ঢাকা: দীর্ঘ দু’মাস শীতের পর আসে ঋতুরাজ বসন্ত। উলের ভারি জামাকাপড়কে বিদায় জানিয়ে রোদ গায়ে মাখার সঙ্গে সঙ্গেই অনেকে নানা রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হন।
আমাদের দেশের আবহাওয়ার ধরন অনুযায়ী, শীতকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা সাত ডিগ্রি ও সর্বোচ্চ ২৮ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়ে থাকে। ফলে আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে শরীর হঠাৎ করে খাপ খাওয়াতে পারে না। এছাড়াও এসময় বাতাসে প্রচুর পরিমাণে অ্যালার্জি থাকে। এগুলো শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে জ্বর, সর্দি-কাশি, হাঁচি ও চুলকানির সৃষ্টি করে।
শীতের পর এ সময়টিতে ছুটি কাটাতে মানুষ বিভিন্ন জায়গায় বেড়াতে যায়। একই জায়গায় বিভিন্ন শ্রেণীর ও রোগ বহনকারী ব্যক্তি জড়ো হয় বলে সহজেই রোগের বিস্তার ঘটে। ফলে অনেকেই আক্রান্ত হন সংক্রামক রোগে।
বসন্তে নানা রকম ফুলও ফোটে। আর এসব ফুলের মাধ্যমেও অ্যালার্জি ছড়ায়। অ্যালার্জির কারণে অনেকের মাথাব্যাথা, চোখে চুলকানি, শ্বাস-প্রশ্বাসে অসুবিধা দেখা দেয়। এগুলো ঋতু পরিবর্তনের ফলে শরীরের দেখা দেওয়া স্বাভাবিক কিছু উপসর্গ। আরও বেশ কয়েকটি ভোগান্তির কারণ দেখে নেওয়া যাক।
অ্যালার্জি
চোখ ও নাক চুলকানো, গলায় খড়খড়ে ভাব ও হালকা মাথাব্যাথা অ্যালার্জির লক্ষ্মণ। অ্যালার্জি বেশি পরিমাণে হলে শরীর ফুলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই এসময় তেতো খাবার যেমন, নিম পাতার রস, চিরতা ও করলা খাওয়া উচিত। গোসলের সময় পানিতে নিমপাতা সেদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে গোসল করলেও উপকার পাওয়া যায়। প্রয়োজনে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
ফ্লু
এসময় বাতাসে জীবাণুর মাত্রা বেড়ে যায় ফলে ফ্লু হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। জ্বর, শরীর ব্যথা ও শরীর দূর্বল হয়ে যাওয়া এর সাধারণ উপসর্গ। ফ্লু হলে প্রচুর তরল খাবার খাওয়া উচিত। তাই প্রচুর পরিমাণে পানি, ফলের রস ও স্যুপ খেতে পারেন। তবে ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় পান করা উচিত নয়।
সাইনোসাইটিস
সাইনোসাইটিসের কারণে কপাল, ভ্রুর নিচের অংশ, নাকের আশেপাশে ও মুখমণ্ডলের একপাশে ব্যথা হয়। ব্যথা বেশি হলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এন্টিবায়োটিক ও স্টেরয়েড নেওয়া যেতে পারে। এছাড়াও গরম পানিতে মেনথল দিয়ে দিনে দু’বার ভ্যাপার নিলে উপকার পাওয়া যায়।
রোগবালাইয়ের ভয়ে বসন্তে নিজেকে গুটিয়ে ফেলা সম্ভব নয়। তবে সচেতন হওয়া সম্ভব খুব সহজেই। একটু সাবধানে চলাফেরা করলেই সুস্থ থাকা যায়। তাই মেনে চলুন কিছু টিপস-
১. বাইরে বের হওয়ার সময় মাস্ক ব্যবহার করুন।
২. বাড়ি ফিরে ভালোভাবে হাত পরিষ্কার করুন।
৩. নিয়মিত চুলে শ্যাম্প্যু করুন ও নাক পরিষ্কার রাখুন।
৪. বিছানার চাদর নিয়মিত গরম পানি দিয়ে পরিষ্কার করুন।
৫. মাঝে মাঝে ঘরের জানালা খুলে দিন। এতে ঘরে রোদ প্রবেশ করবে। ফলে ফাঙ্গাস জমতে পারবে না।
৬. স্নান ঘর পরিষ্কার ও শুকনো রাখুন।
৭. ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খান।
বাংলাদেশ সময়: ০২১২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৫