ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কমিউনিটিভিত্তিক সচেতনতা কার্যক্রম জরুরি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৭ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২৩
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কমিউনিটিভিত্তিক সচেতনতা কার্যক্রম জরুরি ছবি: প্রতীকী

ঢাকা: বৃষ্টি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই দেশজুড়ে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রমের পাশাপাশি কমিউনিটিভিত্তিক সচেতনতা  কার্যক্রম জরুরি বলে মনে করেন সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং বর্তমান উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন।

সোমবার (২৩ মে) সারাদেশে নতুন ৪০ জন ডেঙ্গুরোগী দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। নতুন ভর্তি রোগীর মধ্যে ৩৬ জন ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ও চারজন ঢাকার বাইরে।

বর্তমানে সারাদেশে ১৪৮ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ১২২ জন ও ঢাকার বাইরে ২৬ জন। চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।

চলতি বছরের ২২ মে পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ১ হাজার ৪৮৭ জন ডেঙ্গুরোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ৯৩০ জন ও ঢাকার বাইরে ৫৫৭ জন।

গত বছর দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ৬২ হাজার ৩৮২ জন ও ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যান ২৮১ জন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধ বিষয়ে করণীয় জানতে চাইলে ডা. মুশতাক হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ডেঙ্গু সারা বছরই ছিল। গত বছর বর্ষাকালের পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রতিদিন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ছিল। বর্তমানে বৃষ্টির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। যেহেতু বাংলাদেশে নগরায়ন এখন উপজেলা পর্যন্ত বিস্তৃত, কোনো কোনো ইউনিয়নেও পাকা রাস্তাঘাট ও বিল্ডিং রয়েছে। আমরা ভৌগোলিকভাবেও অত্যন্ত ছোট দেশ। ফলে ডেঙ্গু মশা ও রোগী সারাদেশেই ছড়িয়ে পড়ছে। যেখানে এডিস মশা আছে কিন্তু রোগী নেই সেখানে ডেঙ্গু ছড়াবে না, আবার যেখানে রোগী আছে এডিস মশা নেই সেখানেও ডেঙ্গু ছড়াবে না। কিন্তু এখন দুটোই ছড়াচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, রাজধানী ঢাকাতো বটেই এছাড়াও ছোটখাটো অন্যান্য যে শহর রয়েছে, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে, সেখানে ডেঙ্গু বিরোধী পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো প্রয়োজন। ভবিষ্যতে বৃষ্টি আরও হবে। বৃষ্টির পানি যেন জমতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। বৃষ্টি হওয়ার পর যেসব স্থানে পানি জমে যেমন বাড়ির ছাদ, সরকারি বিভিন্ন অফিস আদালতের ছাদ, বিভিন্ন থানায় জব্দ করা গাড়িতেও পানি জমে থাকে, কিন্তু সেগুলো কেউ পরিষ্কার করে না, ডাবের খোসা, বিভিন্ন খাবারের টিনের এবং প্লাস্টিকের কৌটা-প্যাকেট সেগুলোতেও বৃষ্টির পানি জমে, সেগুলো বন্ধ করতে হলে একদিকে যেমন কর্তৃপক্ষ এবং আরেক দিকে কমিউনিটিকে সম্পৃক্ত করতে হবে। স্থানীয়ভাবে ছাত্র ও যুবকদের যে বিভিন্ন ক্লাব রয়েছে, তারা প্রতিটা বাড়ি বাড়ি গিয়ে কোথায় পানি জমে সেগুলো বিষয় খুঁজে বের করবে এবং সেই পানি জমার স্থানগুলোতে পানি যেন না জমে, সেই ব্যবস্থা করবে এবং ভবিষ্যতে যেন এসব স্থানে পানি না জমে সেই বিষয়ে প্রতিটা পরিবারকে সচেতন করবে। স্থানীয় কমিউনিটির এসব ভলান্টিয়ারদের ডেঙ্গু প্রতিরোধ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতে হবে।

আইইডিসিআরের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বলেন, পাশাপাশি ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করার জন্য আমাদের যে টেস্টিং ফ্যাসিলিটিগুলো রয়েছে সেগুলোকে আরও বাড়াতে হবে। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ ও স্বাস্থ্যসেবা দেওয়াকারী বিভিন্ন সংস্থাকেও ডেঙ্গু প্রতিরোধ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করতে হবে। কমিউনিটি এওয়ারনেস বাড়ানো, শনাক্তের সুযোগ বাড়ানো ও স্থানীয় চিকিৎসকদের ডেঙ্গু বিষয়ে আরও বেশি প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারণা চালাতে হবে ডেঙ্গুর লক্ষণগুলো কী কী, ডেঙ্গু হলে কোথায় চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করবে। ডেঙ্গুর কোনো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসক বা নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। পাশাপাশি ডেঙ্গু প্রতিরোধ করার জন্য পরিচ্ছন্নতা অভিযান জোরদার করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৫ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২৩
আরকেআর/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।