ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

প্রযুক্তিবিশ্বের সফলতম ১১ উদ্যোক্তা

ফিচার ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৭
প্রযুক্তিবিশ্বের সফলতম ১১ উদ্যোক্তা প্রযুক্তিবিশ্বের সফলতম ১১ উদ্যোক্তা

ঢাকা: বিশ্বে এখন চলছে প্রযুক্তির স্বর্ণযুগ। বর্তমান বিশ্বে প্রযুক্তির অগ্রগতি সাধিত হচ্ছে প্রচণ্ড গতিতে। আগে নতুন প্রযুক্তির দেখা মিলত বহু বছর পরপর। আর এখন  নতুন নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন হচ্ছে অনেক ঘনঘন।

বর্তমান যুগে যারা মানবসভ্যতাকে উপহার দিতে পেরেছেন যুগোপযোগী, উন্নত ও কল্যাণমূলক প্রযুক্তি, তারাই আরোহণ করেছেন সফলতার শীর্ষ আসনে। জেনে নেয়া যাক প্রযুক্তিবিশ্বের সফলতম দশ উদ্যোক্তা সম্পর্কে।

এলন মাস্ক

১১। এলন মাস্ক
দক্ষিণ আফ্রিকান বংশোদ্ভূত প্রকৌশলী ও উদ্ভাবক এলন মাস্ক স্বপ্ন দেখেন মঙ্গলগ্রহে মানুষের বসতি স্থাপনের। এ উদ্দেশ্যে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন মহাকাশ সংস্থা ‘স্পেস এক্স’। তিনি চান পেট্রলের বিকল্প জ্বালানি ব্যবহারের মাধ্যমে বৈশ্বিক উষ্ণতা প্রতিহত করতে। এ উদ্দেশ্যে তিনি বাজারে এনেছেন বিদ্যুৎ-চালিত স্বনিয়ন্ত্রিত গাড়ি। যুক্তরাষ্ট্রের নেভাদায় তিন হাজার একর জমির উপর নির্মাণ করা হচ্ছে সুবিশাল গিগা ফ্যাক্টরি। সৌরশক্তিকে কাজে লাগিয়ে লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি সেল তৈরি হবে এ ফ্যাক্টরিতে। ২০১৬ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিনের বিবেচনায় বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের তালিকায় এলন মাস্কের অবস্থান ছিল ২১ নম্বরে। মাস্কের সব উদ্ভাবন ও পরিকল্পনা যেন পৃথিবীকে আমূল বদলে দিতে এবং মহাবিশ্বকে মানুষের হাতের মুঠোয় এনে দিতে।

 

১০। মাসাইয়োসি সন

কোরিয়ান বংশোদ্ভূত মাসাইয়োসি সনের জন্ম জাপানে। তিনি জাপানভিত্তিক বহুজাতিক টেলিকমিউনিকেশন প্রতিষ্ঠান সফট ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী। ২০০০ সালের দিকে পুঁজিবাজারে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর ধ্স নামলে মাসাইয়োসি তার প্রায় সব সম্পত্তি হারাতে বসেছিলেন। কিন্তু তিনি সে ধাক্কা ভালোভাবেই সামাল দিয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি জাপানের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ধনী এবং কোরিয়া-জাপানের তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব।

মাইকেল ডেল

৯। মাইকেল ডেল

মাইকেল ডেল হচ্ছেন ডেল টেকনোলোজির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী। অনেক অল্প বয়সেই তিনি ছিলেন তুখোড় ব্যবসায়ী মানসিকতা সম্পন্ন। ১৯৯২ সালে মাত্র ২৭ বছর বয়সে ফোর্বসের সেরা ৫০০ প্রতিষ্ঠানের সর্বকনিষ্ঠ প্রধান নির্বাহীর গৌরব অর্জন করেন। বর্তমানে ডেল বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি।

মা হুয়াটেং

৮। মা হুয়াটেং

ইন্টারনেট কোম্পানি টেনসেন্টের প্রতিষ্ঠাতা পনি মা হুয়াটেং। চীনের জনপ্রিয় অ্যাপ্লিকেশন উইচ্যাট বাজারে আনে টেনসেন্ট কোম্পানি। ২০১১ সালে লঞ্চ করার পর বর্তমানে প্রায় ৯৩ কোটি ব্যবহারকারী নিয়ে বৃহত্তম অবস্থানে রয়েছে উইচ্যাট। ফোনে উইচ্যাট পেমেন্ট অপশন থাকলে এ অ্যাপ্লিকেশন দিয়ে বিল প্রদান, পণ্য অর্ডার, অর্থ লেনদেন এবং দোকানে বিল প্রদানসহ অনেক ধরনের সেবা গ্রহণের সুযোগ রয়েছে।

