সুন্দরবন থেকে ফিরে: প্রকৃতির অপরূপ রূপে সেজে রয়েছে সুন্দরবন। অপরূপ রূপের লীলায় সুন্দরবন মুগ্ধ করছে পর্যটকদের।
দুবলার চরে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্ত দর্শনের জন্য পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় স্থান। অনুরূপভাবে হিরণ পয়েন্ট, কটকা, কটিখালীও।
কটকার জামতলা পর্যবেক্ষণ টাওয়ার থেকে কচিখালী সমুদ্র সৈকত হয়ে বন বিভাগের কচিখালী স্টেশন পর্যন্ত হাঁটা পথ। এছাড়া কটকাতে ৪০ ফুট উচ্চ একটি টাওয়ার আছে যেখান থেকে সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। একটি সুন্দর সমুদ্র সৈকত আছে সেখানে। পর্যবেক্ষণ টাওয়ার থেকে ফেরার সময় হেঁটে বিচের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। মান্দারবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত সুন্দরবন ও উত্তাল বঙ্গোপসাগরের যেন এক রূপসী সাগর কন্যা। হিরণ পয়েন্টে গিয়ে কাঠের তৈরি ওয়াকওয়ে ধরে বনের মধ্যে হাঁটতে হাঁটতে বানর, হরিণ, গুইসাপ অথবা কুমিরের ঘুরে বেড়ানোর দৃশ্য দেখা যাবে। দুবলার চর সুন্দরবনের অন্তর্গত একটি ছোট্ট চর। এ চরের মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে ছোট ছোট নদী। সেসব নদী মিশেছে বঙ্গোপসাগরে।
এসব স্থানে বিকেল হলেই পর্যটকদের চোখ চলে যায় পশ্চিম আকাশে। একটু একটু করে সাগরের বুকে হেলে পড়ে সূর্য। সাগরের বুকে যতই হেলে পড়ছে সূর্য, ততই আবিররঙা হয়ে উঠে আকাশ ও চারপাশ। সূর্যের আলো পানিতে পড়ে তৈরি হয় নানা বর্ণ। সে মনোলোভা দৃশ্য সত্যিই অপার্থিব! নিরবে সৈকতে আছড়ে পড়া ঢেউয়ে পা ভিজিয়ে দর্শনার্থীরা সূর্যাস্ত উপভোগ করেন। অনুরূপভাবে ভোরের সূর্যোদয়ের নৈসর্গিক সৌন্দর্যও বিমহিত করে সবাইকে।
সৈকতে দাঁড়িয়ে বছরের শেষ সূর্যাস্ত ও নতুন বছরের প্রথম সূর্যোদয় দৃশ্য দেখতে বিপুল পরিমাণ পর্যটক প্রতিবছরই আসেন সুন্দরবনের গহীনে।
পৃথিবীর বৃহত্তম বন জীববৈচিত্র্যের আধার সুন্দরবন হচ্ছে দেশের মোট বনাঞ্চলের অর্ধেকেরও বেশি। সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশের আয়তন হচ্ছে ছয় হাজার ১৭ বর্গ কিলোমিটার। সুন্দরবনের গহীনের সমুদ্রসৈকত থেকে দেখা যায় সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয়। সুন্দরবন রাত-দিন ২৪ ঘণ্টায় ছয় বার তার রূপ বদলায়। গহীনে দুই-একদিন না থাকলে এ মনোরম দৃশ্য দেখা যাবে না।
সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দর্শনের মনোরম দৃশ্যে বিমোহিত হয়ে অনেকেই কবিতা ও গান লিখেছেন। কবি রুদ্রের ভাষায়, ‘তোমায় নিয়ে একদিন সূর্যাস্ত দেখতে যাবো/দেখতে যাবো সমুদ্রের বিশালতা/হাতে হাত রেখে দেখব সূর্য আর সমুদ্রের ডুবে যাওয়া প্রেম। ’
বাংলাদেশ সময়: ১০৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০২০
এমআরএম/আরবি