ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

বিশ্বের সেরা ১০ স্বাস্থ্যকর খাবার

সানজিদা সামরিন, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১২ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১৫
বিশ্বের সেরা ১০ স্বাস্থ্যকর খাবার

ঢাকা: স্বাস্থ্যকর খাবার তো অনেক রয়েছে। তবে এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো কোনটি? প্রতিটি খাদ্যেই রয়েছে বিশেষ কোনো না কোনো পুষ্টি উপাদান যা শরীরের পক্ষে বিশেষ উপযোগী।



সম্প্রতি বিশ্বের সেরা দশটি খাবারের তালিকা প্রকাশ করেছে একটি জনপ্রিয় ওয়েবসাইট। চলুন দেখে নিই সেরা খাবারের তালিকাটি।   

আমন্ড
অন্যান্য সব বাদামের মধ্যে আমন্ডের গুণাগুণ সবচেয়ে বেশি। এতে রয়েছে এন্টি-অক্সিডেন্ট, প্রোটিন ও খনিজ উপাদান। আরও রয়েছে মনো-আনস্যাচুরেটেড ওলিক ও পালমিটোলিক ফ্যাটি এসিড। এই ফ্যাটি এসিডগুলো ক্ষতিকারক এলডিএল কোলেস্টেরল দূর করে শরীরের পক্ষে ভালো কোলেস্টেরল এইচডিএল উৎপন্ন করে। এর মধ্যকার ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডশরীরের শর্করার মাত্রা ঠিক রাখে, রক্তচাপ স্বাভাবিক ও পেশীর গঠন ঠিক রাখে। রিবোফ্লাভিন ও এল-কার্নিটাইন সৃদ্ধ আমন্ড মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। উচ্চমানের ফসফরাস থাকায় মজবুত হাড় ও দাঁতের গঠনে সহায়তা করে।

আপেল
আপেলে রয়েছে ফাইবার, ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট, থিয়ামিন, রিবোফ্লাভিন ও ভিটামিন বি-৬। প্রতিদিন আপেল জুস খেয়ে আলজেইমার্সের ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব। এতে রয়েছে এসিটিলকোলিন নামক নিউরোট্রান্সমিটার যা মস্তিষ্ককে সতেজ ও কর্মক্ষম রাখে। উচ্চমানের ফাইবার সমৃদ্ধ আপেল পারকিন’স রোগ প্রতিরোধ করে। ফাইবার ও পলিফেনল সমৃদ্ধ হওয়ায় আপেল হৃদপিণ্ডকে ভালো রাখে। কম ক্যালরিবহুল হওয়ায় আপেল ওজন ঠিক রাখে। কিডনি পাথর এড়াতে আপেল সাইডার ভিনেগারও বেশ উপকারী।

অ্যাভোকাডো
ভিটামিন এ, ডি, সি, বি-৬, বি-১২, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম ও লোহা সমৃদ্ধ অ্যাভোকাডোতে আরও রয়েছে ডায়েট্রি ফাইবার যা ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও মুটিয়ে যাওয়া প্রতিরোধ করে। এর মধ্যকার পলি আন-স্যাচুরেটেড ফ্যাট রক্তের কোলেস্টেরল কমায়। এতে আরও রয়েছে আলফা লেনোলিনিক অ্যাসিডযা নিউমোনিয়া ও উচ্চরক্তচাপ দূর করে। এটি ক্যারোটেনোইড লিউটেইন নামক এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা চোখের দু’টি বড় অসুখ ম্যাকুলার ডিজেনারেশন ও ছানিপড়া রোধ করে। উচ্চমানের ফলিক অ্যাসিড থাকায় জন্মগত ত্রুটি এড়াতেও সহায়তা করে অ্যাভোকাডো।

আখরোট
আখরোটে রয়েছে লেনোলিক অ্যাসিড, আলফা লেনোলিক অ্যাসিড ও এরাকিডোনিক অ্যাসিডনামের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। প্রতিদিন আখরোট খেয়ে এড়াতে পারেন হৃদরোগ, কোলন ও প্রোস্টেট ক্যান্সার, স্ট্রোক ও করোনারি আর্টেয়ারি রোগ। এর মধ্যকার মেলাটোনিন, ক্যারোটেনয়েডস ও অ্যালাজিক অ্যাসিড প্রদাহ নাশক, স্নায়বিক রোগ দূরসহ বয়স ধরে রাখতে সহায়তা করে। প্রয়োজনীয় ম্যাঙ্গানিজ, কপার, লোহা, ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক ও সেলেনিয়াম সমৃদ্ধ আখরোট পরিপাক ক্রিয়ায় সহায়তা করে।