জ্যাক মা

৭। জ্যাক মা

চীনা ধনকুবের জ্যাক মার আসল নাম মা ইয়ুন। একটি অনুষ্ঠানে জ্যাক মা বলেছিলেন, একজন তরুণ ব্যবসায়ীর যেসব গুণ থাকা দরকার সেগুলোর কোনোটাই তার ছিল না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় গণিতে তিনি পেয়েছিলেন মাত্র এক। তিনবার চেষ্টায় এক অখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। সেই জ্যাক মা’ই বর্তমানে চীনের শীর্ষ ধনী।

  সের্গেই ব্রিন

৬। সের্গেই ব্রিন

সের্গেই ব্রিন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত সার্চ ইঞ্জিন গুগলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৯৬ সালে গবেষণা প্রকল্প হিসেবে দুজন পিএইচডি কোর্সের ছাত্র ল্যারি পেজ ও সের্গেই ব্রিন ওয়েব সার্চ ইঞ্জিন নির্মাণের কাজ শুরু করেন। এ প্রচেষ্টারই ফসল গুগল। গুগল এখন শুধু সার্চ ইঞ্জিনই নয়। কোম্পানিটি একের পর এক যুক্ত করেছে নানারকম সেবা। যেমন জিমেইল, গুগল ডকস, গুগল প্লাস, গুগল ক্রোম, পিকাসা, গুগল টক, মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম অ্যান্ড্রয়েডসহ আরও অনেক কিছু।

ল্যারি পেজ

৫। ল্যারি পেজ

লরেন্স এডওয়ার্ড পেজ গুগলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সের্গেই ব্রিনের বন্ধু। তিনি গুগলের প্যারেন্ট কোম্পানি আলফাবেটের প্রধান নির্বাহী ও বর্তমানে প্রযুক্তিবিশ্বের সেরা পাঁচ উদ্যোক্তার একজন। বিভিন্ন মানবিক ও কল্যাণমূলক উদ্যোগে তাকে দেখা যায় পুরোভাগে। আফ্রিকার ইবোলা আক্রান্ত দেশগুলোতে ১ কোটি ৫০ লক্ষ ডলার দান করেছিলেন ল্যারি।

ল্যারি এলিসন
৪। ল্যারি এলিসন

ল্যারি এলিসন ওরাকল কর্পোরেশনের অন্যতম সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী। বেপোরোয়া জীবনযাপনের জন্য বিশ্বের সবাই তাকে এক নামে চেনে। ল্যারি একজন প্রশিক্ষিত পাইলট। পাল-তোলা নৌকার রেস খেলতে খুব পছন্দ করেন। হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের লানা-১ নামের একটি দ্বীপের মালিক তিনি। বড় বড় প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তাদের মতো ল্যারি এলিসনও তার বার্ষিক বেতন এক মিলিয়ন ডলার থেকে এক ডলারে নামিয়ে আনেন। দানবীর হিসেবেও সুনাম আছে তার।

মার্ক জুকারবার্গ

৩। মার্ক জুকারবার্গ

বহুল ব্যবহৃত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গ। মাত্র ১২ বছর বয়সে তিনি প্রোগ্রামিং শুরু করেন। তিনি সর্বপ্রথম একটি ম্যাসেজিং প্রোগ্রাম তৈরি করেন, যা জুকারবার্গের বাবা তার ডেন্টাল অফিসে ব্যবহার করতেন। ফেসবুক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে খুব অল্প বয়সে বিলিয়নিয়ারে পরিণত হয়েছেন তিনি। সময় বাঁচাতে প্রতিদিন একই রকম ধূসর টি-শার্ট ও নীল জিন্স পড়েন। বিভিন্ন সেবামূলক কাজেও তাকে অংশ নিতে দেখা যায়।

বিল গেটস

২। বিল গেটস

মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসের নাম সবাই কম-বেশি শুনেছেন। পৃথিবী বদলে দেওয়া মানুষদের মধ্যে একজন তিনি। ঘরে ঘরে কম্পিউটার পৌঁছে যাওয়া মূলত মাইক্রোসফট অপারেটিং সিস্টেমের কারণেই হয়েছে। বিল গেটসের জীবন কেটেছে নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া শেষ না করেই মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠা করা, বিশ্বের সেরা ধনী ব্যক্তির আসনে ওঠা এবং দানশীল হিসেবে খ্যাতিমান হওয়া বুঝিবা তাকেই মানায়! 

জেফ বেজোস

১। জেফ বেজোস

জেফ বেজোস অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও, বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি। প্রাথমিক জীবনে তিনি একটি টেলিকম কোম্পানিতে চাকরি করতেন। অ্যামাজনের প্রথম অফিসটি ছিল জেফের নিজ বাড়ির গ্যারেজে। তার নেতৃত্বে অ্যামাজন.কম ইন্টারনেটের বৃহত্তম খুচরা বিক্রেতায় পরিণত হয়। ২০১৩ সালে তিনি দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট ক্রয় করেন। ‘ব্লু অরিজিন’ নামের একটি মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠানেরও মালিক তিনি।  

বাংলাদেশ সময়: ০৫৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৭
এনএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।