ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ইপিআই টিকাদান কার্ড সংকট, হাতে লেখা স্লিপে চলছে কার্যক্রম

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩, ২০২২
ইপিআই টিকাদান কার্ড সংকট, হাতে লেখা স্লিপে চলছে কার্যক্রম

বরিশাল: শিশু ও কিশোরীদের টিকাগ্রহণসহ জন্মনিবন্ধনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ইপিআই টিকাদান কার্ড (শিশু এবং কিশোরী/মহিলা) সংকটে বরিশালের টিকাপ্রদান কেন্দ্রগুলো। ফলে ইপিআই টিকাদান কার্ডের বদলে সাদা কাগজে স্লিপে লিখে দেওয়া হচ্ছে পরবর্তী টিকাদানের তারিখ।



এ নিয়ে চরম অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে অভিভাবকদের মধ্যে, সেসঙ্গে কার্ড না থাকায় সেবাগ্রহীতাদের বোঝাতেও হিমশিম খাচ্ছেন টিকাকেন্দ্রের দায়িত্বরতরা।

বরিশাল সদর (জেনারেল) হাসপাতালের ইপিআই টিকাকেন্দ্রের দায়িত্বরতরা জানান, এ কেন্দ্রের বরিশাল নগর ও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার অভিভাবকরা শিশুদের টিকা দিতে নিয়ে আসেন। সেক্ষেত্রে মাসে ১৬০-১৭০টি নতুন কার্ডের প্রয়োজন হয়। অনেক সময় এর পরিমাণ দুইশও ছাড়িয়ে যায়। তবে, দেশে মহামারি করোনার সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে ইপিআই টিকাদান কার্ড (শিশু এবং কিশোরী/মহিলা) সংকট দেখা দেয়। সর্বশেষ এ বছর জানুয়ারি মাসে কিছু টিকাকার্ড হাতে পেলেও তা ছিল চাহিদার তুলনায় একেবারেই নগণ্য।

এ কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র স্টাফ নার্সরা জানান, টিকা কার্ড দিতে না পারায় প্রায় সময়ই অভিভাবকরা আমাদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। অনেক সময় বাগ-বিতণ্ডা থেকে চরম আকার ধারণ করে।
অপরদিকে এ কার্ড নিয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের ইপিআই টিকাকেন্দ্রের দায়িত্বরতদের সঙ্গে বাগ-বিতণ্ডা হয় বলে জানা গেছে।  

তারা জানান, এ হাসপাতালে মাসে গড়ে ১শ মতো নতুন শিশুদের টিকাকার্ড প্রয়োজন হয়। একইসঙ্গে প্রয়োজন হয় কিশোরীদের টিকাকার্ডও। তবে, সম্প্রতি এ কার্ড সরবরাহ করছে না সিভিল সার্জন কার্যালয়। এ বছর যা দিয়েছিল, তা কোনোভাবে গত বছরের টিকা সম্পন্ন হওয়া শিশুদের দেওয়া হয়েছে। নতুনদের টিকা দিয়ে সাদা স্লিপে তারিখ লিখে দেওয়া হচ্ছে এবং অভিভাবকদের বলে দেওয়া হচ্ছে কার্ড এলে তখন তাও দেওয়া হবে। কার্ড না পাওয়া পর্যন্ত সাদা স্লিপটি যেন না হারায় সে নির্দেশনাও দিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

অভিভাবকরা বলছেন, জন্মনিবন্ধনের সনদের জন্য এ কার্ডটি থাকা বাধ্যতামূলক। আর কার্ডটি না পেয়ে জন্মনিবন্ধন করতে গিয়ে ভোগান্তিতে পরতে হচ্ছে সবাইকে। এছাড়া ইউরোপসহ বিভিন্ন স্থানে উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে শিশু কার্ডটি গুরুত্বপূর্ণ বলে দাবি করেছেন অনেক অভিভাবক। তাই তারা ইপিআই কেন্দ্র থেকে শিশুদের দেওয়া টিকার কার্ড যত দ্রুতসম্ভব সংগ্রহ ও বিতরণের দাবি জানান।

এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ইপিআই সুপারেন্টেন্ডেন্ট এনায়েত হোসেন জানান, মহামারি করোনার সংক্রমণের পর থেকে প্রচুর কোভিড-১৯ এর টিকাকার্ড এসেছে। তবে, সেসময় থেকেই ইপিআই টিকাদান কার্ড (শিশু এবং কিশোরী/মহিলা) আসা কমে যায়। পরবর্তীতে এর সংকট দেখা দেয়। মাঝেমধ্যে যাও আসছে তাও চাহিদার থেকে কম।

তিনি জানান, সর্বশেষ গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে বরিশাল জেলার ইপিআই টিকাদান কেন্দ্রগুলোর জন্য শিশু এবং কিশোরী/মহিলা মিলিয়ে আড়াইলাখ কার্ড চাওয়া হয়েছিল। তবে, এখন পর্যন্ত কোনো কার্ড পাইনি। আর তিন মাস পর পর চাহিদাপত্র পাঠানো হচ্ছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে, আশা করছি দ্রুত কার্ডগুলো পেয়ে যাবো এবং মাঠপর্যায়ে বিতরণের মধ্য দিয়ে চলমান সমস্যার সমাধান হবে।

এদিকে টিকাকার্ডের এমন সংকট শুধু বরিশাল জেলাতেই নয়, গোটা বিভাগের ৬ জেলাতেই রয়েছে।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, কার্ডের চাহিদার বিষয়টি স্ব-স্ব জেলার সিভিল সার্জন কার্যালয় দেখভাল করে। তারপরও যাতে দ্রুত কার্ড সংগ্রহ করা যায় এবং এর চাহিদা স্বাভাবিক রাখা যায় সে বিষয়ে আমরা বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর উদ্যোগ নেবো। আশা করি, দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০২২
এমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।