ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

লক্ষ চোখে খুঁজে ফিরি তারে

মবিনুল ইসলাম, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৬
লক্ষ চোখে খুঁজে ফিরি তারে

সাতক্ষীরার ভেটখালী ঘাট থেকে সুন্দরবনের দুবলার চর ট্রলারে ১০ ঘণ্টার পথ। তবে বনবিভাগের অনুমতির জন্য শুক্রবার (১১ নভেম্বর) রাতেই ট্রলার নিয়ে কৈখালী ফরেস্ট অফিসে সিরিয়াল দিতে হলো।

দুবলার চর (সুন্দরবন) থেকে: সাতক্ষীরার ভেটখালী ঘাট থেকে সুন্দরবনের দুবলার চর ট্রলারে ১০ ঘণ্টার পথ। তবে বনবিভাগের অনুমতির জন্য শুক্রবার (১১ নভেম্বর) রাতেই ট্রলার নিয়ে কৈখালী ফরেস্ট অফিসে সিরিয়াল দিতে হলো।

কৈখালী ফরেস্ট অফিস ছাড়াও সুন্দরবনের আরও ৭টি পয়েন্ট দিয়ে দুবলার চরে যাতায়াতের রুট নির্ধারণ করেছে বনবিভাগ। যেখান থেকে যাত্রা শুরু হোক না কেন সুন্দরবনের ভেতর জালের মতো ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন লোনাপানির নদী পেরিয়ে যেতে হয় দুবলার চর।

এসব নদীর দু’পাশেই সুন্দরবন। প্রকৃতির অপার সৃষ্টি এ বন। সুন্দরী, গড়ান, কেওড়া, বাইন, গোলপাতাসহ নানান প্রজাতির গাছ গাছড়া নদীর দু’ধারে। এর কোথায় ঘন বন আবার কোথাও অপেক্ষাকৃত ফাঁকা। কোনো কোনো নদীর তীর কক্সবাজারের সমুদ্রের তীর মনে করিয়ে দেয়। আবার কোনো কোনো তীর হাঁটু সমান কাদা।
এবার ৮টি পয়েন্ট দিয়ে কয়েক হাজার ট্রলারে অর্ধ লক্ষাধিক পূণ্যার্থী ও দর্শনার্থী দুবলার চলে আসবেন ধারণা করছেন মেলা সংশ্লিষ্টরা। আর অর্ধ লক্ষাধিক পূণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের লক্ষাধিক চোখ পলকহীন চেয়ে থাকে নদীর দু’ধারে সুন্দরবনের দিকে।

মেলার দর্শনার্থী আব্দুল জলিল জানান, বাঘ, হরিণ চিড়িয়াখানায় আমরা বহু দেখেছি। কিন্তু সুন্দরবনের খোলা পরিবেশে তাদের দেখতে অনেক সুন্দর লাগে। আর তাই লক্ষাধিক চোখে খুঁজে ফিরি তাদের।  

দোবেকী ফরেস্ট অফিস পার হয়ে ট্রলার ছুটে চলেছে দুবলার চরের দিকে। দুপুর গড়িয়ে তখন বিকেল। বিকেলে বাঘ-হরিণ দেখা যেতে পারে এমন আশায় ট্রলারের সামনে পেছনে পূণ্যার্থী-দর্শনার্থীদের ভিড়। কেউ হরিণ দেখলেই চিৎকার করে
অন্যদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন ওই যে, ওই যে হরিণ।

ট্রলারের একঘেয়ে শব্দ ছাপিয়ে তখন ওই যে হরিণ, ওই তো দেখা যায়। আর মানুষের চিৎকারে ভয় পেয়ে বনের ভেতর ঢুকে যায় তারা। ক্ষণিকে দেখায় পরম তৃপ্তি। কেউ দেখে তৃপ্ত আর যারা দেখতে পায়নি তারা শুনে তৃপ্ত। পরেরটি
দেখা যাবে এমন আশায় বুক বেঁধে থাকা। ১০ ঘণ্টা যাত্রা পথে বেশ কয়েকটি হরিণ দেখা গেলেও বাঘ মামার দেখা পাওয়া গেল না। তবে দূর-বহুদূর থেকে কিছু নড়াচড়া চোখে পড়লেই চিৎকার, হয়তো ওটা বাঘ হলেও হতে পারে।

আর বাঘের দেখা পাওয়া না গেলেও কিছু হরিণ, বানর, বক আর নানান প্রজাতির পাখি দেখতে পেয়ে তৃপ্ত মেলায় আগত পূণ্যার্থী- দর্শনার্থীরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৬
এমআই/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।