ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ভারত

মোদি-মমতার জনসভায় বাংলাদেশ প্রসঙ্গ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০২৪
মোদি-মমতার জনসভায় বাংলাদেশ প্রসঙ্গ

কলকাতা: দিনভর নির্বাচনী প্রচারণায় পশ্চিমবঙ্গে চলল মোদি-মমতা দ্বৈরথ। এ দুই হেভিওয়েট নেতা-নেত্রীর মুখে উঠে এসেছে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ।

বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) রাজ্যের উত্তরবঙ্গের কোচবিহার আসনের বিজেপি প্রার্থী নিশিথ প্রামাণিকের সমর্থনে জনসভা করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এ নিয়ে পঞ্চমবার বাংলায় জনসভা করলেন তিনি।

এ দিন কোচবিহারের মাটিতে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য আরও সহজভাবে করার জন্য বিজেপি সরকার কাজ করে চলেছে। দুই দেশের মানুষ যাতে অতি সহজে যাতায়াত করতে পারে, এর জন্য আমরা নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু রাজ্যের তৃণমূল সরকার, বামদল আর কংগ্রেসের ‘ইন্ডিয়া’ জোট মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, বাংলার রাজবংশী, নমঃশূদ্র এবং মতুয়া সম্প্রদায়ের কথা কোনদিন ভাবেনি এই তিন দল। কিন্তু আজ যখন বিজেপি সরকার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) নিয়ে এসেছে, আইন চালু করেছে; এরা তার ভুল ব্যাখ্যা করছে। এরা বাংলার মানুষকে ভয় দেখাচ্ছে। কিন্তু তারা যতই চেষ্টা করুক এবার আর পারবে না। বাংলার এই সম্প্রদায়ের প্রতিটা পরিবারকে নাগরিকত্ব দেবই। এটা মোদির গ্যারান্টি।

অপরদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখেও এ দিন শোনা যায় বাংলাদেশ প্রসঙ্গ। তবে তা ভিন্নভাবে। মমতার দাবি, সিএএ-এনআরসির মাধ্যমে বাংলার মানুষকে বাংলাদেশে পাঠাতে চায় মোদি।

মমতা বলেন, ভোটের আগে ক্যা ক্যা করে ওরা চিল্লাচ্ছে। মনে রাখবেন, ক্যা হচ্ছে মাছের মাথা। আর লেজ হচ্ছে এনআরসি। অর্থাৎ সিএএর মাধ্যমে পরবর্তী সময়ে এনআরসি করিয়ে আপনার নাগরিকত্ব কেড়ে নেবে। ভোটের অধিকার কেড়ে নেবে। মানুষের সরকারি অধিকার সব কেড়ে নেবে। পরে তাদের আসামের মতো ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেবে। প্রমাণ করার চেষ্টা করবে তারা বাংলাদেশি। এটা ভালো না খারাপ আপনারা নিজেরা বুঝে নিন।

উল্লেখ্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘সিএএ’-কে ‘ক্যা’ বলেন।

এরপর মমতা আরও বলেছেন, বাংলায় এনআরসি হবে না, হতে দেব না। আমি থাকতে নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন বাংলার হিন্দু মুসলমান থেকে রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষেরা।

এখানেই থামেননি নেত্রী। ছিটমহল, কোচবিহার এয়ারপোর্ট তিনিই করে দিয়েছেন বলে দাবি করেন মমতা।  

এ বিষয়ে রাজ্যের বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর মুখে আগে সিএএ এবং এনআরসির বিরোধিতা শোনা যেত। এখন বুঝতে পেরেছেন, সিএএ নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার নয় নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন। ফলে সিএএর সাথে এনআরসি জড়িয়ে দিচ্ছেন। অথচ সিএএ ফর্মে কোথাও এনআরসির উল্লেখ নেই। মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছেন। আর উনি কী করে আটকাবেন? এটা কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প। এখানে রাজ্য সরকারের করা বা থামানোর কোনোটার হাত নেই। আর সিএএ তো চালু হয়ে গেছে। মানুষ তো ফর্ম ফিলাপ করছে। আর ছিটমহলও কেন্দ্রীয় সরকারের প্রজেক্ট। তিনি শুধু পালন করেছেন।

বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গে একটি জনসভা করেন প্রধানমন্ত্রী। অপরদিকে উত্তরবঙ্গে জোড়া জনসভা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রথম জনসভা করেন কোচবিহার জেলার মাথাভাঙার গুমানির হাট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে। কোচবিহার কেন্দ্রের প্রার্থী জগদীশ চন্দ্র বর্মা বসুনীয়ার সমর্থনে। এরপর মুখ্যমন্ত্রী দ্বিতীয় জনসভা করেন উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার মাল আদর্শ বিদ্যা ভবনের মাঠে। সেখানে তিনি সভা করেন প্রার্থী নির্মল চন্দ্র রায়ের সমর্থনে।

প্রথমধাপে উত্তরবঙ্গের তিন কেন্দ্রে ভোট। ১৯ এপ্রিল আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহারে ভোট। আর ভারতের সেই ভোটের প্রচারে প্রাসঙ্গিক এবং অপ্রাসঙ্গিকভাবে চলে আসছে বাংলাদেশের নাম।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০২৪
ভিএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।