কলকাতা: ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-তে এখনই স্থগিতাদেশ দিল না সুপ্রিম কোর্ট। সিএএ-তে স্থগিতাদেশ চেয়ে শীর্ষ আদালতে যে মামলাগুলো হয়েছিল, সেগুলোর প্রেক্ষিতে মোদি সরকারকে তিন সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সিএএ-র ওপর স্থগিতাদেশ এবং অন্যান্য মামলা নিয়ে মোট ২৩৭টি আবেদনের শুনানি হয় শীর্ষ আদালতে। সেই শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট মোদি সরকারকে জবাব দিতে বলেছে। যদিও শুনানি চলাকালীন দেশটির সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেছেন, ‘সিএএ দেশের কারও নাগরিকত্ব ছিনিয়ে নেবে না’। তবে আবেদনকারীদের বক্তব্য ছিল, এই সময়ের মধ্যে যাতে কোনো নাগরিকত্বের প্রক্রিয়া নেওয়া না হয়, সেই নির্দেশ দিক আদালত। কিন্তু আদালত সে বিষয়ে কোনো স্থগিতাদেশ জারি করেননি।
এদিন (১৯ মার্চ) সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি জেবি পরদিওয়ালা ও মনোজ মিশ্রকে নিয়ে গঠিত বেঞ্চ শুনানি মুলতবি করে দেন। সরকারের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার অনুরোধেই এদিন শুনানি মুলতবি রাখেন বেঞ্চ। তুষার মেহতা আবেদনগুলোর জবাব দেওয়ার সময় চান আদালতের কাছে।
মেহতা বলেছেন, ২৩৭টি আবেদন রয়েছে। এরমধ্যে ২০টি আর্জি রয়েছে আইনের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে। আমি জবাব দেওয়ার জন্য আদালতের কাছে সময় প্রার্থনা করছি।
তিনি আরও বলেন, এই আইনে কারও নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হচ্ছে না। সুতরাং, আবেদনকারীদের তাড়াহুড়োর কোনো কারণ আছে বলে, আমার মনে হয় না।
যদিও তুষার মেহতার বিরোধিতা করেছেন আবেদনকারীদের আইনজীবী কপিল সিব্বল। তিনি বলেছেন, অহেতুক অতিরিক্ত সময় চাওয়া হচ্ছে। যদি নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়, তাহলে তা ফেরত নেওয়া যাবে না। ফলে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নাগরিক প্রক্রিয়া বন্ধ থাক। তবে আদালত সে বিষয়ে কোনো স্থগিতাদেশ জারি করেননি।
১১ মার্চ, ভারত জুড়ে লাগু হয় নতুন এই নাগরিকত্ব আইন। আইনে বলা হয়েছে, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের অমুসলিম নাগরিক (হিন্দু, শিখ, খ্রিস্টান, জৈন, পার্সি, বৌদ্ধ) সংশ্লিষ্ট দেশের ধর্মীয় উৎপীড়নের কারণে ভারতে আশ্রয় চান, তাহলে তা দেবে ভারত সরকার। আপাতত ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারতে আশ্রয় নেওয়া মানুষদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।
কিন্তু সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে এই আইনের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে শীর্ষ আদালতে মামলা করে, ‘ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লিগ’ (আইইউএমএল) সহ একাধিক সংগঠন। প্রায় ২৩৭টি মামলা জমা পড়ে শীর্ষ আদালতে। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানি ছিল। মামলার পরবর্তী শুনানি ৯ এপ্রিল।
বাংলাদেশ সময়: ২২৪৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২৪
ভিএস/এসআইএ