কলকাতা: যথাযথ মর্যাদায় ভারতে উদযাপিত হলো প্রজাতন্ত্র দিবস। শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) ৭৫তম প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে সেজেছে নয়াদিল্লির রাজপথ থেকে কলকাতার রেড রোড।
দিবসটি উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবারের প্রজাতন্ত্র দিবসে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। এক্স হ্যান্ডলে এক পোস্টে প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে দেশবাসীকে প্রজাতন্ত্র দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি লেখেন, এখানে আসতে পেরে আমি অত্যন্ত খুশি ও গর্বিত।
দিনটি ঘিরে নয়াদিল্লির বিজয়চকে সেনাবাহিনীর কুচকাওয়াজের অভিবাদন গ্রহণ করেন ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকর, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন, জাহাজ মন্ত্রী সর্বানন্দ সানোয়াল, জাতীয় সড়ক পরিবহনমন্ত্রী নীতিন গরকড়ি, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাসহ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্য, বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা। উপস্থিত ছিলেন তিন বাহিনীর (স্থল, বিমান ও নৌ) প্রধান এবং দিল্লিতে নিযুক্ত বিভিন্ন বিদেশি দূতাবাসের প্রধানরা।
স্থানীয় সময় সকাল ১০টা নাগাদ দিল্লির জাতীয় স্মৃতিসৌধে (ওয়ার মেমোরিয়াল) শহীদ ভারতীয় সেনা সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী। এ সময় সঙ্গে ছিলেন সেনাবাহিনীর প্রধান। এরপর সেখান থেকে দিল্লির কর্তব্য পথে আসেন প্রধানমন্ত্রী। কিছুক্ষণ পরেই সেখানে পৌঁছান উপ-রাষ্ট্রপতি। এরপর প্রধান অতিথিকে (ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট) সঙ্গে নিয়ে সেখানে এসে পৌঁছান ভারতের রাষ্ট্রপতি। সাড়ে ১০টা নাগাদ ভারতের জাতীয় পতাকা (তিরঙ্গা) উত্তোলনের মধ্যদিয়ে প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান সূচনা হয়।
এরপর ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি কামান দিয়ে ২১টি গোলা বিস্ফোরণের স্যালুট ও জাতীয় সংগীত বেজে ওঠে। প্রজাতন্ত্র দিবসের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ছিল সেনাবাহিনীর কুচকাওয়াজ। দিল্লির বিজয় চক থেকে রেড ফোর্ড পর্যন্ত সেনাবাহিনী বিভিন্ন বিভাগের সদস্যরা তাদের নানা কৌশল প্রদর্শন করেন। এর পাশাপাশি ফুটে ওঠে ভারতের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যময় ট্যাবলো।
৭৫ তম প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেডে বিশেষ প্রাধান্য পেয়েছে নারীশক্তি। এবারেই প্রথম ১০০ জন নারী সম্মিলিতভাবে সংগীত পরিবেশন করেন। ‘বিকশিত ভারত’ ও ‘ভারত-লোকতন্ত্রের মাতৃকা’- এই দুটি থিম রাখা হয়েছিল এবারের অনুষ্ঠানে। একই সঙ্গে এবারই প্রথম ফ্লাইপাস্টে সামিল হয়েছে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি তেজস যুদ্ধবিমান ও সি-২৯৫ ট্রান্সপোর্ট এয়ারক্রাফট। পাশাপাশি প্রদর্শন করা হয় সুখোই, রাফালের মত যুদ্ধবিমান। ভারত এবং ফ্রান্সের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অংশ হিসেবে এদিনের প্যারেডে অংশ নেন ফ্রান্সের আর্মড ফোর্সের সদস্যরা।
একইভাবে কঠোর নিরাপত্তায় কলকাতার রেড রোডে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যদিয়ে দিবসটি উদযাপন করেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার মন্ত্রিসভার সদস্যরা। উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলের শীর্ষ কর্মকর্তাসহ বিশিষ্ট অতিথি ও স্কুলের শিক্ষার্থীরা। রেড রোডে রাজ্য প্রদর্শিত হয় মমতার সরকারের প্রকল্পের নানা ট্যাবলো। পথশ্রী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মতো জনমুখী প্রকল্পের ট্যাবলো প্যারেডে প্রদর্শিত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৪ ঘণ্টা, ২৬ জানুয়ারি, ২০২৩
ভিএস/আরএইচ