ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

চিকিৎসা করে এখন চোখে ভালো দেখি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৯
চিকিৎসা করে এখন চোখে ভালো দেখি

কুষ্টিয়া: ডান চোখটাতে ভালো দেখতে পেতাম না। প্রথম দিকে হালকা ঝাপসা লাগতো। দিন দিন তা বেড়েই চললো। অন্ধকারের চেয়ে আলোতে বেশি সমস্যা হতো। একসময় প্রায় কিছুই দেখতে পেতাম না ডান চোখটাতে। চিকিৎসা করার পর এখন বেশ ভালো দেখি। 

কথাগুলো বলছিলেন কুষ্টিয়ার হরিনারায়নপুরে বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের চক্ষু ক্যাম্পে সেবা নিতে আসা দেড়কান্দী গ্রামের মনসুর আলী (৭০)।

২০১৭ সালে দোয়ারকা দাস ওয়েলফেয়ার সোসাইটি, ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশন এবং বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের যৌথ উদ্যোগে ফ্রি চক্ষু ক্যাম্পের মাধ্যমে ২২শ’ রোগীকে সেবা দেওয়া হয়।

সেদিনের আই ক্যাম্পে ডান চোখের সমস্যা নিয়ে এসেছিলেন মনসুর আলী। চোখ পরীক্ষা করে চিকিৎসকরা তাকে বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশনের জন্য পাঠায় বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটে। সেখানে চোখের অপারেশন হয় তার। এখন তিনি ডান চোখে ভালো দেখেন। তবে বর্তমানে তার বাম চোখে একই সমস্যা হচ্ছে। সেজন্য বাম চোখটা দেখাতে আই ক্যাম্পে এসেছেন।  

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ডান চোখে আগে যেমন সমস্যা ছিল কিছুদিন ধরে বাম চোখেও একই সমস্যা দেখা দিয়েছে। গরীব মানুষ ভালো ডাক্তারের কাছে যেতে অনেক খরচ। তাই আশায় থাকি কবে আবার বিনামূল্যে চোখ দেখবো এই ক্যাম্পে। তাই এবার বাম চোখ দেখাতে এসেছি। গতবার চোখ দেখাতে, অপারেশন করতে আমার কোনো খরচ হয়নি। ঢাকায় বসুন্ধরা হসপিটালে অপারেশন করেছিলাম একদম ফ্রি।
সেবা নিতে আসা রোগীরা।  ছবি: বাংলানিউজ
বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ফ্রি চিকিৎসা সেবা নিয়ে সুস্থ আছেন ফরজ আলী (৭৬) নামে আরও এক ব্যক্তি। এর আগে তিনিও বিনামূল্যে ডান চোখ অপারেশন করেছিলেন।

ফরজ আলী বাংলানিউজকে জানান, গতবার ডান চোখ বিনে টাকায় অপারেশন করেছি। ডান চোখে আর দেখতে সমস্যা হয় না। বাম চোখে হালকা ঝাপসা দেখি। তাই এসেছি চোখ দেখাতে।

বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ফ্রি চিকিৎসাসেবার মাধ্যমে চোখের ছানি অপারেশন করে ভালো আছেন নিজাম উদ্দিনও।

এদিকে বিনামূল্যে এ চক্ষু ক্যাম্পের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা নিয়ে এলাকার অনেক লোক ভালো আছেন এবং ভালো চিকিৎসকরা আসেন এমন খবর শুনে অনেক দূর দূরান্ত থেকেও চক্ষু রোগী এসেছেন এ ক্যাম্পে।

রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলা থেকে আসা রহিমা খাতুন বাংলানিউজকে বলেন, আমার চোখে মাঝে মাঝে কুট কুট করে। অনেকসময় অন্ধকার দেখি। তাই এখানে চোখ দেখাতে এসেছি। এখানে ডাক্তার দেখাতে কোনো টাকা পয়সা লাগে না। আবার ওষুধও দেয় এরা।

একই এলাকার মোমেনা খাতুন বাংলানিউজকে বলেন, গরীব মানুষ। টাকা পয়সা নাই। তাই এখানে চোখ দেখাতে এসেছি। ডান চোখে ভালো দেখতে পায় না আমি।

কুষ্টিয়ার কাথুলিয়া এলাকার হাতেম আলী বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের এলাকার অনেক ছানি পড়া রোগী বিনামূল্যে অপারেশন করে ভালো হয়ে গেছে। তাই আমিও এসেছি এখানে।
চোখ পরীক্ষা করছেন চিকিৎসক।  ছবি: বাংলানিউজ 
দোয়ারকা দাস ওয়েলফেয়ার সোসাইটি প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি পবন কুমার আগারওয়াল বাংলানিউজকে বলেন, ২০১৭ সালে মে এবং নভেম্বরে দুইবার আমরা এখানে প্রায় চার হাজার রোগীকে বিনামূল্যে ডাক্তার, ওষুধ, চশমা ও চোখের ছানি অপারেশনের ব্যবস্থা করেছি। যাদের চোখে ছানি ছিল এমন প্রায় চারশ’ রোগীকে বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে অপারেশন করিয়েছি। এখন তারা প্রায় সবাই চোখে ভালো দেখছেন। কিছু কিছু রোগীর নতুন চোখে সমস্যা রয়েছে তাদের এবার অপারেশনের ব্যবস্থা করবো। যাদের অপারেশন করার প্রয়োজন তাদের ঢাকায় অপারেশন করার ব্যবস্থা করবো।

এ অঞ্চলে যাতে কোনো চক্ষু রোগী না থাকে এ লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ভবিষ্যতে এ ধরনের আরও চক্ষুসেবা ক্যাম্প করা হবে বলেও জানান তিনি।

বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের আই অ্যান্ড কন্টাক্ট লেন্স স্পেশালিস্ট অ্যান্ড সার্জন ডা. এম এ খালেক বাংলানিউজকে জানান, আমরা চক্ষু ক্যাম্পের মধ্য দিয়ে রোগীদের ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছি। সেইসঙ্গে চোখে ছানি পড়া রোগীদের অপারেশনের জন্য নির্বাচন করছি।

বাংলাদেশ সময়: ০৯১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।