ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

মনের টানে সেই ধারা বিবরণী কক্ষে...

এম.আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩১ ঘণ্টা, আগস্ট ৯, ২০১৬
মনের টানে সেই ধারা বিবরণী কক্ষে... ছবি: অনিক খান

ময়মনসিংহের রফিক উদ্দিন ভূইয়া স্টেডিয়াম থেকে: এখন আর তিনি ধারাভাষ্যকার নন। অথচ এক সময় ঘরোয়া ফুটবলে ধারাভাষ্যকার মানেই পরিচিত একটি নাম ছিল গোলাম হায়দার বাদল।

১৯৯২ সাল থেকে টানা ধারাভাষ্য দিয়েছেন বাংলাদেশ টেলিভিশনে।

কিন্তু এরপর সেই ধারাবাহিকতায় ছন্দপতন ঘটে। সবশেষ ঢাকায় অনুষ্ঠিত নিটল টাটা জাতীয় ফুটবল লিগে ধারাভাষ্য দিয়েছিলেন ময়মনসিংহের এ সন্তান। ২০১২ সালে স্ট্রোক করায় আর ফেরা হয়নি ধারা বিবরণী কক্ষে।

নিজের ঘরের মাঠে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ময়মনসিংহ পর্বের ম্যাচগুলোতে ঠিকই ধারা বিবরণী কক্ষে এসে হাজির হচ্ছেন ষাট বছর বয়সী এ ভাষ্যকার। নিজেকে মোটেও উপেক্ষিত মনে করেন না তিনি। ফুটবলকে হৃদয়ঙ্গম করেন। আর এ কারণেই মনের টানেই ছুটে আসেন ধারা বিবরণী কক্ষে, জানান বাদল।

মঙ্গলবার (০৯ আগস্ট) বিকেলে ঘরোয়া ফুটবলের এক সময়কার পরাশক্তি ব্রাদার্স ইউনিয়ন ও আরামবাগ ক্রীড়া চক্রের মধ্যকার ম্যাচ চলাকালীন সময়ে ধারা বিবরণী কক্ষে বসেই আলাপ হচ্ছিল গোলাম হায়দার বাদলের সঙ্গে।

চলতি লিগের ইংরেজি ধারাভাষ্যকার ময়মনসিংহের ছেলে নুরুল আমিন পরিচয় করিয়ে দিলেন বাদলের সঙ্গে। বলছিলেন, ‘ওনি তো সুপার স্টার। আমাদের বড় ভাই। তার আদর্শেই বড় হয়েছি। ’ অনুজ ধারাভাষ্যকারের মুখে এমন কথা শুনে খানিকটা বিব্রতই মনে হলো বাদলকে।

রাখঢাক না করেই বললেন, ‘আরে, বিষয়টি এমন না। ’ এমন সময় আবারো কথা বলতে শুরু করলেন নুরুল। বললেন, ‘বাদল ভাইয়ের ধারাভাষ্য শুনেই আমরা বড় হয়েছি। বাদল ভাইয়ের একটি ডায়ালগ আমার এখনো মনে আছে। যখন ফুটবল চলাকালীন সময়ে রেফারি গোল নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগতেন তখন বাদল ভাই একটি কথা বলতেন ‘হোয়াট উইল বি সেল বি’ অর্থাৎ ‘যা হবার তাই হবে’।

শারীরিকভাবে এখন অনেকটাই সুস্থ ভাষ্যকার গোলাম হায়দার। থাকেন ময়মনসিংহ নগরীর সানকিপাড়া এলাকায়। ফুটবল আর মাঠকে ভালবেসে অন্য পেশায় যাননি। আগে ছোটখাটো ব্যবসা করতেন। ব্যবসার গচ্ছিত টাকা দিয়েই চলে সংসার, অকপটে বলেন বাদল।

ধারাভাষ্যকারদের পাশের চেয়ারেই বসে থাকেন বাদল। সেখান থেকেই ম্যাচের রং বদলানো দেখেন। তার মনেও হয়তো উঁকি দেয় সোনালী সেই দিনগুলোর কথা। যখন শোনা যেতো-‘আমি গোলাম হায়দার বাদল...। ’

ক্রিকেটের জনপ্রিয়তার সময়ে হারিয়ে যান গোলাম হায়দার বাদলরা। বাংলায় ধারা বিবরণীরও জনপ্রিয়তা কমতে শুরু করে। কিন্তু ঘরের মাটিতে ফুটবলের বড় আসর, নিজেকে আর সংবরণ করে রাখতে পারেননি গোলাম হায়দার।

তিনি জানান, ‘ওরাই আমাকে ডেকে এনেছে। ওদের ধারা বিবরণীর ফাঁকে ফাঁকে ময়মনসিংহের ফুটবল চর্চার গল্প শুনিয়েছি। এইতো জীবন। ’

বাংলাদেশ সময়: ২০৩০ ঘণ্টা, আগষ্ট ০৯, ২০১৬
এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।