আরজি কর হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার পর যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, তা থামার নাম নেই। প্রতিদিনই কোনো না কোনো কারণে আন্দোলন বেগবান হচ্ছে।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের সঙ্গে ফোনে আলাপের পর তাদের আমরণ অনশন প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন মমতা। তিনি বলেছেন, চিকিৎসকদের বেশিরভাগ দাবি পূরণ করা হয়েছে। একটি দাবি বাদ রয়েছে। বাকি ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।
এর আগে শনিবার দুপুর ২টায় ধর্মতলায় জুনিয়র চিকিৎসকদের অনশনমঞ্চে উপস্থিত হন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ ও স্বরাষ্ট্র সচিব নন্দিনী চক্রবর্তী। তারা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন। এরপর ফোনে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের উদ্দেশে বার্তা দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি বলেন, আমাকে তিন-চার মাস সময় দিন। হাসপাতালগুলোয় নির্বাচন করাব। আপনাদের পরীক্ষা রয়েছে নভেম্বর-জানুয়ারি মাসে। আপনাদের পড়াশোনার ক্ষতি হোক তা চাই না। সরকারি হাসপাতালে সেবা না দিলে মানুষ কোথায় যাবে? দিদি হিসেবে বলছি, অনশন প্রত্যাহার করুন।
ফোনে জুনিয়র চিকিৎসকরা মুখ্যমন্ত্রীকে তাদের ১০ দফা দাবি পড়ে শোনান। স্বাস্থ্যসচিবকে অপসারণের কথা উঠতেই তিনি সে দাবি নাকচ করে দেন। মমতা বলেন, আমি দাবি মেনে সিপিকে সরিয়ে দিয়েছি। কিন্তু সব অফিসারকে সরানো যাবে না। যদি কোনো দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে, তা হলে সরকার দেখবে। কিন্তু আপনারা কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করবেন, আর তাকে সরিয়ে দেব? এভাবে হয় না।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনালাপের পর অনশনকারী জুনিয়র ডাক্তারেরা জানান, তারা ‘বাধ্য’ হয়েই অনশনে বসেছেন। দাবি পূরণ না হলে তারা অনশন চালিয়ে যাবেন।
অনশনকারী জুনিয়র ডাক্তার সায়ন্তনী বলেন, আমরাও কাজে ফিরতে চাই। আমরা আমাদের দাবিতে অনড়। আমাদের দাবি নিয়ে হয়তো তার (মুখ্যমন্ত্রীর) পরিষ্কার ধারণা তৈরি হয়নি। হয়তো পরের বৈঠকে তা স্পষ্ট হবে। উনি আমাদের অভিভাবিকা। উনি নিশ্চয়ই আমাদের সমস্যার সমাধান করবেন।
এর আগে এক জুনিয়র চিকিৎসক মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আমরা চাই মুখ্যমন্ত্রী আলোচনার জন্য বসুন এবং আমাদের সমস্ত দাবি বাস্তবায়ন করুন। তারপরই মমতা তাদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হন।
আন্দোলনরত চিকিৎসকরা তাদের দাবি আদায়ে আগামীকাল রোববার মেগা সমাবেশের পরিকল্পনা করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ৫ অক্টোবর থেকে জুনিয়র চিকিৎসকদের অনেকেই কলকাতার এসপ্ল্যানেড এলাকায় আমরণ অনশন করছেন। তারা পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে আল্টিমেটাম দিয়ে সোমবারের মধ্যে তাদের দাবি না মানলে মঙ্গলবার সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ধর্মঘটের হুমকি দিয়েছেন।
আন্দোলনকারীদের দাবিগুলো ছিল, হাসপাতালের বাইরে নিরাপত্তা জোরদার করা, সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ছাড়াও রয়েছে হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজে কাউন্সিল নির্বাচন এবং নিগমকে অপসারণ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০২৪
এমজে