ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

এও সম্ভব! চিকিৎসা বাকিতে!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৫৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০১৭
এও সম্ভব! চিকিৎসা বাকিতে! আদ-দ্বীন হাসপাতাল- ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: আমাদের দেশে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বাকিতে লেনদেন হওয়ার ঘটনা হরহামেশাই ঘটছে। তবে চিকিৎসা সেবা কেউ কখনো বাকিতে নিতে শুনেছেন?

তবে হ্যাঁ এমনটাই ঘটছে ঢাকার মগবাজার আদ-দ্বীন হাসপাতালে। মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) হাসপাতালের চক্ষু বিভাগে এই প্রতিবেদকের কথা হয় বেসরকারি চাকরিজীবি সাইফুল ইসলামের সঙ্গে।


 
চলতি বছর ২৯ মে সাইফুল ইসলাম তার সন্তান সম্ভবা স্ত্রীকে নিয়ে আদ-দ্বীন হাসপাতালে আসেন। ওই দিনই তার স্ত্রী নির্ধারিত সময়ের আড়াই মাস আগে একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেন। পরে ওই সন্তানকে ৫০দিন ইনকিউবেটরে রাখা হয়। এতে হাসপাতালের অন্যান্য খরচ মিলে ২ ল‍াখ ২৫ হাজার টাকা বিল আসে।
 
সাইফুল ইসলাম বলেন, অন্য হাসপাতালগুলোতে এই চিকিৎসার জন্য দৈনিক কমপক্ষে ১৭ হাজার হিসেবে মোট সাড়ে ৮ ল‍াখ টাকা লাগতো। এছাড়া আমার ১ ল‍াখ টাকা এখনো বাকি রয়েছে। তবুও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ চিকিৎসা দিয়েছেন। এটা অন্য কোথাও অসম্ভব বলেও জানান সাইফুল ইসলাম।
 
আদ দ্বীন করপোরেট শাখার ম্যানেজার (প্রশাসন ও নিয়োগ) তারিকুল ইসলাম মুকুল বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের এখানে টাকার অভাবে কারো চিকিৎসা বন্ধ থাকেনা। মহিউদ্দিন স্যারের (নির্বাহী পরিচালক) নির্দেশ, কোনো অভাবী রোগী যেন টাকার অভাবে ফিরে না যায়।
 
শুরুতে মানসম্মত সেবা ও কম খরচের কারণে গর্ভবতী মায়েদের আস্থার ঠিকানায় পরিণত হলেও বর্তমানে সবধরনের চিকিৎসা দেওয়া হয় মগবাজার আদ্-দ্বীন হাসপাতালে। নিউরোলজি, অর্থোপেডিকস ও ট্রমাটোলজি, মেডিসিন, চক্ষু, দাত-কান-নাকসহ একটি জেনারেল হাসপাতালে যত ধরনের চিকিৎসা রয়েছে সবই দেওয়া হয় এখানে।
সিরিয়ার ধরে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা- ছবি: ডিএইচ বাদল  
নিরাপত্তা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ, কম খরচে বিশ্বমানের সেবা, প্রতি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আর হাসপাতালের কর্মীদের ব্যবহারে আদ-দ্বীনের জুড়ি নেই বলেও মনে করেন রোগীরা।
 
দেড় বছর আগে সন্তানের সমস্যা নিয়ে কুড়িগ্রাম থেকে বোনের সঙ্গে ঢাকায় আদ দ্বীন হাসপাতালে আসেন ফরিদা পারভিন (৩১)। এরপর থেকে ছোটো বড় সব ধরনের রোগের চিকিৎসা করাতে নিজে তো এখানে আসেনই সঙ্গে অসুস্থ আত্মীয় স্বজনদেরকেও এখানে নিয়ে আসেন।
 
ফরিদা বাংলানিউজকে বলেন, আমি এখানে আসার পর থেকে আর বাইরে কোথাও ডাক্তার দেখাইনি। প্রথমে সন্তানের সমস্যা নিয়ে এসেছিলাম। আজকে (মঙ্গলবার, ২৫ জুলাই) এসেছি কোমর আর হাতের ব্যাথার জন্য।
 
ফরিদা আরো বলেন, এখানের চিকিৎসা ভালো, কম খরচ, সবার ব্যবহার ভালো তাই আসি। আমি আমার সব আত্মীয়-স্বজনদেরকেও এখানে নিয়ে আসি। না আসতে পারলে এখানের ঠিকানা দিয়ে দেই।
 
তবে কম খরচে ভালো সেবা দেওয়ায় আদ-দ্বীন ‘গরিবের হাসপাতাল’ বলে পরিচিত হলেও বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, বড় ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সরকারি আমলারাও এখানে সেবা নিতে আসেন। আর এর সম্পূর্ণ কৃতিত্ব দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসা রোগীদেরকেই দিচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
 
হাসপাতালের উপ পরিচালক ডা. নাহিদ ইয়াসমিন বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের রোগীরাই আমাদের প্রচারণা চালায়। একবার যে রোগী সেবা নেন পরে তিনি তার সকল আত্মীয়-স্বজন নিয়ে আমাদের এখানেই আসেন। আমরাও তাদের আস্থার প্রতিদান দিতে চেষ্টা করি।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৪৪৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১৭
এসআইজে/বিএস

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।