ঢাকা, শনিবার, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

সিএএ নিয়ে ভারতের সাবেক রাজ্যপালের বিস্ফোরক মন্তব্য

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২৪
সিএএ নিয়ে ভারতের সাবেক রাজ্যপালের বিস্ফোরক মন্তব্য

কলকাতা: ভারতের জাতীয় নির্বাচনের আগে দেশজুড়ে কার্যকর হয়ে গেছে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)। ১১ মার্চ রাত থেকেই সিএএ কার্যকর হয়ছে দেশটিতে।

আইনে বলা হয়েছে, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের অমুসলিম নাগরিক (হিন্দু, শিখ, খ্রিস্টান, জৈন, পার্সি, বৌদ্ধ) সংশ্লিষ্ট দেশের ধর্মীয় উৎপীড়নের কারণে ভারতে আশ্রয় চান, তা হলে তা দেবে ভারত সরকার। আপাতত ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারতে আশ্রয় নেওয়া মাসুষদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।

তবে এই তালিকা থেকে বাদ রয়েছে মুসলিম সম্প্রদায়। এবার সেই নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন মেঘালয় এবং ত্রিপুরার সাবেক রাজ্যপাল বিজেপি নেতা তথাগত রায়। তিনি বলেছেন, ভারতে যাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে, তাদের শারীরিক পরীক্ষা করা উচিত। দেখা উচিত কোনো মুসলমানকে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়ে যাচ্ছে না তো?

সোমবার (১৮ মার্চ) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইট) তথাগত রায় লিখেছেন, সিএএ থেকে মুসলিমরা সম্পূর্ণ বাদ। কিন্তু, কেউ তাদের পরিচয় জাল করে অমুসলিম হিসেবে ভারতে চলে চলে এসেছে, সে যে কারণেই হোক, ভয় পেয়ে হোক বা অন্য কোন কারণে। তাহলে তা বোঝ যাবে কী করে? অর্থাৎ যাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে তাদের প্রত্যেকের শারীরিক পরীক্ষা করা হোক।

এই নিয়ে সরব হয়েছে তৃণমূলের রাজ্যসভার সংসদ সদস্য তথা মতুয়া নেত্রী মমতা বালা ঠাকুর। এ দিন তিনি সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেছেন, আমরা কোন সমাজে বাস করছি? একজন সাবেক রাজ্যপাল, যিনি শিক্ষিত সমাজের মানুষ; এই ধরনের কুরুচিকর মন্তব্যের টুইট কীভাবে করতে পারেন। আমরা অল ইন্ডিয়া মতুয়া সংগঠনের পশ্চিমবাংলা শাখার তরফে তার বিরুদ্ধে আইনি মামলা করব। কারণ ভারতবর্ষ হলো ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। কতটা লজ্জাজনক ঘটনা যে, আমাকে নাগরিকত্ব নিতে শারীরিক পরীক্ষা করতে হবে? এর থেকে লজ্জাজনক আর কিছু হয় না। একটা চক্রান্ত চলছে সাধারণ মানুষদের নিয়ে।

এ নিয়ে তৃণমূলের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ বলেছেন, অত্যন্ত দায়িত্ব জ্ঞানহীন মন্তব্য করেছেন তথাগত। ধর্ম পরীক্ষার জন্য তিনি যে নিধান দিয়েছেন, এটা সভ্যতার সীমা লঙ্ঘন করেছে। এরা অশান্তিকে প্ররোচনা দিচ্ছে। মানুষে মানুষে ভাগ করছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করছি। এরা খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থানের লড়াই থেকে পিছিয়ে ধর্মের নামে ভেদাভেদের খেলায় মেতেছে।

তিনি আরও বলেন, বিজ্ঞান, ধর্ম, সংস্কৃতি সব নিয়ে একটা সমাজ চলে। কিন্তু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কুৎসিতভাবে ব্যবহার করা হয়, সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস প্রতিবাদে নামবে।

মূলত পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে এবারে নির্বাচনের আগে সিএএ কার্যকর হয়েছে। গোয়েন্দা রিপোর্ট অনুযায়ী, এই আইনের দ্বারা ৩৩ হাজার ৩১২ জন মানুষ উপকৃত হবেন।

মতুয়া পরিবারে আরও এক সদস্য শান্তনু ঠাকুর বিজেপির সংসদ সদস্য। তিনি ভারতের কেন্দ্রীয় বন্দর, নৌপরিবহন ও জলপথ প্রতিমন্ত্রী। তিনিও বলেছিলেন ভোটের আগে সিএএ হবে। আর হয়েছেও তাই। তবে তথাগত রায়ের বিষয়ে তার কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২৪
ভিএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।