কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ায় পাকিস্তানি হানাদারমুক্ত দিবস আজ। ১৯৭১ সালের এই দিনে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলাকে হানাদারমুক্ত করে বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর সকালে কুমারখালীর কুন্ডুপাড়ায় হানাদার বাহিনীর ক্যাম্পে আক্রমণ করে বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
সে সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা তোসাদ্দেক হোসেন ও ননী মিয়া শহীদ হন। হানাদার বাহিনীর সঙ্গে এ যুদ্ধের খবর জেলা শহর কুষ্টিয়ায় অবস্থানরত পাক-সেনাদের কাছে চলে যায়। পরে পাক-সেনারা অস্ত্র ও বিপুল গোলাবারুদ নিয়ে কুমারখালীতে পৌঁছায় এবং ব্রাস ফায়ারের করে শহরে সৃষ্টি করে আতঙ্ক। বীর মুক্তিযোদ্ধারা সংখ্যায় কম এবং পর্যাপ্ত অস্ত্র না থাকায় তারা স্থান ত্যাগ করেন।
পাকিস্থানি বাহিনী ও রাজাকাররা কুমারখালী শহর নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে হত্যাযজ্ঞ ও শহরের বিভিন্ন এলাকায় অগ্নিসংযোগ ও লুট শুরু করে। তাদের হত্যাযজ্ঞের শিকার হন সামসুজ্জামান স্বপন, সাইফুদ্দিন বিশ্বাস, আব্দুল আজিজ মোল্লা, শাহাদত আলি, কাঞ্চন কুন্ডু, আবু বক্কার সিদ্দিক, আহমেদ আলি বিশ্বাস, আব্দুল গণি খাঁ, সামসুদ্দিন খাঁ, আব্দুল মজিদ ও আশুতোষ বিশ্বাস মঙ্গল।
এরপর ৯ ডিসেম্বর সকালে পুনরায় বীর মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদেরকে সংগঠিত করে শহরের চারপাশ ঘিরে হানাদার বাহিনীর ক্যাম্পে (বর্তমানে কুমারখালী উপজেলা পরিষদ) আক্রমণ চালায়। দীর্ঘসময় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও হানাদার বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধের পর পাকিস্তানি বাহিনী টিকতে না পেরে পালিয়ে কুষ্টিয়ার পথে রওনা হয়। পরে পাকিস্তানি বাহিনীর বহনকারী ট্রেন চড়াইকোল হাতিসাঁকো এলাকায় এলে বিস্ফোরক দিয়ে রেললাইন উড়িয়ে দেওয়া হয়। ফলে ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে যায়। এরপর পাকিস্তানি বাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। শহর হয় হানাদারমুক্ত। রাস্তায় নেমে আনন্দ মিছিল করে সর্বস্তরের জনতা এবং বীর মুক্তিযোদ্ধারা। সেদিন থেকেই কুমারখালী হানাদারমুক্ত দিবস পালন করা হয় ৯ ডিসেম্বর।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০২১
এসআই