মিরপুর সনি হলের ঠিক সামনের জায়গাটা খুব নিরবেই যেনো আনন্দ করছে। রেস্টুরেন্টগুলো বেশ ফাঁকা।
একটা দোকানের সামনে বেশ জ্বলজ্বল করে জ্বলছে ‘২০১৮’ লেখাটা। গতকালও এটা ছিলো না। দেখতে দেখতে কেমন শেষ হয়ে গেল বছরটা!
সনি হলের বিপরীতে ব্যাংকের যে এটিএম বুথটা, তার গার্ডও মোবাইলে গেম খেলছেন বসে বসে। আশে পাশে নিরাপত্তাকর্মীর অভাব না থাকায় বেশ রিলাক্সেই আছেন তিনি। নিজের নাম ও কোম্পানির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গার্ড বললেন, ‘এইরাতে একটু আনন্দ করতে চাই আমরা সবাই। কিন্তু এতে কার নিরাপত্তা নষ্ট হয় সেইটা বুঝিনা!’ তার সহজ হিসেবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভালো থাকলে একটা রাত আনন্দ করার মধ্যে কোনো দোষ দেখেননা তিনি।
এটিএম মেশিনে ভুল বাটন চাপায় প্রথম চেষ্টায় টাকা তুলতে ব্যর্থ হতে হলো। দ্বিতীয় চেষ্টায় সফল হয়ে এতো রাতেও পকেটে টাকা নিয়ে নিজেকে অনিরাপদ বোধ হল না। কেন জানিনা শহরের আকাশটাও এখন বেশ অন্য রকম। সেখানে ভাসছে চার-পাঁচটা লণ্ঠন। সংখ্যাটা বেশি না, তবে দৃশ্যটা সিনেমার থেকেও আকর্ষণীয়। থার্টিফাস্ট নাইটে পটকার আওয়াজ এবারে খুব কম বললেই চলে।
পথ এগোতেই দূরে এক সিগারেট বিক্রেতার দেখা পেলাম। প্রতিদিন তিনি অনেক আগেই বাড়ি চলে যান। আজকে এখনও তার বেচাকেনা চলছে।
সিগারেট বিক্রেতা আলম জানালেন, আজকে তার সিগারেটের সব মজুদ প্রায় শেষ। একটু পরই বাড়ি ফেরবেন। আরও সিগারেট মজুত থাকলে গোটা রাতই সিগারেট বেচে পার করে দিতেন।
বেচা-বিক্রি ভাল হওয়ায় বেশ খুশি আলম। আমার নিজেরও কেমন যেনো এ পৌষের হিমেল হাওয়াটা বেশ ভালো লাগছে। প্রায় এক ঘণ্টা ভেবেও একটা লেখার শিরোনাম ঠিক করতে পারছিলাম না, মাথার ভেতর সেটা এসে গেছে।
ভাণ্ডারের শেষ মজুতটা শেষ করে আলম হাসিমুখে পা বাড়ালো বাড়ির উদ্দেশ্যে। পা বাড়ালাম আমিও, একটা নতুন বছরে।
বাংলাদেশ সময়: ০৫০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০১৮
এনএইচটি/এইচএমএস/ওএইচ