শেষ পর্যন্ত অনেক দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগে সাহস করে মুখে নিয়েই চোখ বন্ধ করলেন। না ভুল করেননি তিনি!
গত কয়েক মাস ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভারতের গুজরাটের একটি দোকানের ‘আগুন পানের’ ভিডিও ভাইরাল হচ্ছিলো।
বিরিয়ানি, খিচুড়ি, কাবাব, বোরহানি ও বাকরখানি প্রভৃতি খাবারের জন্য বেশ জনপ্রিয় পুরান ঢাকা। সেখানকার অধিবাসীরাও খেতে এবং খাওয়াতে পছন্দ করেন, এটা সবার জানা। ঢাকার ভোজনরসিকরা এখনও ভূরিভোজ করতে যান পুরান ঢাকায়। আর ভূরিভোজের পর একটা পান মুখে পুরে নিলে কিন্তু বেশ হয়।
সে শখ মেটাতেই পসরা সাজিয়ে বসেছেন আবদুল জলিল। বাহারি রকমের পান ও কয়েকশ মসলার বাহার দেখা যাবে তার দোকানে উঁকি দিলে। মসলা হিসেবে তিনি শাহি মসলা, মধু, খেজুর, মিছরি ইত্যাদি ব্যবহার করেন। দোকানটি আকারে বেশ ছোট। কিন্তু ক্রেতাদের ভিড় চোখে পড়ার মতো। তবে তার দোকানের উল্লেখযোগ্য জিনিস ‘আগুন পান’!
নানাবিধ রঙিন মসলা দিয়ে সাজিয়ে পানে আগুন ধরিয়ে দেন তিনি। আর সেটিই ক্রেতার মুখে পরম যত্নে তুলে দেন। না, এখানে ভয়ের কিছু নেই। মুখের ভেতর ঢোকার পর অক্সিজেন স্বল্পতার কারলে আগুন নিভে যায়। তাই নিশ্চিন্তে এ পানের স্বাদ উপভোগ করতে সমস্যা নেই।
নাম ও ধরন হিসেবে দাম কিন্তু খুব বেশি নয়। ৪০ টাকায় একেকটি আগুন পান পেতে পারেন আপনি। শুধু আগুন পানই নয়, তার কাছে আরো রয়েছে শাহী পান, বেনারশী পান, বউ জামাই পান প্রভৃতি। এগুলো একেকটির দাম রকমভেদে ১৫ থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত।
এবার নিশ্চয়ই চেখে দেখতে ইচ্ছা হচ্ছে। খুব সহজেই পেয়ে যাবেন এ ছোট্ট দোকানটি। পুরান ঢাকার নাজিরাবাজার মোড়ে হাজির বিরিয়ানির একটু সামনে, বিসমিল্লাহ কাবাব ঘরের উলটো দিকে অবস্থিত আবদুল জলিলের পানের পসরা।
আলাপচারিতায় দোকানের মালিক আবদুল জলিল জানান, দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে এ ব্যবসা চালাচ্ছেন তিনি। বাপ-দাদার এ পেশা নিয়ে দারুণ গর্ব তার। ভারতে গিয়ে আগুন পানের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হন তিনি। শিখেও ফেলেন কৌশল। ঢাকায় এসেই বছরখানেক আগে তৈরি শুরু করেন আগুন পান। নিজে যতটা না আশা করেছিলেন, তার থেকেও বেশি সাড়া পাচ্ছেন তিনি।
যুবসমাজের পানের প্রতি, বিশেষ করে আগুন পানের প্রতি ভালোবাসা দেখে তিনি মুগ্ধ। ধীরে ধীরে এটি বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে দিতে চান আবদুল জলিল।
দেরি না করে আজই চেখে দেখুন আগুন পান। আর তৃপ্তির ঢেকুর তুলুন!
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০১৮
এএ