ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

সুবিধা নিয়ে গুঁড়ো দুধের ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন ডাক্তাররা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৪ ঘণ্টা, জুলাই ৯, ২০১৫
সুবিধা নিয়ে গুঁড়ো দুধের ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন ডাক্তাররা ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: গুঁড়ো দুধ উৎপাদনকারী বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে বিভিন্ন সুবিধা গ্রহণের বিনিময়ে গুঁড়ো দুধের প্রেসক্রিপশন দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। এতে মাতৃদুগ্ধের বিকল্প হিসেবে গুঁড়ো দুধের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ছেন শহুরে ও গ্রামীণ অনেক নারী।

ফলে পুষ্টিহীনতায় ভুগছে নবজাতকরা।

বৃহস্পতিবার (০৯ জুলাই) রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারের অডিটোরিয়ামে ‘জাতীয় ‘মাতৃদুগ্ধ-বিকল্প ও শিশুখাদ্য বাজারজাতকরণ নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৩ এর আলোকে গ্রামাঞ্চলে অংশীদারদের ভূমিকা’ শীর্ষক গবেষণা তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনকালে বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।

তারা বলেন, পত্রিকায় ও টিভি চ্যানেলগুলোতে অধিক হারে বিজ্ঞাপন প্রচার করে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো এই কাজ করে যাচ্ছে। ফলে ‘মাতৃদুগ্ধ-বিকল্প ও শিশুখাদ্য বাজারজাতকরণ নিয়ন্ত্রণ আইন’ লঙ্ঘিত হলেও এই বিষয়ে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া যাচ্ছে না। বরং কোম্পানিগুলোর বিপুল অর্থ ব্যয় ও বিপণন প্রক্রিয়ায় শক্তিশালী নেটওয়ার্কের কারণে মাতৃদুগ্ধের চেয়ে বিকল্প গুঁড়োদুধের দিকে আকৃষ্ট হচ্ছেন মা ও অভিভাবকরা।

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা  ব্র্যাক এই বিষয়ে চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল গবেষণা রিপোর্ট প্রকাশ করে। যশোরের সদর, শার্শা, অভয়নগর, ও সিলেটের বালাগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বিয়ানি বাজারে এই গবেষণা জরিপ পরিচালিত হয়।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্র্যাক স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও জনসংখ্যা কর্মসূচির পরিচালক ডা. কাওসার আফসানা। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্র্যাক গবেষণা ও মূল্যায়ন বিভাগের স্টাফ গবেষক ফাহমিদা আকতার। সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এডিশনাল ডিরেক্টর জেনারেল প্রফেসর ডা. আব্দুল হান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথ অ্যান্ড নিউট্রিশন (আইপিএইচএন) এর ডেপুটি ডিরেক্টর ও ন্যাশনাল নিউট্রিশন সার্ভিস (এনএনএস) এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. তপন কুমার বিশ্বাস।

গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়, ডাক্তারসহ স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, মাতৃদুগ্ধ বিকল্প আইন আছে এটা জানলেও আইনের বিভিন্ন ধারা সম্পর্কে বিস্তারিত অবহিত নন।

এতে আরও বলা হয়, কৌশলে মাতৃদুগ্ধ বিকল্প প্রেসক্রাইভ করা হয়। ফলে অভিভাবকরা মায়ের দুধকে শিশুর পুষ্টি ও বর্ধনের জন্য যথেষ্ট মনে করছেন না।

শহুরে, আধুনিক, শিক্ষিত ও উচ্চবিত্ত শ্রেণির ধারণা শিশুদের মায়ের দুধপান করালে মায়েদের স্বাস্থ্যহানি ঘটে। তাদের দেখে শহরে বা গ্রামের লোকেরাও একাজে উদ্বুদ্ধ হয়ে থাকেন বলেও প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়।

জরিপে বলা হয়, মাতৃদুগ্ধ বিকল্প ব্যবহার শুরু হওয়ার দুটি মোক্ষম সময় হলো- সন্তান প্রসবের পরপর যখন মায়ের বুকে দুধ আসতে দেরি হয় এবং কর্মজীবী মায়েরা যখন কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেন।

ব্র্যাকের ভাইস চেয়ারপারসন আহমেদ মোস্তাক রাজার চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় সেমিনারে বক্তব্য রাখেন ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথ অ্যান্ড নিউট্রিশনের (আইপিএইচএন) সাবেক পরিচালক ডা. মো. শাহ নেওয়াজ, বাংলাদেশ ব্রেস্ট ফিডিং ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন ডা. এস কে রায়, সিএসএ ফর সান-বাংলাদেশ এর চেয়ারপারসন ডা. রোখসানা হায়দার, ব্র্যাকের অ্যাডভোকেসি ফর সোশ্যাল চেইঞ্জের কর্মসূচি সমন্বয়ক সদরুল হাসান মজুমদার, বাংলাদেশ হেলথ রিপোটার্স ফোরামের প্রেসিডেন্ট তৌফিক মারুফ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ ঘণ্টা, জুলাই ৯, ২০১৫
এসএ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।