সাতক্ষীরা থেকে ফিরে: সড়কটির যেখানে শেষ, সেখানে শেষ বসতিও। এরপরে যতদূর চোখ যায় চিংড়ি আর দূরে সবুজ গ্রামের রেখা।
পাশেই ঘের। ঘেরের আইল বা ভেড়িও একেবারে কম নয়। খাবারের অভাব নেই। তাই আশপাশের জায়গাটি হয়ে উঠেছে সুইঁচোরা, চাঁদিঠোঁট মুনিয়া, দুর্গা টুনটুনি, বুলবুলি, ফটিকজল, বাবুই প্রভৃতির পাখির অভয়ারণ্য। তাদের আনাগোনা ও বাসা দেখা মিললো বেশ কিছু। এই মুনিয়া যুগল খাবার খেয়ে ডালে এসে বসে তাই আছে বেশ ফুরফুরে মেজাজে।
একটু পরে তার সঙ্গে এসে যোগ দিলো আরও এক যুগল। আস্তে আস্তে কাছ ঘেঁষে বসতে শুরু করলো তারা। তাদের থেকে বেশ অনেকটা নিচে পাঁচিলের উপর দাঁড়িয়ে সন্তর্পনে দেখতে থাকলাম তাদের।
তখনও জানিনা এটা কি পাখি। কিন্তু তাদের ভ্রুক্ষেপহীন আড্ডা, খুনসুঁটি দেখতে ভালোই লাগছিলো। প্রথম যুগল যখন একে অন্যের প্রেম নিবেদনে মশগুল, পাশেল যুগলের তখন যেন চলছে ঝগড়া। পাখিটির নাম অবশ্য পরে জানি শখের আলোকচিত্রী আদনান আজাদ আসিফের কাছ থেকে।
চিত্র বদলাতে সময় লাগলো না মোটেই। আদর, ভালোবাসা থেকে প্রথম যুগলের হঠাৎই যেন শুরু হলো মান-অভিমান। একে অন্যের মুখের দিকে তাকালেও যেন ঝগড়া বাঁধবে- এই ভাব! ততক্ষণে পাশের যুগল বেশ কাছাকাছি।
বেশ খোশ মেজাজ ও আয়েসি ভঙ্গিতে দু’জনে সময় কাটাতে লাগলো তারা।
অভিমান কি তবে ভাঙলো! দ্বিতীয় যুগলটি যখন প্রেমে মশগুল প্রথম যুগলের একটি তখন মান-অভিমান ভুলে চেষ্টা করছে কাছে ভেড়ার।
পৃথিবীর সব সুখ যেন এই চাঁদিঠোঁট মুনিয়া যুগলের!
ইন্টারনেটের তথ্য অনুযায়ী, চাঁদিঠোঁট মুনিয়া (Indian silverbill) ভারতীয় উপমহাদেশেই দেখা যায়। এরা পানি ও ঘাসের মাঠ এলাকায় থাকতে পছন্দ করে। বাসাও করে বেশি একাশিয়া গাছে ঘাসের সাহায্যে। তবে মাঝে মধ্যে দখল করে পরিত্যক্ত বাবুই পাখির বাসা। সম্প্রতি ছবিগুলো সাতক্ষীরা পুষ্পকাঠি গ্রামের ঘের এলাকা থেকে তোলা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৬
এএ