ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

বিপিএলে ডিসি’র ঘোষণা, কেতাবে আছে গোয়ালে নেই!

এম.আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০১৬
বিপিএলে ডিসি’র ঘোষণা, কেতাবে আছে গোয়ালে নেই! ছবি: অনিক খান

ময়মনসিংহ: গুণে গুণে প্রায় এক যুগ পর ময়মনসিংহের রফিক উদ্দিন ভূইয়া স্টেডিয়ামে বসেছে দেশের ঘরোয়া ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসর। স্বভাবতই কী উল্লাসই না থাকার কথা ছিল ফুটবলপ্রেমীদের মাঝে।

দর্শকে ঠাসা থাকার কথা ছিল গ্যালারি। কিন্তু উদ্বোধনী ম্যাচ বাদে দর্শকের সেই স্ফুলিঙ্গ একদিনও দেখেনি এ স্টেডিয়াম।  

এমনকি বেশ ঘটা করেই এ আসরের ময়মনসিংহ পর্ব শুরু হবার আগের দিন সংবাদ সম্মেলন ডেকে খেলোয়াড়দের নিরাপত্তার কারণে স্টেডিয়াম সংলগ্ন বাসস্ট্যান্ডটিতে যান চলাচলে ৬ ঘণ্টার নিয়ম-কানুনের কথা বলেছিলেন জেলা প্রশাসক মোস্তাকিম বিল্লাহ ফারুকি।

কিন্তু ঘোষণার প্রায় দু’সপ্তাহ হতে চললেও এ স্ট্যান্ডে বাস চলছে আগের নিয়মেই।

প্রথমদিকে এ স্ট্যান্ডে খেলা চলাকালীন সময়ে বাস আসা-যাওয়ায় কড়াকড়ি থাকলেও এখন সেটিও নেই। ফলে স্থানীয় জনসাধারণ ও মিডিয়াকর্মীদের কাছেও জেলা প্রশাসকের (ডিসি) এ ঘোষণা ‘কাজীর গরু কেতাবে আছে, গোয়ালে নেই’ প্রবাদের মতোই বিবেচিত হচ্ছে।

গত ৫ আগস্ট থেকে এ স্টেডিয়ামে শুরু হয় বিপিএল’র ময়মনসিংহ পর্ব। কিন্তু ঘরোয়া ফুটবলের মর্যাদাপূর্ণ এ আসর শুরু হবার আগেও জেলার বিভিন্ন উপজেলা তো দূরের কথা, খোদ নগরীর বাসিন্দারাও জানতেন না এ খবর। এ নিয়ে প্রচারণার পালে হাওয়া না থাকায় জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারাও জেলা ক্রীড়া সংস্থার দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন।

কিন্তু সংস্থার কর্তা-ব্যক্তিদের গুটিকয়েক মিডিয়া নির্ভরতা এবং উদ্বোধনী ম্যাচে নজিরবিহীন দর্শক উপস্থিতি নিয়ে আত্মতৃপ্তিতে অনেকটাই চাপা পড়ে প্রচারণার বিষয়টি। কিন্তু পরবর্তী ম্যাচে দর্শকশূন্যতা আবারো আলোচনায় নিয়ে আসে কাঙ্খিত প্রচারণার অভাবকেই।

এ স্টেডিয়ামে খেলা শুরু হবার আগেরদিন খোদ জেলা প্রশাসক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি মোস্তাকিম বিল্লাহ ফারুকিও নামমাত্র প্রচারণা নিয়ে স্থানীয় মিডিয়া কর্মীদের নানা প্রশ্নবাণে জর্জরিত হয়েছিলেন। সেদিন তিনি ওই সংবাদ সম্মেলনে খেলা চলাকালীন দর্শক হবেই এমন আশার কথাও জানিয়েছিলেন।

গুলশান ও শোলাকিয়ায় ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর বিপিএল’র ময়মনসিংহ পর্বেও অগ্রভাগে ছিল লিগে অংশ নেয়া বিভিন্ন ক্লাবের খেলোয়াড়, কোচদের নিরাপত্তার বিষয়টি। গত ৪ আগস্টের সেই সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক মোস্তাকিম বিল্লাহ ফারুকি রীতিমতো ঘোষণা দিয়েছিলেন, ‘খেলা শুরু হবার আগে প্রতিদিন দুপুর ১ টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত টাঙ্গাইল বাসস্ট্যান্ডে কোনো যানবাহন থাকবে না। শহরতলী খাগডহরের পর থেকে এ স্ট্যান্ডের বাস চলাচল করবে। এ বিষয়ে জেলা পরিবহন মোটর মালিক সমিতিও সম্মতি জানিয়েছে। ভবিষ্যতে স্থানীয়ভাবে এখান থেকে বাসস্ট্যান্ড সরিয়ে নেয়া হবে। ’

জেলা প্রশাসকের এমন ঘোষণায় আশান্বিত হয়েছিলেন অনেকেই। কিন্তু গত ৫ আগস্ট থেকে ম্যাচ চলাকালীন সময়ে জেলা প্রশাসকের এ ঘোষণার বাস্তব প্রতিফলন দেখা যায়নি। খেলা চলাকালীন স্টেডিয়াম সংলগ্ন বাসস্ট্যান্ড ঘুরে দেখা গেছে, এ স্ট্যান্ড থেকে বাস যাচ্ছে-আসছে। প্রথম দিকে পুলিশ লাইন্সের সামনে টাঙ্গাইল থেকে এ বাসস্ট্যান্ডমুখী বাস আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আটকে দিলেও সময় গড়াতেই এ নিয়ে কারো কোনো মাথাব্যথা নেই।

এখানে বাস আসা-যাওয়া করছে আগের নিয়মেই। ফলে জেলা প্রশাসকের প্রায় সপ্তাহ দুয়েক আগের ঘোষণা নিয়ে নানা কানাঘুষা চলছেই। ক্রীড়ানুরাগীদের কেউ কেউ বলছেন, জেলা প্রশাসক ইতিবাচক একটি উদ্যোগ নিলেও জেলা পরিবহন মোটর মালিক সমিতির স্বদিচ্ছার অভাবেই হয়তো সফল হতে পারেননি। আবার কারো কারো মতে, জেলা পরিবহন মোটর মালিক সমিতির সঙ্গে ফলপ্রসু আলোচনা ছাড়াই এমন একটি সিদ্ধান্তের ঘোষণা দিয়ে জেলা প্রশাসক ভুল করে বসেছেন।

এসব বিষয়ে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মোস্তাকিম বিল্লাহ ফারুকি বাংলানিউজকে বলেন, ‘খেলা চলাকালীন খাগডহর থেকে বাস চলাচল না করলেও কোনো সমস্যা হচ্ছে না। খেলোয়াড়সহ স্টেডিয়ামের নিরাপত্তায় সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এটি বড় কোনো বিষয় নয়। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৬ ঘণ্টা, আগষ্ট ১৬, ২০১৬
এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।