ঢাকা, বুধবার, ২৮ কার্তিক ১৪৩১, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

ভারতে নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন করলেন মোদি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৫ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২৩
ভারতে নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন করলেন মোদি পূজাপাঠ করে সংসদ ভবনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি

কলকাতা: ভারতের প্রধানমন্ত্রী স্বপ্নের নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধন হয়ে গেল রোববার (২৮ মে) সকালে। হাজারও বিতর্ক, বিরোধীদের অনুষ্ঠান বয়কটসহ একাধিক বাধাবিপত্তি কাটিয়ে পূজাপাঠ করে ভবনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

 

নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধন করতে এদিন সকাল ৭টা নাগাদ পৌঁছে যান প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানস্থলে হাজির ছিলেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-সহ আরও অনেকে।

প্রধানমন্ত্রী পৌঁছনোর পরেই নতুন সংসদ ভবনের মঙ্গল কামনায় পূজা শুরু হয়। ১৫ মিনিট ধরে চলে পূজাপাঠ। এরপর বেদমন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে নতুন সংসদ ভবনে স্বর্ণদণ্ড সেঙ্গোল স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধনের আগে ভবনের মাটি ছুঁয়ে ষষ্টাঙ্গ প্রণাম করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আয়োজন ছিল সর্বধর্ম প্রার্থনা অনুষ্ঠানের। এদিন মোদির পরনে ছিল সাদা কুর্তা, সোনালি জ্যাকেট এবং তার সঙ্গে রং মিলিয়ে উত্তরীয়।

এরপর যাদের হাত ধরে নতুন সংসদ ভবন গড়ে উঠেছে, উদ্বোধন শেষে সেসব শ্রমিকদেরও অভ্যর্থনা জানান প্রধানমন্ত্রী মোদি। উল্লেখ্য, টাটা গোষ্ঠীর উপর এই নতুন সংসদ ভবন নির্মাণের ভার ছিল। ব্যয় হয়েছে ৯৭১ কোটি রুপি। নতুন সংসদ ভবনে মোট আসন সংখ্যা ১২২৪। এরমধ্যে ৮৮৮টি আসন বিশিষ্ট লোকসভার অন্দরসজ্জার থিম জাতীয় পাখি ময়ূর এবং ৩৮৪টি আসন বিশিষ্ট রাজ্যসভার অন্দরসজ্জা করা হয়েছে পদ্ম ফুলের থিমের উপর। সনাতন পরম্পরা মেনে প্রায় ৫ হাজার শিল্পকর্ম নতুন সংসদ ভবনজুড়ে রয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে চিত্রশিল্প, আলংকারিক শিল্প, প্রাচীর প্যানেল, পাথরের ভাস্কর্য এবং ধাতব শিল্প।

নতুন সংসদ ভবনটি প্রায় ৬৪,৫০০ বর্গমিটার। রয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, যারমধ্যে রয়েছে ভোটদান সহজ করার বায়োমেট্রিক্স। ডিজিটাল ভাষা ব্যখ্যা বা অনুবাদের ব্যবস্থা এবং প্রোগ্রামেবল মাইক্রোফোন। হলগুলোয় আছে অভ্যন্তরীণ ভার্চ্যুয়াল সাউন্ড সিস্টেম। যাতে প্রতিধ্বনির সঠিক মাত্রা সেট করা যায়। বর্তমান বা পুরনো সংসদ ভবন ঔপনিবেশিক যুগের ভবন। ব্রিটিশ স্থপতি স্যার এডউইন লুটিয়েন্স এবং হার্বাট বেকার সেটির ডিজাইন করেছিল।  আর, নতুন ভবনটি আহমেদাবাদ-ভিত্তিক এইচ সিপি ডিজাইন, প্ল্যানিং এবং ম্যানেজমেন্টকে দিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে। নতুন সংসদ ভবন এবং পুরনো সংসদ ভবনে যে সমস্ত সুযোগ-সুবিধা রয়েছে, তা যৌথভাবে ব্যবহার করা হবে।

তবে এদিন নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধন বয়কট করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা-সহ ভারতের ২১ রাজনৈতিক দল। উপস্থিত ছিল না কংগ্রেস, সিপিআইএম।  

প্রসঙ্গত, নতুন সংসদ ভবন কে উদ্বোধন করবেন, তা নিয়ে বিতর্ক দানা বেধেছিল প্রথম থেকেই। বিরোধীদের দাবি ছিল, সাংবিধানিক পদমর্যাদা বলে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর উচিত এই ভবনের উদ্বোধন করা। রাষ্ট্রপতিকে টপকে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন বিজেপি বিরোধী অনেক রাজনৈতিক মেনে নিতে পারেননি। সেই বিতর্ক গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্তও। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত বিরোধীদের দাবি মানা হয়নি। তাই তারা বয়কট করেছিল। সংসদ ভবনের উদ্বোধন নিয়ে টুইটে রাহুল গান্ধী লিখেছেন, সংসদ ভবন আসলে দেশের মানুষের কন্ঠস্বর। এর পরেই মোদিকে কটাক্ষ করে তার বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী সংসদ ভবনের উদ্বোধনকে রাজ্যাভিষেক ভেবেছিলাম।

বাংলাদেশ সময়:  ১৬১৭ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২৩
ভিএস/এসএ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।