ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

গুরু-শিষ্য সমানে সমান!

এম.আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২১ ঘণ্টা, আগস্ট ৮, ২০১৬
গুরু-শিষ্য সমানে সমান! ছবি: অনিক খান

ময়মনসিংহ থেকে: ৬৯ বছর বয়সী জর্জ কোটান। এক সময় ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের ফুটবল কোচ।

তার হাত ধরেই ২০০৩ সালে সাফ ফুটবলের শিরোপা জয় করেছিল বাংলাদেশ। সেই জর্জ কোটান এখন সামলাচ্ছেন ফুটবলের অন্যতম পরাশক্তি আবাহনী ক্রীড়া চক্রকে।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগের (বিপিএল) এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ চারবার নিজেদের ঘরে শিরোপা তুলেছে দলটি। চলতি লিগেও সবচেয়ে শক্তিশালী দল গড়েছে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী এ ক্লাব।

কিন্তু সোমবার (০৮ আগস্ট) বিকেলে ময়মনসিংহের রফিক উদ্দিন ভূইয়া স্টেডিয়ামে জর্জ কোটানের শিষ্যদের প্রতিপক্ষ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রের সঙ্গে বেশ ক্ষয়িষ্ণু ও ভঙ্গুর শক্তির বলেই মনে হলো ফুটবলপ্রেমীদের চোখে।

কিন্তু কেন, এমন প্রশ্ন যখন সবার মুখে মুখে উচ্চারিত হচ্ছে তখনই ডাগআউটে দাঁড়িয়ে থাকা আব্দুল কাইয়ুম সেন্টুর দিকে দৃষ্টি সবার। এই সেন্টু জর্জ কোটানেরই শিষ্য। ২০০৩ সালে তার অধীনেই খেলেছেন বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলে। ডাগআউটে গুরু-শিষ্য দাঁড়িয়েছিলেন মাত্র কয়েক গজ দূরে।

নিজের তুণে জাতীয় ফুটবল দলের ৮ খেলোয়াড়, আছেন তিন বিদেশি খেলোয়াড়ও সেই তুলনায় সেন্টুকে দুর্বল তো মনে হবেই। কিন্তু এ সেন্টুই সমান লড়াই চালিয়ে গেলেন গুরু জর্জ কোটানের সঙ্গে।

ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলন শেষে বিদায় নেয়ার সময়েও সেন্টু মিডিয়া কর্মীদের বললেন, ‘হি ইজ মাই কোচ। ২০০৩ সালে তার তত্ত্বাবধানে খেলেছি। ’

বিদেশি ও সফল কোচ জর্জ কোটানের অধীনে খেলেও আবাহনী এদিন অপেক্ষাকৃত দুর্বল মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রকে হারাতে পারেনি। এ কৃতিত্বের দাবিদার সেন্টুও, এমন মত অনেক মিডিয়া কর্মীরও।

বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের ৮ খেলোয়াড়ের পাশাপাশি জর্জ কোটানের হাতে রয়েছে লি টাক ও সানডে’র মতো মানসম্মত বিদেশি ফুটবলার। আকাশি-নীল জার্সিধারী দলটি ফেডারেশন কাপেও এ কোচের তত্ত্বাবধানে থেকেই শিরোপা জিতে নেয়।

কিন্তু ময়মনসিংহের রফিক উদ্দিন ভূইয়া স্টেডিয়ামে আবাহনী মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রের সঙ্গে পেরে না উঠায় স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে আসা ফুটবলপ্রেমীদের আলোচনাতেও ছিলেন জর্জ কোটান ও সেন্টু।

এবারের লিগ যে শুধুমাত্র ফুটবলারদের মধ্যেই লড়াই নয়, শিরোপা জিততে কোচরাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন অন্তত গুরু-শিষ্যের এ লড়াইয়ে আরো একবার এটিই প্রমাণিত হলো।

নিজেদের দলকে উজ্জীবিত ও অনুপ্রাণিত করতে গুরু-শিষ্য দু’জনেই নানা কৌশল নিয়েছিলেন। কিন্তু গৌরবময় খেলা ফুটবলে গুরুর সঙ্গে অন্তত এ ম্যাচে দাপটের সঙ্গেই মাথা উঁচু করে মাঠ ছাড়লেন শিষ্য সেন্টু।

এ কারণেই হয়তো সংবাদ সম্মেলনে এসেও সেন্টু বললেন এবং দূরবর্তী একটি ইঙ্গিতও করলেন ঠিক এভাবে-‘আমি ছোট কোচ। কিন্তু জানি এ দীর্ঘ রেইসে কীভাবে দৌড়াতে হয়। ’

চট্টগ্রাম পর্বের পর ময়মনসিংহ পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচ শেষে আবাহনী ও মুক্তিযোদ্ধা পয়েন্ট টেবিলে রয়েছে সমান কাতারে। দু’দলেরই পয়েন্ট ৮।

বাংলাদেশ সময়: ২৩১৬ ঘণ্টা, আগষ্ট ০৮, ২০১৬
এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।