ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

নিস্তব্ধতা ভেঙে পরিপূর্ণ রফিক উদ্দিন ভূইয়া স্টেডিয়াম

এম.আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২১ ঘণ্টা, আগস্ট ৫, ২০১৬
নিস্তব্ধতা ভেঙে পরিপূর্ণ রফিক উদ্দিন ভূইয়া স্টেডিয়াম ছবি: অনিক খান

রফিক উদ্দিন ভূইয়া স্টেডিয়াম থেকে: ৯০ মিনিটের খেলা। গোটা স্টেডিয়াম কানায় কানায় ভরা।

সেখানে উপচে পড়েছে দর্শক। সবার মাঝেই বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। ১৫ হাজার ধারণক্ষমতার রফিক উদ্দিন ভূইয়া স্টেডিয়াম যেন তীব্র উত্তেজনায় কাঁপছে। গালে কিংবা হাতে উল্কি এঁকে সব বয়সের ক্রীড়াপ্রেমীরা মেতেছেন ফুটবলের আমেজে।

কোনো দলকে সমর্থনের প্রশ্ন এখানে বড় নয়। ফুটবলের জাগরণের সময়ে ফুটবলের জন্যই যেন একাত্ম সবাই। কিশোরদের হাতে সেই ভুভুজেলার কান ঝালাপালা আওয়াজ। কিন্তু কারো মুখে নেই বিরক্তির ছাপ। প্রাণের আনন্দে উদ্বেল সবাই। গ্যালারি ছাপিয়ে উত্তেজনার ঢেউ আছড়ে পড়েছে যেন মিডিয়া বক্স কিংবা অতিথিদের মাঝেও।

নান্দনিক ফুটবল মহারণে মন্ত্রী-উপমন্ত্রী থেকে শুরু করে অন্য অতিথিরাও যেন উন্মাতাল। দর্শকে ঠাসা এ চিত্রটি ময়মনসিংহের ঐতিহ্যবাহী রফিক উদ্দিন ভূইয়া স্টেডিয়ামের। শুক্রবারের (০৫ আগস্ট) বিকেলে ‘ঠাঁই নাই ঠাঁই নাই ছোট সে তরী’ কবিতার মতোই কানায় কানায় ভরে উঠেছিল এ স্টেডিয়াম।

দেশের ঘরোয়া ফুটবলের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ আসর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) চট্রগ্রাম আবাহনী ও শেখ জামালের মধ্যকার উদ্বোধনী ম্যাচে দর্শকদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতিই প্রমাণ করেছে এ অঞ্চলের মানুষ কতটা ফুটবলপ্রেমী। একই সঙ্গে ময়মনসিংহ পর্বের মধ্যে দিয়ে দেশের ফুটবলের সোনালী অতীতও যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে।

বিপিএল’র ময়মনসিংহ পর্বের উদ্বোধনী ম্যাচে সেই কথাই যেন স্মরণ করিয়ে দিলেন ধর্মমন্ত্রী প্রিন্সিপাল মতিউর রহমান। স্টেডিয়াম ভরা দর্শকদের উদ্দীপনায় বিস্ময়মুগ্ধ মন্ত্রী। আর ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় তো বলেই ফেললেন, ফুটবলের নবজাগরণের সূত্রপাত হয়েছে। ময়মনসিংহবাসী জানিয়ে দিয়েছে ফুটবল তাদের হৃদয়তন্ত্রীতে গাঁথা।

ক্ষণে ক্ষণে রং বদলেছে চট্রগ্রাম আবাহনী ও শেখ জামালের মধ্যকার এ ম্যাচটি। পেনাল্টি বক্সে বল আসতেই তুমুল উত্তেজনায় স্টেডিয়াম কাঁপিয়েছেন ফুটবলপ্রেমী দর্শকরা। খেলা চলাকালীন সময়েই আলাপ হচ্ছিল ময়মনসিংহ জিলা স্কুলের সাবেক শিক্ষক আবুল কাশেমের সঙ্গে। দর্শকদের রোমাঞ্চিত উপস্থিতি সম্পর্কে তিনি জানান, প্রায় এক যুগ আগে নিটল টাটা জাতীয় ফুটবল লিগের পর এতো দর্শক আর কখনো দেখিনি। ময়মনসিংহের পাশাপাশি দেশের ফুটবলকে এগিয়ে নিতে এটি আনন্দের বার্তা। দু’দলই গতিশীল ফুটবল নৈপুণ্য উপহার দিয়েছে।

বিপিএল’র ময়মনসিংহ পর্বের উদ্বোধনী ম্যাচ দেখতে যারা রফিক উদ্দিন ভূইয়া স্টেডিয়ামে ভিড় করেছিলেন সেই দর্শকরাও আন্দোলিত মন নিয়ে ঘরে ফিরেছেন। ক’দিন আগেও এ স্টেডিয়ামে ছিল শশ্মানের নিস্তব্ধতা। সেই নিস্তব্ধতা ভেঙে প্রবল কোলাহলে মুখর হয়ে উঠলো অনেক কৃতি খেলোয়াড়ের জন্ম দেয়া ময়মনসিংহের এ স্টেডিয়াম।

হঠাৎ যেন বদলে গেলো স্টেডিয়ামের রূপ, ফুটবল অন্তঃপ্রাণ মানুষ আবারো স্টেডিয়ামমুখী হওয়ায় আশার আলো দেখছেন চট্রগ্রাম আবাহনী ও শেখ জামালের কোচ। শেখ জামালের কোচ মোশাররফ হোসেন বাদল জানান, ময়মনসিংহের মানুষ সত্যিই ফুটবল অন্তঃপ্রাণ।

মানুষের কলরোলের সঙ্গে সঙ্গে ফুটবলেরও নবজাগরণ হয়েছে। দিনের চেয়ে এখানে রাতে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হলে দর্শকরা আরো বেশি উপভোগ করতে পারতেন। এখানে দ্রুত ফ্লাডলাইটের ব্যবস্থা করা দরকার। ফুটবলপ্রিয় এ অঞ্চলের বাসিন্দাদের জন্য এটি দরকার, মনে করেন অনেকেই।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৯ ঘণ্টা, আগষ্ট ০৫, ২০১৬
এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।