নর্দমা নয়, খাল
ঢাকা: ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন খালের মধ্যে খিলগাঁও, বাসাবো, মাদারটেক, নন্দীপাড়া, মাণ্ডা এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, তিরতির করে বয়ে চলা খালগুলোর পানির রং কুঁচকুচে কালো। তাতে ফের পলিথিন আর কাগজসহ ময়লার স্তূপ।
এখন আর এগুলোকে খাল না বলাই ভালো। খিলগাঁও-বাসাবোর খালগুলো এখন ময়লার ডাস্টবিন।
যে কেউ দেখলেই মনে হবে এটা একটা বড় স্যুয়ারেজ লাইন অথবা ড্রেন। অথচ এ খালে ৩০-৩৫ বছর আগেও বড় বড় নৌকা-ট্রলার চলতো। ব্যবহার হতো বাণিজ্য রুট হিসেবে। ঠিক এমনটাই বললেন, খালের পাশেই চায়ের দোকান সাজিয়ে বসা মো. বাবুল মিয়া। তিনি ৫০ বছর ধরে এ এলাকায় বসবাস করে আসছেন। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, এ খালে কত পুঁটি মাছ ধরছি, এলাকার সবাই এ খালের পানিতে গোসল থেকে শুরু করে ঘরের সমস্ত ধোয়া-মোছার কাজ করতো। আর এখন এ খালের দিকে তাকালে মনে হয়, এটা একটা ময়লার ভাগাড়। খালগুলো চওড়ায় ১০ ফুটের বেশি নয়। খালের পাশে ঘন বসতি থাকায় সব বাসা-বাড়ির ময়লা আবর্জনা এ খালেই ফেলা হয় এমনকি বেশির ভাগ বাড়ির টয়লেটের লাইন সরাসরি খালের মধ্যেই দেওয়া হয়েছে। তাই দুর্গন্ধে টেকা যায় না। এছাড়া খালের পাশ দিয়ে চলাচল করতে গেলেও অনেকটা অস্বস্তির মধ্যে পড়তে হয়। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে কিছু দিন আগে নন্দীপাড়া খালে উচ্ছেদ অভিযান চালানোর পর খালের মধ্যেই ফেলে রাখা হয় অবশিষ্ট কংক্রিটের অংশ। এর কারণে খালটির এক অংশ সম্পূর্ণ ভরে গেছে।
এখানে দেখা যায়, খালের পাশেই ডাস্টবিন থাকায় সিটি করপোরেশনের লোক খালের পাশেই ময়লা ফেলছে। সেই ময়লা খালেই পড়ছে, এভাবেই দিনে দিনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে রাজধানীর বিভিন্ন খাল। এই খালের নাম মাণ্ডা-জিরানী খাল,চারটি খাল এসে জোড়া লাগে এই জিরানী খালে। মাণ্ডা এলাকায় এই খালের অবদান অনেক বলে জানান এই এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা মোস্তফা। তিনি মুত্তিযুদ্ধের পর থেকেই মাণ্ডা এলাকায় বসবাস করেছেন।
এই খালটি জিরানী খালের একটি অংশ। দীর্ঘদিন অবহেলায় পড়ে থাকার কারণে দেখে মনে হচ্ছে যেন ধান চাষ করা হচ্ছে। পাশাপাশি খালে পানি আছে কি নেই তা বোঝা মুশকিল। এমন অবস্থা চলতে থাকলে ঢাকার মানচিত্র থেকে খালগুলো হারিয়ে যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, মে ০৯, ২০১৭
এএটি/জেডএম
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।