ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

শিল্পকলায় পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘অন্যরকম চিত্রা’

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৪৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০১৯
শিল্পকলায় পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘অন্যরকম চিত্রা’ .

ঢাকা: চীনা সাংস্কৃতিক মাস উপলক্ষে ঢাকার শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হয়ে গেল চীনের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ‘চিত্রা’। 

এ নাটকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাটকের ভাষা, কাঠামো, চরিত্র বিভাজন-দেহ সঞ্চালন-জীবন সংযোগে চিরায়ত রীতি ভেঙ্গে নতুন নাট্যধারায় যেন নিরীক্ষা করেছেন চীনের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হৌ ইং চুয়ে।

রোববার (২৮ জুলাই) বিকেলে মঞ্চস্থ এ নাটকে ‘রক্তকরবী’ ও ‘তাসের দেশ’র হৌ ইং চুয়ে তার নতুন নাটক ‘চিত্রা’-তেও বজায় রেখেছেন সেই ধারা।

 

১৮৯২ সালে রবীন্দ্রনাথ তাঁর 'চিত্রাঙ্গদা' নাটক প্রকাশ করেন। এই নাটকের বিষষবস্তু মহাকাব্য 'মহাভারত' থেকে নেওয়া হয়। নাটকে বীর অর্জুন ও চিত্রাঙ্গদার প্রেমের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের সেই নাটক অবলম্বনেই নির্মিত হয়েছে পিকিংয়ের ‘চিত্রা’।

নাটক নিয়ে অধ্যাপক হৌ ইং চুয়ে জানান, মহাভারতের ‘চিত্রাঙ্গদা’ ও কবির নাটকের ‘চিত্রাঙ্গদা’র মধ্যে অমিল আছে। তিনি বলেন, 'মহাভারতের 'চিত্রাঙ্গদা' ছিলেন একজন অপরূপ ও লাবণ্যময়ী মেয়ে। আর রবীন্দ্রনাথের নাটকে ‘চিত্রাঙ্গদা’র নেই ফুলের মতো সুন্দর মুখ আর অপূর্ব চেহারা।

তিনি মেয়েদের লাবণ্য বুঝেন না; ভয় কী, তাও তিনি জানেন না। তিনি সুন্দর সুন্দর পোশাক ও গায় দেন না। সারা দিন তিনি শুধু তীর-ধনুক নিয়ে থাকেন। মহাভারতের ‘চিত্রাঙ্গদা’র সঙ্গে এ চিত্রাঙ্গদার অনেক পার্থক্য' বলেন তিনি।

নাটকের ভাষা, দেহ সঞ্চালন ও মঞ্চ প্রদর্শনের উপাদানে ‘চিত্রাঙ্গদা’ নাটকে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘নিজস্ব কবিত্ব’ প্রকাশ পেয়েছে বলেও মনে করেন হৌ ইং চুয়ে।  

নাট্য কাঠামোর ক্ষেত্রের রবীন্দ্রনাথের ‘চিত্রাঙ্গদা’-র নাটকের বহু অধ্যায়কে সংযোজন করে গোটা নাটকের ছন্দকে ‘ঘনীভূত’ করেছেন অধ্যাপক হৌ ইং চুয়ে। চরিত্র নির্ধারণের ক্ষেত্রে দুজন অভিনেতাকে নিয়ে একটি চরিত্র নির্মাণ করেছেন তিনি।

"রবীন্দ্রনাথের নাটক সৃষ্টির ক্ষেত্রে এটাই আমার চিরাচরিত বৈশিষ্ট্য ও রীতি। ‘রক্তকরবী’, ‘তাসের দেশ’ থেকে ‘চিত্রা’ নাটক সৃষ্টির ক্ষেত্রে আমি কমবেশি এই পদ্ধতি ব্যবহার করেছি। এই পদ্ধতিতে চরিত্রগুলোর বিভাজন, বহুমুখিতা ও বাস্তবতা প্রকাশ পায়। "

নাটকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্ব ছিল লম্বা সাদা কাপড়। নাটকের চরিত্রগুলোর বাস্তবতা সংযোগে এটি ভূমিকা পালন করছে বলে জানান এই চীনা নির্দেশক।

‘চিত্রা’ নাটকটি বাংলা থেকে চীনা ভাষায় অনুবাদ করেছেন পাই থাই ইউয়ান। নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন লু চিয়া হুয়া, চিয়াং চাও লে, লাই হাই ফোং, লি লিন খুন ও লিউ চিংই।

পাই থাই ইউয়ান বলেন, 'বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংস্কৃতি বাংলাদেশের সংস্কৃতি। আমাদের লক্ষ্য অভিনয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। চীনের সংস্কৃতির উপাদানের সঙ্গে বাংলা সংস্কৃতির সমন্বয় করে দুই দেশের সংস্কৃতির ভবিষ্যৎ বিকাশকে আমরা দৃশ্যমান করতে চাই। '

নাটকটি দেখতে এসেছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, সংস্কৃতি সচিব আবু হেনা মোস্তফা কামাল ও শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীসহ বিভিন্নজন।

বাংলাদেশ সময়: ০১৩৮ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০১৯
এইচএমএস/এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।