ফরিদপুর: ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ (ফমেক) হাসপাতালের শিক্ষানবিশ চিকিৎসকেরা (ইন্টার্ন) ২২ ঘণ্টা বন্ধ রাখার পর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের তালা খুলে দিয়েছেন। তবে তালা খুললেও সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তারা কাজে যোগ দেননি।
এর আগে জরুরি বিভাগের তালা খুলতে বুধবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে ফমেক হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. গণপতি বিশ্বাস শুভ, ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আব্দুর রশিদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামানসহ চিকিৎসক নেতারা ইন্টার্ন চিকিৎসকদের নিয়ে আলোচনায় বসেন।
এ সময় তারা জানতে পারেন, তাদের ওপর হামলাকারী এক ব্যক্তিকে পুলিশ আটক করেছে। পরে তারা আদালতে গিয়ে সেই আসামিকে দেখে শনাক্ত করেন এবং আলোচনার মাধ্যমে দুপুর ২টার পরে জরুরি বিভাগের তালা খুলে দেন।
আলোচনায় ওই শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের সব ধরনের আশ্বাস দেওয়ার পরও কাজে ফিরতে রাজি হননি তারা। শিক্ষানবিশ চিকিৎসকেরা রাতে বৈঠক করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবেন বলেও একটি সূত্রে জানা গেছে।
রোগীর স্বজনদের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে চারটা থেকে ফমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে তালা দিয়ে চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দেন হাসপাতালের শিক্ষানবিশ (ইন্টার্ন) চিকিৎসকেরা।
বুধবার (১৩ জানুয়ারি) ২য় দিনের মতো আন্দোলন চালিয়ে যান তারা। দুপুর ২টা পর্যন্ত হাসপাতালের জরুরি বিভাগে তালা ঝুলিয়ে সেবা দেওয়া থেকে বিরত থাকেন ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা।
এতে জরুরি বিভাগে আসা রোগীরা চরম বিড়ম্বনায় শিকার হয়েছেন। চিকিৎসা নিতে না পেরে অনেকেই আশেপাশের হাসপাতালগুলোতে চলে গেছেন বলে জানা গেছে।
হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার আরিফ ইসলাম জানান, মঙ্গলবার বিকেলে ফরিদপুর সদর উপজেলার ধুলদী এলাকায় একটি মাইক্রোবাস দুর্ঘটনায় পড়লে ওই মাইক্রোবাসের চারজন আহত হন। আহতদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আনা হয়। তাদের পুরুষ সার্জারি বিভাগে ভর্তি করে চিকিৎসা শুরু করা হয়। ওই রোগীদের মধ্যে একজনের অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে গেলে রোগীর স্বজনদের সঙ্গে বাক-বিতণ্ডার এক পর্যায়ে হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও সেবিকাদের ওপর হামলা করেন স্বজনেরা।
এ সময় ওই ওয়ার্ডে কর্তব্যরত শিক্ষানবিশ চিকিৎসক সানজিদা ও চিকিৎসক আবুল হাসনাত এবং এক সেবিকাকে প্লাস্টিকের চেয়ার দিয়ে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন রোগীর স্বজনেরা। পরে তারা রোগী নিয়ে পালিয়ে যান।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. গণপতি বিশ্বাস শুভ বলেন, শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের সঙ্গে আমরা বার বার বৈঠক করেছি। বিষয়টি অনেকটা মিটে গেছে। দুপুরে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের তালাও খুলে দিয়েছেন তারা। নিজেরা সন্ধ্যার পরে আলোচনায়ও বসেছেন। আশা করি খুব শিগগিরই তারা কাজে ফিরবেন।
** ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক চলছে
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৬
আরকেবি/এএসআর