

যুদ্ধের সময় বৃষ্টি নামায় নবাবের কামানের গোলায় ব্যবহৃত গান পাউডার ভিজে যায়। নিহত হন মীর মর্দান। এমন বিপদের সময় নবাব মীর জাফরের কাছে পরামর্শ চান। বিশ্বাসঘাতক  মীরজাফর নাবাবকে যুদ্ধ বন্ধ করে পরের দিন যুদ্ধ শুরুর পরামর্শ দেন। নবাব সিরাজ যখন যুদ্ধ বন্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তখন মীরজাফর রবার্ট ক্লাইভের বাহিনীকে এ তথ্য দেন।
 
ধুরন্ধর ইংরেজরা নবাবের বাহিনীর ওপর অতর্কিত হামলা চালায় ও যুদ্ধে জয়লাভ করে। যুদ্ধ পরবর্তী প্রায় দুইশো বছর ইংরেজদের অধীনে থাকে বাংলা।

বাংলাদেশ সময়: ১১২০ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৬
এসএমএন/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।