ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ডেঙ্গুতে আগস্টে মৃত্যু ৩৪২, হাসপাতালে ভর্তি ৭২ হাজার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০২৩
ডেঙ্গুতে আগস্টে মৃত্যু ৩৪২, হাসপাতালে ভর্তি ৭২ হাজার

ঢাকা: এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে ইতোমধ্যেই অতীতের মৃত্যু ও আক্রান্তের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। চলতি বছরের আগস্ট মাসেই ডেঙ্গু জ্বরে ৩৪২ জনে মারা গেছেন এবং আক্রান্ত হয়েছেন সর্বমোট ৭১ হাজার ৯৭৬ জন।

যা ২০২২ সালের আক্রান্ত ও মৃত্যু থেকেও বেশি।  

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গত কয়েক বছর ধরে অব্যাহতভাবে ডেঙ্গুর সংক্রমণ ঘটলেও, যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ না করায় ডেঙ্গু ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। ইতিপূর্বে ডেঙ্গু রাজধানী কেন্দ্রিক থাকলেও বর্তমানে তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার ডেঙ্গুরোগীদের অবস্থা খুব দ্রুত অবনতি হচ্ছে এবং মারা যাচ্ছে।  

২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা সর্বমোট ৬২ হাজার ৩৮২ জন এবং ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ২৮১ জন মারা যান।

বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) স্বাস্থ্য ডেঙ্গু বিষয়ক বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে দুই হাজার ৩০৮ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকা সিটিতে ৮৭৫ জন এবং সারা দেশে (ঢাকা সিটি ব্যতীত) এক হাজার ৪৩৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

চলতি বছরের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট এক লাখ ২৩ হাজার ৮০৮ জন। এর মধ্যে ঢাকা সিটিতে ৫৮ হাজার ২১ জন ও সারা দেশে (ঢাকা সিটি ব্যতীত) ৬৫ হাজার ৭৮৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ১৬ জন ঢাকা সিটিতে এবং একজন সারা দেশে (ঢাকা সিটি ব্যতিত) মারা যান।

এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ৫৯৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা সিটিতে ৪৩৮ জন এবং সারা দেশে (ঢাকা সিটি ব্যতীত) ১৫৫ জন মারা যান।

চলতি বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার হার শতকরা ৯৩ শতাংশ। হাসপাতালে ভর্তি থাকার হার ৭ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার শূন্য দশমিক পাঁচ শতাংশ।

চলমান ডেঙ্গু পরিস্থিতি সামনের মাসগুলোতে কমবে না বাড়বে জানতে চাইলে জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এবং কীটতত্ত্ববিদ ড. কবিরুল বাশার বাংলানিউজকে বলেন, সেপ্টেম্বর মাসেও ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব থাকবে। হয়তো ডেঙ্গু অনেক বেশি বাড়বে না, আবার অনেক কমে যাবে বিষয়টি এমনও নয়। সেপ্টেম্বর জুড়েই ডেঙ্গুর প্রকোপ থাকবে। বর্তমান ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব থেকে কিছুটা কম বেশি অথবা কাছাকাছি থাকতে পারে।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে জানতে চাইলে ড. কবিরুল বাশার বলেন, আমাদের ডেঙ্গুর উৎস ধ্বংস করতে হবে। ডেঙ্গুর যে প্রজনন হচ্ছে সেগুলোকে যদি আমরা ধ্বংস করতে না পারি, তাহলে এডিস মশাকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। আমাদের সবাইকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সম্পৃক্ত হতে হবে। প্রত্যেকটা বাড়ির মালিককে নিশ্চিত করতে হবে তার বাড়ির কোথাও কোনো পানি জমে থাকবে না। এটা যদি আমরা সবাই যার যার অবস্থান থেকে নিশ্চিত করতে পারি, তাহলে এডিস মশার বংশ কমে যাবে। মশার বংশ কমে গেলেই ডেঙ্গুকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে, অন্যথায় এটাকে নিয়ন্ত্রণ করা বেশ কঠিন।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০২৩
আরকেআর/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।