ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ডায়ারিয়া রোধে নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি উদ্ভাবনের তাগিদ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৬ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৩
ডায়ারিয়া রোধে নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি উদ্ভাবনের তাগিদ

ঢাকা: ডায়রিয়া থেকে হাজার হাজার শিশুর জীবন রক্ষা করার জন্য বর্তমান যে চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে তার সঙ্গে নতুন পদ্ধতির সমাবেশ ঘটাতে হবে। এ নিয়ে গবেষণা করার প্রয়োজন রয়েছে।

একটি গবেষণা প্রতিবেদনে এ সুপারিশ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত ও আফ্রিকার চারটি দেশের মোট ২০ হাজার শিশুর ওপর গবেষণা চালিয়ে এমন সুপারিশ করা হয়েছে। গ্লোবাল এ্যান্ট্রিক মাল্টিসেন্টার স্টাডি (জিইএমএস-GEMS) নামের গবেষণাটি বিল এ্যান্ড মেলিন্ডনা গেটস ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে পরিচালিত হয়েছে।

গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, রোটা ভাইরাস ছাড়াও শিজেলা, ক্রিপ্টেসপোরিডিয়াম নামক জীবাণু নিয়ে অধিক গবেষণা করার প্রয়োজন রয়েছে।

প্রচলিত পদ্ধতির উৎকর্ষ সাধন করে নতুন দৃষ্টিভঙ্গিই কেবল ডায়রিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে জেতার ক্ষেত্র তৈরি করবে বলে গবেষকরা সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন।

আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত চিকিৎসা সংক্রান্ত জার্নাল ল্যানচেটে গবেষণার প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে।

গবেষণ‍ার পরীক্ষা করে দেখিয়েছেন, রোটা ভাইরাসট ডায়রিয়ার প্রধান কারণ, তার একটি মাত্র টিকা এখন পর্যন্ত আবিষ্কার হয়েছে।

তারা আরও দেখতে পেয়েছেন, রোটা ভাইরাসের পাশাপাশি শিজেলা আর ক্রিপ্টেসপোরিডিয়াম, এএসটি-ইটেক ভাইরাসও ডায়রিয়ার সংক্রমণ বহুগুণে বাড়ায়, অথচ সে সব ভাইরাস নিয়ে এখনো কার্য‍ৎ কোনো গবেষণা নেই।

চিকিসক‍ৎরা জানিয়েছেন, ২ বছরের নিচে প্রতি ৫ শিশুর মধ্যে একজন মাঝারি ঘাতক পর্যায়ের ঘাতক  রোগে (মডারেট টু সার্ভ ডেথ-MSD) ভোগে, যেটা শিশু মৃত্যুর হার প্রায় ৮ দশমিক ৫ গুণ বাড়িয়ে দেয় স্বাভাবিক আশঙ্কার চেয়ে। এসব জীবাণু শিশুর শরীরে ২ মাসের বেশি থাকলে শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি বাধাগ্রস্থ হয়।   দেখা যায়, ৬১ ভাগ মৃত্যু ঘটে ডায়রিয়া আক্রান্ত হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে, আর প্রায় ৫৬ ভাগ ক্ষেত্রে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

বাংলাদেশের টাঙ্গাঈলের মির্জাপুরের শিশুদের ওপর এ গবেষণার নেতৃত্ব দিয়েছেন ডা. আবু ফারুক। তিনি বলেন, “আমরা যেভাবে ডায়রিয়ার মোকাবিলা করি তার পরিবর্তন করার যেকোনো যুক্তিই সমালোচনার জন্ম দেবে। অথচ জিইএমএস আমাদের পরিষ্কারভাবে দেখায় কিভাবে আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌছাতে পারবো এবং কোথায় আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। ”

জিইএমএস গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে, মাত্র ৪ টি ভাইরাস লক্ষ করতে পারলেই বেশির ভাগ এমএসডি (মাঝারি পর্যায়ের ঘাতক রোগ) থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।

রোটা ভাইরাসের জীবাণু প্রতিরোধে টিকার সম্প্রসারণ হচ্ছে, যা হজার শিশুরি জীবন বাচাতে পারবে। একই ভাবে শিজেলা, ক্রিপ্টেসপোরিডিয়াম, এএসটি-ইটেক ভাইরাস নিয়ে আরো গবেষনা দরকার।

বিল এন্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা টমাস ব্রিউয়ার, এই নতুন গবেষণার তথ্য পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বর্তমানে প্রাপ্ত টিকা ও চিকিৎসা এখনই হাজার হাজার শিশুর জীবন বাঁচাচ্ছে, কিন্তু আরো নতুন প্রক্রিয়া উদ্ভাবনের লক্ষ্যে কাজ করলে ভবিষ্যতে তা আরো অধিক সংখ্যক শিশুর প্রাণ বাচাতে সাহায্য করবে।

বিশ্বব্যাপী এ গবেষণার অংশ হিসেবে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডায়রিয়াল ডিজিস রিসার্স-বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর-বি) টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে গবেষণাটি চালায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৯ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৩
জেএ/সম্পাদনা: শরিফুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর, eic@banglanews24.com

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।