স্যালমন
স্যালমনে রয়েছে দু’টি প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড ইপিএ ও ডিএইচএ। এই ফ্যাটি অ্যাসিড হৃদরোগ, মস্তিষ্ক বিষয়ক রোগ, প্রদাহজনিত সমস্যা ও রক্ত জমাট বাধা রোধ করে। স্যালমনে রয়েছে প্রাকৃতিক হরমোন ক্যালকিটোনিন। যা শরীরে ক্যালসিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ও হাড়ের গঠন ঠিক রাখে। যাদের অস্টিওআথ্রাইটিস রয়েছে তাদের জন্য স্যালমন বেশ উপকারী। এর মধ্যকার সেলেনিয়াম ও ভিটামিন ডি ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। চোখ ও মেজাজ ভালো রাখে।

রসুন
অর্গানোসালফার অ্যালিসিন সমৃদ্ধ হওয়ায় রসুন একাধারে এন্টি-ব্যাক্টেরিয়াল, এন্টি-ফাঙ্গাল ও এন্টি-ভাইরাল। এই উপাদানটি উচ্চ-রক্তচাপ কমায়। প্রতিদিন রসুন খাওয়ায় কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে। এর মধ্যকার এডিএল নামক ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে ও হার্ট অ্যাটকের ঝুঁকি হ্রাস করে। রসুন শরীরে এন্টি-অক্সিডেন্ট এনজাইম বাড়ায় যা মস্তিষ্কের রোগ ও স্ট্রেস দূর করতে সহায়তা করে।

পালংশাক
পালংশাক ভিটামিন এ, সি, কে, বি২, লোহা, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামের ভালো উৎস। এটি একাধারে ত্বক, হাড় ও চুলের জন্য ভালো। এর মধ্যকার জিজানথিন ও লিউটেইন নামক এন্টি-অক্সিডেন্ট চোখের সুস্থতার জন্য খুব উপকারী। পালংশাকে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন যা ক্যান্স‍ারের সঙ্গে লড়াই করে ও অ্যাজমা দূর করে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে পালংশাক খুব ভালো খাবার। এটি রক্তের গ্লুকোজ ও ইনসুলিন নিয়ন্ত্রণ করে। ভিটামিন কে সুস্থ হাড় গঠনে সহায়তা করে।  

মিষ্টি আলু
ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি-৬, পটাশিয়াম ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ মিষ্টি আলুতে কোনো প্রকার ফ্যাট নেই। এতে রয়েছে ডায়েট্রি ফাইবার ও এন্টি-অক্সিডেন্ট যা স্বাস্থ্যের জন্য খুব ভালো। উচ্চমানের ডায়েট্রি ফাইবার সমৃদ্ধ মিষ্টি আলু পরিপাক ক্রিয়ায় সহায়তা করে। এর মধ্যকার ভিটামিন এ ও ভিটামিন ই সুষ্ঠু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে। মিষ্টি আলু দেহে জমা হোমোসিসটিন নামক রাসায়নিক পদার্থ নাশ করে যা কিনা হৃদরোগের অন্যতম কারণ। এতে রয়েছে লোহা যা সাদা রক্ত কণিকা গঠনে সহায়ক ভূমিকা রাখে।

কলা
ফ্যাটবিহীন এই ফলটিতে রয়েছে উচ্চমানের ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, ডায়েট্রি ফাইবার, লোহা, ভিটামিন এ ও প্রোটিন। প্রতিদিন কলা খেয়ে কমাতে পারেন অ্যাজমার ঝুঁকি। এর মধ্যকার উচ্চমানের ভিটামিন বি-৬ স্নায়ুকে শক্তিশালী করে ও সাদা রক্তকোষ তৈরি করে। কলাতে রয়েছে পটাসিয়াম ও ভিটামিন সি যা ক্যান্সার মৌল প্রতিরোধ করে ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়।   ডায়রিয়া নিরাময় ও স্মৃতিশক্তি বাড়াতে কলা বেশ উপকারী।

ডার্ক চকলেট
এতে রয়েছে লোহা, ম্যাগনেসিয়াম, ফাইবার ও কপার। তবে ডার্ক চকলেট নির্দিষ্ট মাত্রায় খাওয়া উচিত। অপরিমিত ডার্ক চকলেট খেলে ওজন বেড়ে যেতে পারে। কোকার মধ্যকার ফ্লেভোনয়েড উপাদান এন্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে ও ফ্রি রেডিক্যালস এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে কোষকে সুরক্ষিত রাখে। এটি রক্ত চল‍াচল বাড়ায় ও মস্তিষ্কে বিশুদ্ধ রক্ত সরবরাহ করে। এর মধ্যকার সেরোটোনিন উপাদান অবসাদ দূর করে ও মন ভালো রাখে।

তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট।

বাংলাদেশ সময়: ০১১২ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১৫
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।