ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

১৮ মাসের কাজে ৪০ মাস পার!

এইচ.এম নাঈম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৭, ২০২২
১৮ মাসের কাজে ৪০ মাস পার!

ঝালকাঠি: নির্ধারিত সময়ের দ্বিগুণের বেশি পার হলেও শেষ হয়নি ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ৬ তলা ভবনের নির্মাণকাজ। পঞ্চম তলা পর্যন্ত নির্মাণকাজ শেষ হলেও ভেতরের দরজা-জানালা, ইলেকট্রিক, পানির লাইন স্থাপনসহ আনুষঙ্গিক কাজের অধিকাংশই বাকি।

গণপূর্ত প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৮ মাসে ছয়তলা এ ভবনের নির্মাণকাজ শেষ করার কথা ছিল। কার্যাদেশ অনুযায়ী ২০১৯ সালের জুলাই মাসে ভবনের কাজ শেষ করে কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করার কথা, কিন্তু ৪০ মাসেও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ‘কোহিনুর এন্টারপ্রাইজ’ ও ‘জিএম কনস্ট্রাকশন’ যৌথভাবে হাসপাতালের ৬ তলা ভবন নির্মাণের দায়িত্ব পায়।

নির্মাণকাজ শুরু হয় করোনা মহামারির সময়। এরই মধ্যে মূল ভবনটি ১১ তলা করার নির্দেশনা দিয়েছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। সপ্তম, অষ্টম ও নবম তলার কাজের জন্য সম্প্রতি আরও ৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। নকশা অনুযায়ী, হাসপাতালের নিচতলায় বহির্বিভাগে রোগী দেখার জন্য চিকিৎসকদের চেম্বার ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার ল্যাব থাকবে। ৭ম ও ৮ম তলায় থাকবে বিভিন্ন ওয়ার্ড ও কেবিন। ৯ম তলায় থাকবে আইসোলেশন ওয়ার্ড, কিডনি ডায়ালাইসিস কক্ষ, অপারেশন থিয়েটারসহ প্রশাসনিক অফিস। ধীরগতিতে নির্মাণকাজ চলায় আধুনিক চিকিৎসাসেবা পেতে জেলাবাসীকে দীর্ঘ অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। এতে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ।  

চিকিৎসাসেবা নিতে আসা জাহাঙ্গীর হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ হলে ২৫০ শয্যার সুযোগ সুবিধা পাওয়া যেত। সেবার মানও বাড়তো। এখন তো ডাক্তার কম, রোগীর চাপ বেশি, তাই সেবা পেতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়।  

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২০০৩ সালে ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যার প্রশাসনিক ভবন নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে ৫০ শয্যার জনবল দিয়েই চলেছে চিকিৎসা কার্যক্রম। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ১০০ শয্যার জনবল নিয়োগের অনুমোদন দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। হাসপাতালে ২৩ জন চিকিৎসকের মধ্যে ১৪ জন চিকিৎসকের পদই শূন্য। বহির্বিভাগে প্রতিদিন ৪ শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। ২০১৮ সালের আগস্টে সদর হাসপাতাল চত্বরে ২৫০ শয্যার ভবনের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হয়।  

ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, নতুন ভবনের পঞ্চম তলার অবকাঠামোর কাজ চলছে। ভেতরে দরজা-জানালা লাগানো হয়নি। ইলেকট্রিক, পানির লাইন স্থাপনসহ আনুষঙ্গিক কাজের অধিকাংশই বাকি।  

সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এইচ.এম জহিররুল ইসলাম জানান, গণপূর্ত কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দ্রুত কাজ শেষ করার কথা বলা হয়েছে। আর প্রয়োজনীয় জনবলও নেই হাসপাতালে। তাই নির্মাণকাজ শেষে জনবল নিয়োগ না দেওয়া হলে সেবা থেকে বঞ্চিত হবেন সাধারণ মানুষ।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কোহিনুর এন্টারপ্রাইজের প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির বলেন, নির্মাণ সামগ্রীর দাম ঊর্ধ্বমুখী। করোনাকালে শ্রমিক সংকটের কারণে কাজের গতি ছিল কম। শিগগিরই নবম তলাসহ ভবনের কাজ শেষ হবে।

ঝালকাঠি গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সমরজিৎ সিং বলেন, আগামী ৫ মাসের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে। দ্রুত শেষ করার জন্য বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৭, ২০২২
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।