ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

বেড়েছে ডোল-কুলার কদর

রফিকুল আলম, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৬
বেড়েছে ডোল-কুলার কদর ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ধান কাটা মাড়াই চলছে পুরোদমে। একই সঙ্গে প্রস্তুতি চলছে ধান সংরক্ষণের।

ধুনট (বগুড়া): ধান কাটা মাড়াই চলছে পুরোদমে। একই সঙ্গে প্রস্তুতি চলছে ধান সংরক্ষণের।

 

ক্ষেতের ধান কেটে আঙ্গিনায় তোলার পর ব্যস্ততা বেড়েছে কৃষাণীদের। ধান মাড়াই, সিদ্ধ, শুকানো, ধূলাবালু ও ময়লা পরিষ্কারসহ ধাপে ধাপে কাজ করছেন নারীরা।

 

তবে, এসব কাজের পর ধান ঘরে তুলতে প্রয়োজন ডোল (গোলা)। ধানের ময়লা পরিষ্কার করতে প্রয়োজন হয় কুলা। তাই কদর বেড়েছে ডোল-কুলার।

বগুড়ার ধুনট উপজেলা সদর, মথুরাপুর, গোসাইবাড়ি, এলাঙ্গী, সোনাহাটা, সোনামুখিসহ বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে কৃষক ও ডোল তৈরির কারিগরদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্যই পাওয়া গেল।

স্থানীয়রা জানান, ঘরে ধান সংরক্ষণের জন্য গৃহস্থ্যের পছন্দ বাঁশের তৈরি ডোল। এই ডোল তৈরির প্রধান উপকরণ বাঁশ। প্রায় চার-পাঁচ ফুট উঁচু ডোলের ওপরে গোলাকার এবং নীচের অংশ চারকোণাকৃতি। প্রচীনকাল থেকে ধান সংরক্ষণের জন্য ডোল ব্যবহার করে আসছেন কৃষকেরা। প্রযুক্তির ছোঁয়ায় অনেক কিছুর পরিবর্তন হলেও আজও রয়েছে ডোলের কদর।

এদিকে, নভেম্বরের শুরুতে আমন ধান কাটতে শুরু করেন কৃষকেরা। তাই সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসেই ডোল তৈরি শুরু করেন কারিগররা। আর ধান কাটা ও মাড়াইয়ের শুরুতেই তাদের তৈরি ডোল বিক্রির জন্য হাট-বাজারে নিয়ে আসছেন। এ উপজেলার এলাঙ্গী, নলডাঙ্গা, পাকুড়িহাটা, কান্দুনিয়া, বাঁশহাটা, কান্তনগর, রুদ্রবাড়িয়া, ধেরুয়াহাটিসহ ১১টি গ্রামে কমবেশি বাঁশের পণ্য তৈরির কারিগর রয়েছেন।

নলডাঙ্গা গ্রামের বাঁশ শিল্পের কারিগর ইসমাইল হোসেন বাংলানিউজকে জানান, একটি বাঁশের দাম ১০০-১২০ টাকা। এ রকম দু’টি বাঁশ দিয়ে তিনটি ডোল তৈরি করেন তিনি। দিনে একজন দু’টি ডোল তৈরি করতে পারেন। প্রতিটি ডোলের ধারণ ক্ষমতা ২০-২২ মণ ধান। এই পরিমাপের একটি ডোলের দাম ৩৮০-৪০০ টাকা। যা মৌসুম ছাড়া বিক্রি হয় ২৫০-৩০০ টাকায়। এখন ভরা মৌসুম, তাই চাহিদার সঙ্গে দামও বেড়ে গেছে। তবে, আকার ভেদে দামের তারতম্য হয়।

পাকুড়িহাটা গ্রামের কারিগর ছামিনুর রহমান জানান, ডোল তৈরি করে হাটে বিক্রি করা একটি মৌসুমী ব্যবসা। প্রতিটি ডোল তৈরির খরচ বাদে প্রায় দ্বিগুণ লাভ হয়। এছাড়া ডোল তৈরির পর বাঁশের কাটা অংশ ফেলে না দিয়ে কুলা ও ঝাটা তৈরি করেন তিনি। প্রতিটি কুলা ও ঝাটা বিক্রি করেন ৫০-৫৫ টাকায়।    

ধুনট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ধান সংরক্ষণের জন্য কৃষকরা দীর্ঘদিন ধরে বাঁশের তৈরি ডোল ব্যবহার করে আসছেন। ডোলে আলকাতরা কিংবা গোবরের প্রলেপ দিলে টেকসই হয়। এছাড়া এর ভেতর নিম পাতা ছড়িয়ে দিলে পোকা-মাকড় ক্ষতি করতে পারে না।

বাংলাদেশ সময়:  ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৬
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।