ঢাকা, মঙ্গলবার, ৬ মাঘ ১৪৩১, ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ২০ রজব ১৪৪৬

ভারত

আরজি করকাণ্ডে দোষীর যাবজ্জীবন, প্রতিক্রিয়া জানালেন মমতা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২৫
আরজি করকাণ্ডে দোষীর যাবজ্জীবন, প্রতিক্রিয়া জানালেন মমতা

কলকাতা: বহুল আলোচিত কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার পাঁচ মাস ১১ দিন পর দোষীর সাজা দিয়েছে আদালত। তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড (আমৃত্যু কারাবাস) দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (২০ জানুয়ারি) কলকাতার শিয়ালদহ আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস আসামি  সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রাইয়ের বিরুদ্ধে এ সাজা ঘোষণা করেন।

এদিকে এ রায়ের ঘোষণায় মোটেই সন্তুষ্ট নন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, আমি সন্তুষ্ট নই। ফাঁসি হলে অন্তত মনকে সন্তুষ্ট করতে পারতাম।

আরজি কর মেডিকেলের ঘটনা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ছাড়িয়ে ভারতজুড়ে তোলপাড় হলে বিচার দাবিতে জনতার পাশাপাশি মমতাও রাজপথে মিছিল করেছিলেন। প্রকোশ্যে ফাঁসির দাবি তুলেছিলেন আসামির।

সোমবার (২০ জানুয়ারি) মালদায় প্রশাসনিক বৈঠকের আগে মমতা ঘোষিত রায় নিয়ে বলেন, যা রায় ঘোষণা হয়েছে আমি তাতে সন্তুষ্ট নই।  

আদালতের রায়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। আন্দোলনকারী চিকিৎসক সংগঠন এবং নাগরিক সমাজের তরফে বলা হয়েছে, বিচারক স্পষ্টই বুঝেছেন সঞ্জয় আসল দোষী নয়। এর পেছনে প্রভাবশালীরা জড়িয়ে রয়েছে এবং তাদের সবাইকেই আইনের আওতায় আনা উচিত।  

এদিন বিকেল পৌনে তিনটা নাগাদ সাজা ঘোষণা করেন বিচারক অনির্বাণ দাস। তিনি দোষী সঞ্জয় রাইকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের (আমৃত্যু কারাগার) রায়ের পাশাপাশি ৫০ হাজার রুপি আর্থিক জরিমানাও করেন।

আদালত বলেন, কর্তব্যরত অবস্থায় খুন হওয়ার কারণে নিহত চিকিৎসকের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ বাবদ রাজ্য সরকারকে ১৭ লাখ রুপি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। যদিও আদালতে উপস্থিত অভয়ার বাবা-মায়ের আর্জি ছিল—তারা ক্ষতিপূরণ চান না, ক্ষতিপূরণ চাইতে আদালতে আসেননি। তারা মেয়ের হত্যার বিচার চান।

সিবিআইএর আইনজীবী আনিসুর রহমান বলেন, আমাদের তরফে দোষী ব্যক্তির সর্বোচ্চ শাস্তি অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ডের আর্জি জানানো হয়েছিল। কিন্তু বিচারক তা মনে করেননি। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন।  

যদিও নিম্ন আদালতের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে যাওয়ার পথ খোলা রয়েছে।

গত বছরের ৯ আগস্ট আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সেমিনার হল থেকে উদ্ধার হয় অভিয়ার (নারী চিকিৎসক) মরদেহ। অভিযোগ ওঠে কর্মরত অবস্থায় ওই নারীকে প্রথমে ধর্ষণ ও পরে খুন করা হয়। এরপরই শোরগোল পড়ে যায় গোটা ভারতে। ঘটনার তদন্তে নেমে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় রাইকে গ্রেপ্তার করেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা। ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু তথ্যপ্রমাণও সংগ্রহ করেছিল পুলিশ। পরে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এই মামলার তদন্তভার যায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী এজেন্সি সিবিআইএর হাতে।

তদন্ত চালিয়ে সিবিআইও সঞ্জয় রাইকেই একমাত্র অভিযুক্ত বর্ণনা করে চার্জ গঠন করে।  সোমবার সঞ্জয়ের সাজা শোনাল হল।  

খুন হওয়া চিকিৎসকের বাবা-মায়ের গলায়ও এদিন ছিল একরাশ হতাশা। তারা বলেছেন, আমরা শেষ দেখে ছাড়বো।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২৫
ভিএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।