বরিশাল: বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (শেবাচিম) বহুল আলোচিত পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলামকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ওএসডি করা হয়েছে। অপরদিকে হাসপাতালের নতুন পরিচালক পদে সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন শেবাচিম হাসপাতালের শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকরা।
এরই মধ্যে তারা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, সিনিয়র সচিব ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে এই দাবিতে পত্র দিয়েছেন। তাদের দাবি প্রশাসনিক দুর্বলতা, অবহেলা, সিন্ডিকেট বাণিজ্য, রাজনৈতিক দাপট ও দুর্নীতির কারণে হাসপাতালের বেহালদশা। হাসপাতালে প্রবেশ থেকে শুরু করে প্রতিটি পদে পদে হয়রানি ও অবহেলার শিকার হচ্ছে রোগীরা, যার ক্ষোভ গিয়ে পড়ছে কর্মরত চিকিৎসকদের ওপর। তাই স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়ন, রোগী হয়রানি বন্ধ ও চিকিৎসক নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য হাসপাতালের পরিচালক পদে সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা প্রয়োজন।
এদিকে বুধবার (১০ অক্টোবর) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ পার-২ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব মো. আবু রায়হান দোলন স্বাক্ষরিত পরিচালকের বদলি সংক্রান্ত ওই প্রজ্ঞাপনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলামকে অবিলম্বে আর্থিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব তার পরবর্তী কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তরপূর্বক আগামী দুই কর্মদিবসের মধ্যে বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদান করবেন। অন্যথায় তৃতীয় কর্মদিবসে বর্তমান কর্মস্থল তাৎক্ষণিক অব্যাহতি (স্ট্যান্ড রিলিজ) মর্মে গণ্য হবে।
উল্লেখ্য, দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম চিকিৎসাসেবা কেন্দ্র শেবাচিম হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে রোগীদের জায়গা সংকট। তারমধ্যে ওএসডি হওয়া পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম নিজ ভাইয়ের চাকরির জন্য বেসরকারি একটি ব্যাংককে অনিয়মের মাধ্যমে নতুন ভবনের নিচতলার অর্ধেকাংশ বরাদ্দ দিয়ে দেন। অথচ হাসপাতালের সরকারি কোনো স্টাফের বেতন বা লেনদেন সেই ব্যাংকে হয় না। চুক্তিভিত্তিক নেওয়া কিছু স্টাফের বেতন সেখানে দেয়াড় কথা থাকলেও, সেই নিয়োগেও অনিয়ম করা হয়।
ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম গত কয়েকবছরে চুক্তিভিত্তিক যাদের নিয়োগ দিয়েছেন তাদের মধ্যে বেশিরভাগের বাড়িই তার নিজ উপজেলা বরিশালের আগৈলঝাড়ার বাসিন্দা।
তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুপাতো ভাই আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ’র আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে এই মেডিকেলে এলেও, তিনি সাবেক পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম, সাবেক সিটি মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত ও সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ’র অনুসারীদের বিভিন্ন ধরনের কাজে সম্পৃক্ত রেখে সিন্ডিকেট বানিয়ে নিজের চেয়ার শক্ত রেখেছেন।
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী হয়েও তার ও মেডিকেল অফিসার (স্বাচিপ নেতা) ডা. এস এম সায়েমের চাপে পরে ছাত্র জনতার আন্দোলনের বিপক্ষে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালনে বাধ্য হয় হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২৪
এমএস/এএটি